ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত ছাত্রী হোস্টেলের সামনে এক শিক্ষার্থীকে বহিরাগত কর্তৃক নিপীড়নের প্রতিবাদে কলেজের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন ব্যাচের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ক্লাসবর্জন করে তারা বিক্ষোভ করছেন। শিক্ষার্থীদের দাবি, ওই বহিরাগতকে অবিলম্বে গ্রেফতার ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তাদের এ আন্দোলন চলবে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী কলেজ প্রশাসন তথা অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেন।
এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ নিয়ে কলেজ প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় বৈঠক চলছে।
জানা যায়, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের এম-৫৫ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বুধবার ইফতারের আগে ইফতার নিয়ে ক্যাম্পাসের ছাত্রী হোস্টেলে প্রবেশের সময় ওঁৎ পেতে থাকা বহিরাগত এক বখাটে তাকে নিপীড়নের চেষ্টা করে। এ সময় গেটে কোনো দারোয়ান ছিল না।
বিষয়টি জানাজানি হলে রাতেই হোস্টেল সুপার নাহিদা আক্তারকে এবং কলেজ অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেনকে অবহিত করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো শিক্ষার্থীদের বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার কথা বললে ফুঁসে উঠেন তারা।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ছাত্রী হোস্টেলের দারোয়ান রাজাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর মারধর করলে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়।
একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টা থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে কলেজের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
অন্যদিকে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীরাও ক্যাম্পাসের ক্যান্টিনের সামনে অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিনসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা চেষ্টা চালায়।
আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার অভাবে প্রায়ই নানা দুর্ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন সময় আন্দোলন করেও নিরাপত্তা নিশ্চিত ও বহিরাগত ঠেকানো যাচ্ছে না। বারবার নিরাপত্তার কথা বলা হলেও কলেজ প্রশাসন কোনো উদ্যেগ গ্রহণ করছে না। তারা জানান, প্রতিনিয়তই বহিরাগতরা হোস্টেলে প্রবেশ করে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করছে। রুমে প্রবেশ করছে, চুরি হচ্ছে। নিরাপত্তার দাবিতে একাধিকবার সিসি ক্যামেরা বসানোর কথা বলা হলেও অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হলে ক্লাসে ফিরবে না বলে জানান।
অন্যদিকে একই দাবি জানিয়েছেন ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীরাও। তারা অভিযোগ করেন- শিক্ষার্থীরা তাদের নিরাপত্তারক্ষী রাজাকে বেধড়ক মারধর করেছেন। তারা দাবি করেন, কর্মচারীদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে হবে। তা না হলে কাজে ফিরবেন না তারা।
এ ব্যাপারে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিন জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কলেজ প্রশাসনকে নিয়ে বৈঠক চলছে।
এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন