নিজেকে কখনও পরিচয় দেন গোয়েন্দা পুলিশের ওসি, কখনও দারোগা আবার কখনও র্যাবের অফিসার। তার প্রধান টার্গেট চোরাই তেল ব্যবসায়ীদের গুদামে হানা দিয়ে লাখ লাখ টাকার তেল হাতিয়ে নেয়া অথবা বড় ইয়াবার চালান আটকে সেগুলোকে রপ্ত করা। ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই করতে গিয়ে গ্রেফতারও হয়েছেন কয়েকবার। সেই ভুয়া পুলিশ আনোয়ার এখন নারায়ণগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এর প্রধান সোর্স ও ক্যাশিয়ার।
পুরো জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একচ্ছত্র অধিপতি তিনি। এমনকি ডিবির অনেক পুলিশ পরিদর্শকরাও তার ভয়ে এতটাই টতস্থ থাকেন যে, আনোয়ার নামে কোন সোর্স ডিবিতে কাজ করেন কিনা এ ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, আনোয়ারের বাড়ী জেলার রূপগঞ্জ থানার গাউছিয়া এলাকায়। তার মূল পেশা ভুয়া ডিবি সেজে ছিনতাই করা এবং অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য সোর্স এর কাজ করা। গত বছরের ৩ জুন ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই করতে গিয়ে আসল ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন আনোয়ার (৪২) ও ভুলতা ফাড়ির রাইটার গণি (৪০)। এসময় তেলভর্তি একটি গাড়ি উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এ ব্যাপারে জেলা ডিবির তৎকালীন এসআই মফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা (রূপগঞ্জ থানার মামলা নং ০৮) দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, আনোয়ার সহ একটি চক্র নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে সোনারগাঁও, আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ এলাকায় বিভিন্ন সময়ে তেলবাহী গাড়ী ছিনতাই করে থাকে। গ্রেফতারের পর আনোয়ারের স্বীকারোক্তি অনুয়ায়ী তার গোডাউন থেকে প্রায় ৫লাখ টাকার চোরাই তেল উদ্ধার করে পুলিশ।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে আনোয়ার ফতুল্লা থানায় সোর্স এর কাজ শুরু করে। কিন্তু চোরাই তেল কারবারী ও মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্যতার কারণে তাকে ফতুল্লা থানা থেকে বিতাড়িত করা হয়। এরপর কয়েক বছর সে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সোর্স এর কাজ করার চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেনি। কয়েক মাস আগে সে কৌশলে ডিবি পুলিশের সোর্স এর কাজ শুরু করে। এক্ষেত্রে তার সার্বক্ষনিক সঙ্গী হন জেলা ডিবি পুলিশে যোগ দেয়া একজন এসআই।
অভিযুক্ত আনোয়ারের দাবী তিনি ডিবির এস আই আলমগীরের টিমে সোর্স এর কাজ করেন, তিনি ক্যাশিয়ার নন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন