চারদিকে জ্বলছে দাউ দাউ আগুন। ভেসে আসছিল কান্নার আওয়াজ। আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ছিল এক ভবন থেকে আরেক ভবনে। একটি টিমের দলনেতা হিসাবে আমারও দায়িত্বের কমতি ছিল না। এদিক ওদিক ছোটাছুটি করে কাজ করছিলাম। কাজ করতে গিয়ে হঠাৎ দেখি দাঁড়িয়ে আছি একটি লাশের ওপর। কিছুই বুঝিনি তখন। এটা মানুষের লাশ না পুড়ে যাওয়া অন্য কিছু।
পরে হাড় আর মাথার খুলি দেখে বুঝতে পারি এটা মানুষের লাশ। কথাগুলো বলছিলেন ফায়ার সার্ভিসের লালবাগ জোনের পরিদর্শক শরিফুল ইসলাম।
শুধু শরিফুল ইসলামই নন রাজধানীর চকবাজার থানার চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের মোড়ে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের পর এমন দৃশ্যই দেখেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। মসজিদের সামনের সড়কগুলোতে শুধু পড়ে থাকতে দেখা গেছে বীভৎস লাশ আর লাশ। ছিন্ন বিছিন্ন পুড়া লাশ দেখে অনেকেই স্থির থাকতে পারেননি। ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক শরিফুল বলেন, সড়কের লাশগুলো বেশি পুড়েছিল। কারণ আগুনের সরাসরি উত্তাপ কেমিক্যালের সঙ্গে মিশে গিয়ে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। লাশের শরীরের টুকরো ময়লার সঙ্গে মিশে গেছে। আবার কিছু অংশ পুড়ে একেবারে ছাই হয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা একের পর এক বীভৎস লাশ উদ্ধার করেছে। ওয়াহেদ ম্যানশনের ভেতরের নিচ তলা থেকে আমরা ২৪টি লাশ উদ্ধার করেছি। কিছু কিছু লাশের হাড় দেখে মনে হয়েছে এগুলো লাশ।
চুড়িহাট্টা মসজিদ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল চৌধুরী বলেন, আমি খুব কাছে থেকে দেখেছি সেই নির্মম দৃশ্য। ঘটনাস্থলে ভুক্তভোগীরা বাঁচার জন্য কি আকুতি করছিল। অনেকেই সেখান থেকে বের হতে পারেনি। আবার রক্তাক্ত অবস্থায় আহত হয়ে অনেকে বের হয়েছে। কবির হোসেন নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, অনেকেই ভেবেছিল দরজা বন্ধ করে রাখলে তারা বেঁচে যাবে। ঘরের ভেতরে হয়তো আগুন পৌঁছাবে না। কিন্তু তারাও শেষ পর্যন্ত আগুনে পুড়ে মারা গেছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন