দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা পঞ্চগড়ে আগামী ২২, ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য কাদিয়ানীদের ইজতেমার আয়োজন ও কার্যক্রম বন্ধে আলটিমেটাম দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
ওই ইজতেমা বন্ধ করা না হলে পঞ্চগড় অভিমুখে লংমার্চসহ আরও কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা দিতে বাধ্য হবে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
কারণ কাদিয়ানীরা শুধু ইসলামের দুশমন নয়, ওরা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্যও চরম হুমকি। তাই অনতিবিলম্বে জাতীয় সংসদে আইন পাস করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
বুধবার বেলা সোয়া ১১টায় আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতে ইসলামের আমিরের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত নেতারা এসব মন্তব্য করেন।
হেফাজত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আহমদিয়া মুসলিম জামাত’ তথা কাদিয়ানীরা সরকারিভাবে সংখ্যালঘু। কাদিয়ানীরা মুসলিম নয়, তারা কাফের। তাদের অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। আমাদের এ দাবিটি হেফাজতের ১৩ দফার মধ্যে অন্যতম।
তিনি বলেন, যারা কাদিয়ানীদের মুসলমান বলবে তারাও বেইমান। তাদের ইমান থাকবে না। তাই সরকারের প্রতি কাদিয়ানীদের ইজতেমা বন্ধ ও সরকারিভাবে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার জন্য এ সাংবাদিক সম্মেলন থেকে জোর দাবি জানাচ্ছি।
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীর সঞ্চালনায় ওই সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত আমিরের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার ছেলে হেফাজতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আনাস মাদানী।
এদিকে গত মঙ্গলবার রাতে পঞ্চগড়ে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক যারা দোষী-অপরাধী তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানানো হয়।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে যারা আমাদের ভাইদের শহীদ করেছে। তাছাড়া হতাহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আন্দোলনকারীদের হামলা-মামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী আগাগোড়া ইংরেজদের দালাল। তিনি অজু ছাড়া নামাজের ইমামতি করতেন। তিনি বলতেন- আমি নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেও উত্তম।
আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ১৩ দফায়ও কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার জোর দাবি ছিল। সরকারকে আমরা লিখিত আকারে তা জমা দিয়েছি। কাদিয়ানীরা বাংলাদেশকে কাদিয়ানী রাষ্ট্র বানাতে চায়। কাদিয়ানীরা শুধু ইসলামের দুশমন নয়, ওরা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্যও চরম হুমকি। তাই অনতিবিলম্বে তাদের তথাকথিত ইজতেমাসহ বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে এবং জাতীয় সংসদে আইন পাস করে তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
এছাড়া তাদের জন্য ইসলামি পরিভাষাসমূহ যেমন: কালিমা, নামাজ, রোজা, হজ ও মসজিদ ইত্যাদি শব্দের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা লোকমান হাকিম, মাওলানা সলিম উল্ল্যাহ, মাওলানা নোমানী মেখলি, মাওলানা ইসহাক নূর, মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহি, মাওলানা নুরুল ইসলাম, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলানা রফিক নানুপুরী, মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির, মাওলানা হাফেজ ফয়সাল, মাওলানা মীর ইদ্রিস, মাওলানা আলমগীর, সরোয়ার কামাল ও মাওলানা আহসান উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন