ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে (মমেক) কর্মস্থলে যোগদান না করেই গত ১৫ মাস ধরে সরকারি বেতন-ভাতা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) রীনা আক্তারেরর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের ভেতরে ও বাহিরে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালেও অফিস চলাকালীন সময়ে কর্মস্থলে রিনাকে পাওয়া যায়নি। তার সহকর্মীরা বলছেন, রিনা দীর্ঘ ১৫ মাস যাবত কোনো ডিউটি না করেই বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন।
এদিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অফিস সহকারী আব্দুল মোতালেব।
তিনি জানান, ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বরে মমেক মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ থেকে বদলি হয়ে ফরেনসিক বিভাগে আসেন রীনা আক্তার। কিন্তু এ বিভাগে পূর্বে দ্বায়িত্ব পালনকালে ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ থাকায় তার যোগদানপত্র গ্রহন করেননি বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা: কাজী গোলাম মোখলেছুর রহমান। ফলে বিভাগে তার কোনো হাজিরা নেই।
তবে অফিস সহায়ক রীনা আক্তার নিয়মিত বেতন-ভাতা নিচ্ছেন বলে নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানের হিসাব রক্ষক একেএম তাফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, ‘রীনা আক্তার নিয়মিত বেতন-ভাতা নিচ্ছেন। সে কর্মস্থলে অনুপস্থিত এ সংক্রান্ত কোন চিঠি আমি পাইনি। এ কারণে তার বেতন-ভাতা নিয়মিত হচ্ছে।’
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের সচিব মো. জহুরুল হক বলেন, ‘রাজনৈতিক বিবেচনায় তার বদলি ফরেনসিক বিভাগে হয়েছিল। কিন্তু ওই বিভাগ কর্তৃপক্ষ তাকে না নেয়ায় সে আর কোথাও যোগদান করেনি।’
অন্যদিকে অফিস সহায়ক রীনা আক্তার দাবি করে বলেন, ‘আমি চাকুরির শুরু থেকেই ফরেনসিক বিভাগে ছিলাম। পরে বদলি হয়ে অন্য বিভাগে গেলেও সম্প্রতি ফরেনসিকে আবারও আমার বদলি হয়। কিন্তু সেখানের স্যার আমার যোগদান নেয়নি। অন্য কোনো বিভাগে আমাকে বদলিও করা হয়নি। তবে নিয়মিত আমি অধ্যক্ষ স্যারের অফিসে হাজিরা দিচ্ছি। তিনি একটা ব্যবস্থা করবেন বলেছেন।’
বিষয়টি জানতে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা: কাজী গোলাম মোখলেছুর রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে ওই বিভাগের কর্মচারীরা জানায়, ২০০৪ সালের ৯ অক্টোবরে রীনা আক্তার চাকুরিতে যোগদান করে টানা দশ বছর এ বিভাগেই কর্মরত ছিল। সে সময়কালে তার বিরুদ্ধে ময়নাতদন্ত রির্পোট বাণিজ্যসহ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ওঠে। এ কারনেই তাকে এ বিভাগে যোগদান নেয়নি।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: মো. আনোয়ার হোসাইন বলেন, ‘রীনা বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করেনি সত্য। কিন্তু সে নিয়মিত অফিসে আসে।’ তবে কর্মস্থলে যোগদান না করেই বেতন-ভাতা নেয়ার বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন