রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের ফেরিতে প্রায় পাঁচ কোটি ব্যয়ে ফগ অ্যান্ড সার্চলাইট সংযোজন করা হলেও কুয়াশায় কাজ করছে না।
ফলে মাঝে মধ্যেই বন্ধ থাকছে ফেরি চলাচল, ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না এ রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা।
বিআইডব্লিটিসি দৌলতদিয়া সূত্রে জানা যায়, ঘন কুয়াশার কারণে প্রতিবছরই দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে প্রায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে ফেরি খানজাহান আলী, শাহ আলী, কেরামত আলী, ভাষা শহীদ বরকত ও কে-টাইপ ফেরি কপোতি, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন, বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর, শাহ আমানত ও শাহ পরান ফেরিতে ফগ অ্যান্ড সার্চ লাইট সংযোজন করা হয়।
২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে পরীক্ষামূলক এ লাইটগুলো সংযোজন করা হলেও ওই বছরের শীত মৌসুমেও কোনো কাজ করেনি লাইটগুলো। এরপর তিন বছর পার হলেও লাইটগুলো মেরামতে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ঘন কুয়াশায় শনিবার সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি সার্ভিস বন্ধ রাখে ঘাট কর্তৃপক্ষ। এ সময় যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে মাঝ নদীতে আটকা পরে পাঁচটি ফেরি। ফেরি সার্ভিস আড়াই ঘণ্টা বন্ধ থাকার কারণে দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত তিন এলাকায় আটকে পড়ে কয়েকশ যানবাহন। তবে বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে যানবাহনের সিরিয়াল।
এ সময় ঢাকা থেকে ফেরি কেরামত আলীতে আসা যাত্রী বেলায়েত হোসেন বলেন, প্রচণ্ড শীতের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাটে অবস্থান করতে হচ্ছে তাদের। সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে ফেরিতে ফগলাইট লাগিয়েছে। লাইটগুলো নিম্নমানের হওয়ায় সেগুলোর ঠিক মতো ব্যবহার হচ্ছে না।
যাত্রী খোকন মিয়া বলেন, ফেরিগুলো কুয়াশায় দিক হারিয়ে পদ্মার চরে বেঁধে যাচ্ছে, যে কারণে কুয়াশায় মাঝ নদীতে আতঙ্ক নিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। এ ব্যপারে কর্তৃপক্ষের কোনো নজরই নেই।
যশোর থেকে ছেড়ে আসা সবজি বোঝাই ট্রাকের চালক আনোয়ার বলেন, এমনিতেই কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তার ওপর ঘাটে এসে বসে থাকতে হয় কয়েক ঘণ্টা। এতে ভোগান্তি বাড়ছে। এছাড়াও ঘাটে বসে থেকে বাড়ছে পণ্য পরিবহন খরচ।
ফেরি শাহ আলীর মাস্টার (চালক) পরিমল চন্দ্র সরকার বলেন, ফগ লাইট শুধু রাতের বেলার সামান্য কাজ করে কিন্তু কুয়াশাভেদ করে সামনে কিছুই দেখা যায় না। যে কারণে যখন কুয়াশা পড়ে তখনই ফেরি বন্ধ করে বসে থাকতে হয়। এর একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
বিআইডব্লিটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক সফিকুল ইসলাম বলেন, ঘন কুয়াশা এক প্রাকৃতিক কারণ, এতে কারো হাত নেই। আমাদের এই রুটে চলাচলকারী বর্তমানে ১৭টি ফেরি আছে। কুয়াশায় কিছুটা যানজট হলেও কুয়াশা কেটে গেলে দ্রুত যাত্রীদের পারাপার করা হয়।
তিনি বলেন, ফেরিতে ফগ লাইটের ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারবো না। কারণ সেটি প্রকৌশলী বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
বিআইডব্লিটিসি প্রকৌশল বিভাগের রাজবাড়ীতে কোনো কার্যালয় না থাকায় তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন