জরুরি হেল্পলাইন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর অন্ধকার জীবন থেকে মুক্তি পেয়েছে চার কিশোরী। এ সময় তাদের আটক রেখে দেহ ব্যবসা করানোর অপরাধে দুই নারীকেও আটক করা হয়।
শুক্রবার ভোরে বন্দিদশা থেকে এ চারজনকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ।
যৌনপল্লী থেকে গ্রেপ্তাররা হলেন- ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর রামখণ্ড গ্রামের রুপা ও কুমিল্লার চান্দিনানগর উপজেলার বিটতলা গ্রামের সুমি।
উদ্ধার এক কিশোরী জানায়, ‘সে দিনাজপুর সদর উপজেলার শেরপুর তেলিপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে। বাল্যবিয়ের শিকার। স্বামী তার অজান্তেই দ্বিতীয় বিয়ে করলে রাগে-দুঃখে সংসার ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে সে। গত কোববানির ঈদের আগে সে কাজের সন্ধানে ট্রেনে এসে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে নামে। স্টেশনে তার সঙ্গে আলাপ হয় শুভ নামে এক ব্যক্তির। প্রথম দিকে নিজের কষ্টের কথা শুভকে সে বলতে চায়নি। শুভ তাকে বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে জানায়, কাজের সন্ধানে সে ঢাকায় এসেছে। এ সময় শুভ তাকে জানায়, তার বিউটিপার্লারের ব্যবসা আছে। ইচ্ছা করলে সে সেখানে কাজ করতে পারে। ভালো বেতনের আশ্বাস দিলে সে শুভর কথায় রাজি হয়ে যায়। এরপর শুভ তাকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে এনে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে রুপা বাড়িওয়ালির কাছে বিক্রি করে দেয়। রুপা অপর বাড়িওয়ালি সুমির সহযোগিতায় তাকে আটকে রেখে মারপিট করে এবং হত্যার ভয় দেখিয়ে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করে। তার সঙ্গে একই কায়দায় আটকে রাখা হয় ১৪, ১৫ ও ১৬ বছর বয়সী আরও তিন কিশোরীকে। তাদেরও বিভিন্ন স্থান থেকে কৌশলে বিউটি পার্লারে চাকরির লোভ দেখিয়ে শুভ দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে বিক্রি করেছে।’
মেয়েটি জানায়, ‘তারা প্রত্যেকেই এই অন্ধকার জীবন থেকে মুক্তির পথ খুঁজতে থাকে। এ পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাত ২টার দিকে তার কাছে আসা এক ব্যক্তির মোবাইল থেকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে উদ্ধারের আকুতি জানায় সে। এরপর গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ ভোরে তাদের উদ্ধার করে।’
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি এজাজ শফী জানান, খবর পেয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে চারজনকেই উদ্ধার করা হয়। এ সময় ঘটনায় জড়িত দুই নারীকে আটক করা হয়। উদ্ধারদের পক্ষে একজন তিনজনকে আসামি করে মানবপাচার আইনে মামলা করেছে। পলাতক আসামি শুভর কোন ঠিকানা পাওয়া যায়নি। তবে তার মোবাইল নম্বর জানা গেছে। এ সূত্র ধরেই তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছেঅ’
(ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন