টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠে বিভিন্ন মাদরাসার কর্তব্যরত ছাত্র, সাথী, জিম্মাদার ও মাঠের মকতবের ছাত্রদের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল বলে অভিযোগ করেছেন মাওলানা সাদ বিরোধী তাবলিগের সাথীরা। গত ১ ডিসেম্বর শনিবার ভোরে এ হামলা হয়। এতে একজন নিহত হন। আহত হন প্রায় দুই শতাধিক।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, এ হামলায় অন্তত দুই হাজার বা তারও বেশি লোক আহত হন। গুরুতর আহত শতাধিক ব্যক্তি এখনো বিভিন্ন হাসপাতাল ও কিনিকে চিকিৎসাধীন আছেন। কেউ কেউ আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন।
‘নির্যাতনের শিকার দাওয়াতের সাথী ও আলেমদের পক্ষ থেকে’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তাবলিগের দায়িত্বশীল মুফতি আমানুল হক।
উপস্থিত ছিলেন মাওলানা নুর ইসলাম, মুফতি জহির ইবনে মুসলিম, মাওলানা মো: ফয়সাল, মাওলানা মো: জাকারিয়া, ইঞ্জিনিয়ার মামুন, গুরুতর আহত মুমিনুল হক ভূঁইয়া, মোহাম্মদ আলী হোসেন, মো: মোহসীন, আবদুল জলিল, আবুল হাসেম, মো: হাবিবুর রহমান, মাওলানা এমদাদ, মো: আবদুল কাদেরসহ অর্ধশতাধিক সাথী।
মুফতি আমানুল হক বলেন, হামলার আগের রাতে ওয়াসিফ ও নাসিম পন্থীরা চৌধুরীপাড়ার একটি মাদরাসায় ও কয়েকটি মসজিদে অবস্থান নিয়েছিল। তারা বলেন, এত সকালে হাজার হাজার হামলাকারীর বাইরে থেকে এসে লাঠি, রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ন্যক্কারজনক হামলার বিষয়টি গোয়েন্দা সংস্থার জানা থাকার বাইরে নয়। তা ছাড়া হামলার আগে পরিচয় দেয়া ডিআইজি পদবির একজনসহ চারজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা উপস্থিত হন। কিছুক্ষণ পর টঙ্গী ইজতেমার মাঠে উত্ত্যপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ সময় জিম্মাদাররা আতঙ্কিত হয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ অবস্থায় মাঠে কোনো অঘটন ঘটবে না এমন নিশ্চয়তা দিলে মাঠের ভেতরের সাথীরা নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। নামাজের শেষপর্যায়ে হামলাকারী ওয়াসিফ পন্থীরা একটি ভবনের ছাদে পূর্ব থেকে জমা করা ইটের টুকরো দিয়ে হামলা শুরু করে। পরে তারা গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে যাকে পেয়েছে তাকেই ব্যাপক মারধর করে। তাদের এ হামলায় দুই হাজার বা তারও বেশি আহত ও গুরুতর আহত হয়েছে।
আমানুল হক আরো বলেন, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে এত বড় ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানোর পর প্রায় এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। এ হামলার নির্দেশদাতা ওয়াসিফ, নাসিম ও হামলার সাথে সরাসরি জড়িত কেউ এখনো গ্রেফতার হয়নি। প্রশাসনের এ নীরব ও রহস্যজনক ভূমিকায় বাংলার আলেম সমাজ ও তাওহিদী জনতা হতবাক। কোনো থানায় তাদের নামে মামলা গ্রহণ করা হচ্ছে না। উপরন্তু তারা আমাদের সাথী, আলেম, ওলামাকে হামলা মামলার হুমকি দিচ্ছে। এ কারণে তাওহিদী জনতার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। যদি কোনো অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয় তাহলে এর দায়দায়িত্ব সরকার ও প্রশাসনকে বহন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কয়েক দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো হামলার নির্দেশদাতা ওয়াসিফ, নাসিমসহ সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান। ওয়াসিফ, নাসিমদের কাকরাইলের শূরা থেকে বহিষ্কার। টঙ্গী ময়দান কাকরাইলের ওয়াসিফবিরোধী শূরার হাতে হস্তান্তর। সারা দেশে ওলামায়ে কেরাম ও শূরাভিত্তিক পরিচালিত সাথীদের ওপর হামলা-মামলা বন্ধ। আগামী ইজতেমা ১৮, ১৯, ২০ জানুয়ারি ও ২৫, ২৬, ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নেয়া। টঙ্গীর মাঠে নামাজ, শবগুজারী ও মকতব চালু করা।
কর্মসূচি : আজ শুক্রবার জুমার আলোচনায় হামলার বিষয়টি তুলে ধরা এবং নামাজ শেষে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হবে বলে জানিয়েছেন তাবলীগের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বীরা।
পাঠক মন্তব্য
Why madrasa students are in Tab-league? They came to fight . Why?
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন