আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে গত ২৬ নভেম্বর অনলাইন এক্টিভিস্ট রবিউল আউয়াল সোহাগকে কুমিল্লা থেকে তুলে নেয়ায় পর এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাচ্ছে না তার পরিবার। ঢাকায় তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার তার স্বামীকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, র্যাব, পুলিশসহ সবার কাছে আকুল আবেদন করেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে অনলাইন এক্টিভিস্ট রবিউল আউয়ালের সন্ধান দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে তার পরিবার। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রবিউলের বাবা শফিকুল ইসলাম, মা মরিয়ম বেগম, বোনজামাই মাসুম এবং শ্যালক ইমদাদুল ইসলাম।
খাদিজা আক্তার তার লিখিত বক্তব্য বলেন, আমার স্বামী মো. রবিউল আউয়াল (২৫) একজন অনলাইন এক্টিভিস্ট। মূলত তিনি লেখালেখির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আমাদের জানামতে তিনি রাষ্ট্র বা সমাজবিরোধী কোনো কাজের সঙ্গে কখনোই জড়িত ছিলেন না।
তিনি বলেন, গত নভেম্বর মাসের ২৬ তারিখ রাতে আমাদের বাসার ক্যাবল অপারেটর আমার স্বামী মো. রবিউল আউয়াল সোহাগকে (২৫) ফোন দিয়েছিলেন। পরক্ষণে আমার স্বামীকেসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন রাত আনুমানিক ১১টার দিকে বাসায় আসেন। তারপর আমার স্বামীকে আমাদের বাসার নিচে রেখে আমাদের ফ্ল্যাটে ডিবি পরিচয় দিয়ে বাসা থেকে ল্যাপটপ, কম্পিউটারসহ অনলাইন-সংক্রান্ত অন্যান্য দরকারি জিনিসপত্র নিয়ে যান।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের নিকটবর্তী থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করি, ডায়েরি নম্বর হলো- ১৮০০। তারপর আমরা সদর দক্ষিণ মডেল থানা, কুমিল্লায় যোগাযোগ করতে থাকি। আমাদেরকে মৌখিকভাবে বলা হয়েছিল ৫ তারিখ এর মধ্যে একটা খবর পাওয়া যাবে। এর মধ্যে গতকালকেও আমরা ডিবি অফিস ও র্যাব অফিসে খবর নেই। কিন্তু তারা বলেন, এ রকম কোনো লোককে আনা হয়নি। এমতাবস্থায় আপনাদের কাছে আমাদের আকুল আবেদন, দয়া করে আমার স্বামীকে ফিরে পেতে আপনারা সাহায্য করুন। তিনি সব মানবাধিকার সংগঠনসহ সব অনলাইন, প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াকর্মীদের সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, আমার জানামতে আমার স্বামী কোনো প্রকার রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড বা কোনো অপরাধচক্রের সঙ্গে জড়িত নন। প্রকাশ্য দিবালোকে একজন মানুষকে এভাবে তুলে নিয়ে আবার অস্বীকার করা মানবাধিকার ও আইনের শাসন পরিপন্থী বলে আমি মনে করি। অবিলম্বে তার সন্ধানসহ নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামী আমাদের পুরো পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস ছিলেন, আমার দুই বছরের একমাত্র শিশুসন্তানের বাবা। আমার স্বামী যদি আমাদের অজান্তে কোনো প্রকার অপরাধ করেও থাকে তাহলে আইন মোতাবেক আদালতে হাজির করে বিচার করা হোক। একজন নাগরিককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করা এটা সাংবিধানিক নিয়ম। তিনি তার স্বামীকে ফেরত পেতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, র্যাব, পুলিশসহ সবার কাছে আকুল আবেদন করেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন