বাংলাদেশের গড় আয়ু যেখানে ৭২ বছর, সেখানে ৭০ বছর বয়সকে জীবনের শেষ পর্যায় বলা যায়। দেশে বয়স্কদের ভাতা দেয়ার ব্যবস্থা হলেও ৭০ পেরোনো ইলয়াস মিয়ার নেই বয়স্ক ভাতায় নাম। এত বয়স হওয়া সত্ত্বেও তিনি যখন বয়স্ক ভাতার মতো সোনার হরিণের দেখা পান না তখন প্রশ্ন রাখাই যায়, আর কবে বয়স্কভাতা পাবেন ইলিয়াস মিয়া?
ইলিয়াস মিয়া রংপুর মহানগরীর ২১নং ওয়ার্ডের হাবিবনগর আকালীটারি গ্রামের ৬নং রোডের মৃত ফইম উদ্দিন মিয়ার ছেলে। বয়স ৭১ ছুই ছুই। শরীরে শক্তি পান না আগের মতো, চোখেও দেখেন ঝাপসা। মাঝে মাঝেই স্বাস্থ্য হয়ে যায় খুবই খারাপ। ভালোমতো চলাচলও করতে পারেন না অশীতিপর এই বৃদ্ধ। পথচলার অবলম্বন এখন লাঠি। লাঠি ভর দিয়ে একটু হাটাচলা করলেই শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি যায় বেড়ে। জীবনের এমন নাজুক পরিস্থিতিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে দিয়েছেন বার বার ধর্ণা; তবুও পান নি বয়স্কভাতার কার্ড কিংবা অন্য কোনো সরকারি সুবিধা।
একসময় ইটভাঙ্গা ও বালু শ্রমিকের কাজ করে পরিবারের ভরণপোষণ করলেও বর্তমানে বয়সের ভারে ন্যূব্জ হয়ে পড়েছেন ইলিয়াস মিয়া। ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক ইলিয়াছ মিয়ার আদি নিবাস রংপুর মহানগরীর ৩১নং ওয়ার্ডের নাজির দিঘির বনগ্রামে হলেও দীর্ঘদিন ধরে তিনি নগরীর হাবিবনগর আকালীটারিতে বসবাস করছিলেন। এরই মধ্যে ছেলে-মেয়েরা বিয়ে করে আলাদাভাবে অন্যত্র চলে যান। ঠিকমত কোন খোঁজ খবর নেয় না। গত দেড় বছর আগে স্ত্রী মর্জিনা বেগম মারা যান। তার পর থেকে তিনি নগরীর শাপলা চত্বর আর্দশ স্কুলপাড়ার আশ্রম সংলগ্ন রংপুর মেডিকেলের ডাক্তার আমিনুল হকের বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসাবে কাজ করছেন। বিনিময়ে সেখানে থাকা-খাওয়াটা হচ্ছে।
ইলিয়াছ মিয়া আক্ষেপ করেন বলেন, ‘আমি বুড়া মানুষ, চোখেও দেখি না, হাঁটতেও পারি না, বয়স্কভাতা পাইলে মরণের আগে ভালো লাগতো।’
এ বিষয়ে জানতে রংপুর সিটির ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহবুবার রহমান মঞ্জুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন