সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে কটূক্তির অভিযোগে করা মামলায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে কারাগারের সাধারণ একটি ওয়ার্ডের মেঝেতে রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কারাগারে নেয়ার পর ‘আমদানি ওয়ার্ড’ নামে পরিচিত একটি সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হয় তাকে। যে ওয়ার্ডটিতে আরও ৪০ জন সাধারণ বন্দি আছেন। তার জন্য রাখা হয়নি কোনও খাট কিংবা চেয়ারের ব্যবস্থাও।
আদালতের এ সংক্রান্ত কোনও নির্দেশনা না থাকায় মইনুল হোসেনকে ‘আমদানি ওয়ার্ডে’ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
টেলিভিশনের টক শো’তে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলা ও নারী বিদ্বেষী বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে রংপুরের একটি মানহানি মামলায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে সোমবার (২২ অক্টোবর) রাত পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)’র সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে তাকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে নেয়া হয়। এসময় ব্যারিস্টার মইনুলের জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এসময় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই মামলার নথি যেহেতু রংপুরে, জামিনের আবেদনও রংপুরেই করতে হবে।’
এর পর বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ইংরেজি দৈনিক নিউ নেশনের সম্পাকমণ্ডলীর সভাপতি মইনুল হোসেনকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। আদালতের নির্দেশনা না থাকায় তাকে রাখা হয় সাধারণ বন্দিদের সঙ্গে।
এর আগে সোমবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে রংপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেন নগরীর মুলাটোল এলাকার মিলি মায়া বেগম নামে এক নারী।
মামলা সূত্রে জানা যায়, নারী বিদ্বেষী বক্তব্য দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ৫০০/৫০৬ ও ৫০৯ ধারায় মামলাটি করা হয়। বাদীর পক্ষে আইনজীবী আইনুল হোসেন আদালতে মামলাটি দাখিল করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের টক শো ‘একাত্তরের জার্নাল’ এ ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি প্রশ্ন করেন, ‘আপনি বলছেন- জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আপনি নাগরিক হিসেবে উপস্থিত থাকেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই বলছেন, আপনি জামায়াতের প্রতিনিধি হয়ে সেখানে উপস্থিত থাকেন।’
মাসুদা ভাট্টির এই প্রশ্নে রেগে গিয়ে মইনুল হোসেন বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই। আমার সঙ্গে জামায়াতের কানেকশনের কোনও প্রশ্নই নেই। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন তা আমার জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।’
এ ঘটনায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে গত শনিবার বিবৃতি দেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৫৫ সম্পাদক ও বেশ কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক।
এছাড়া নারী বিদ্বেষী বক্তব্যের অভিযোগ এনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মইনুল হোসেনের নামে মানহানি মামলা দায়ের করা হয়। এরইমধ্যে একাধিক মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ছেলে মইনুল হোসেন।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন