ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান বলেছেন, ‘যেসব অভিবাসী দেশে ফিরে আসে তাদের কথাগুলো শোনেন, কান্না থামাতে পারবেন না। আমরা সবাই যদি একসঙ্গে বসে কাজ করি এই সেক্টরে সুশাসন যেমন আনা সম্ভব, তেমনি সমস্যা কমানো সম্ভব।’
সোমবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে অভিবাসন খাতের সাংবাদিকদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করা হয়। ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রত্যাশা প্রকল্পের সহযোগিতায় এ কর্মশালার আয়োজন করে আইওএম।
সারাবিশ্ব অভিবাসী সমস্যায় জর্জরিত। এ সমস্যা কমিয়ে আনতে মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন (আইওএম) বাংলাদেশ মিশনের ডেপুটি চিফ শ্যারন ডিমানকে।
শ্যার ডিমানকে বলেন, অভিবাসীদের দেখাশোনা করার দায়িত্ব আমরা না নিলে নিরাপদ অভিবাসনের লক্ষ্য পূরণ করা যাবে না। আফ্রিকার নাগরিক শ্যারন নিজ দেশের প্রবাদ অনুযায়ী বলেন, একটি গাভীকে সঠিকভাবে লালন না করলে তার কাছ থেকে পরিমাণ মতো দুধ পাওয়া যাবে না। তেমনি অভিবাসীদের দায়িত্ব আমরা সবাই সঠিকভাবে না নিলে তারাও দেশকে সাহায্য করতে পারবে না।
শ্যারন আরও বলেন, আমরা অভিবাসীদের নিয়ে মিডিয়ার নিউজ মনিটর করি। তাতে দেখা যায়, ২০ শতাংশ সংবাদ অভিবাসীদের নিয়ে। বাকি সব সংবাদ নানা ধরনের সংকট নিয়ে। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের অভিবাসন নিয়ে আরও গুরুত্ব সহকারে কাজ করার আহ্বান জানান।
এরপর অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির তার উপস্থাপনায় বিশ্বজুড়ে অভিবাসনের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। উপস্থাপনার বিভিন্ন তথ্য সাংবাদিকদের প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে ধরারও পরামর্শ দেন তিনি।
আইওএম সদর দফতরের কমিউনিটি এঙ্গেজমেন্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার এমি রডস অভিবাসন সংক্রান্ত প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এ সময় তিনি আইওম কিভাবে মিডিয়ার সঙ্গে কাজ করে সেসব বিষয় তুলে ধরেন।
সমাপনী বক্তব্যে শরিফুল হাসান বলেন, অভিবাসন খাত নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের অনেক সুযোগ রয়েছে। শুধু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট না আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটের বিষয়ে ভাবলেও অনেক প্রতিবেদন করা যায়।
তিনি বলেন, আমি মনে করি সাংবাদিকদের সঙ্গে যদি নিয়মিত আলোচনায় বসি তাহলে অনেক প্রতিবেদন করার আইডিয়াগুলো পাওয়া যাবে। এই সেক্টরে যত বেশি প্রতিবেদন করা যাবে এবং এর প্রেক্ষিতে যা অর্জিত হবে তা সবই সাংবাদিকদের অর্জন।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই না আমার দেশের একটা মেয়ে বিদেশে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হোক, আমরা চাই না আমাদের একজন ভাই সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে মারা যাক। এরা আমাদেরই ভাই, আমাদেরই বোন। আপনারা যারা এই সেক্টরে কাজ করেন তারা খুব কাছ থেকে দেখেছেন। আমার মনে হয় নির্যাতিত অভিবাসীদের ব্যথা আমাদের সবারই অনুভব করা উচিত।
শরিফুল হাসান আরো বলেন, অন্যান্য খাতের সাংবাদিকতার সঙ্গে অভিবাসন খাতের সাংবাদিকতার মধ্যে পার্থক্য হলো- শুধুমাত্র এই খাতে মানুষকে নিয়ে লেখা যায়।
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন- আইওএম-এর ন্যাশনাল কমিউনিকেশন অফিসার চৌধুরী আসিফ মাহমুদ বিন হারুন, অভিবাসন বিষয়ক রিপোর্টারদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফর বাংলাদেশি মাইগ্রেন্টসের (আরবিএম) সাধারণ সম্পাদক ও ইউএনবি’র সিনিয়র রিপোর্টার মাসউদুল হক প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন