ব্রিটিশ আমলে নির্মাণ করা রাজবাড়ী রেলস্টেশন ভবনের ভিতের উপর নতুন করে শুরু হয়েছে ছাদ স্থাপনের কাজ। ফলে ফের ঝুঁকির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ওই ভবনের। সাধারণ যাত্রী ও রেলওয়ে কর্মকর্তাদের ধারণা সংস্কার না করে নতুনভাবে ভবনটি নির্মাণ করলে ঝুঁকি মুক্ত হতো এ ভবনটি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্রিটিশ আমলে রাজবাড়ী রেলস্টেশন স্থাপন করা হয়। আর রেলস্টেশনকে ঘিরেই পরবর্তীতে জেলা শহরের রুপান্তর হয় রাজবাড়ী। আর ওই সময়ই নির্মাণ করা হয় একতলা রেলস্টেশন লাল ভবন। যে ভবনে পরিচালিত হয়ে আসছে যাত্রী সেবার কাজ। তবে সংস্কারের অভাবে ওই ভবনের পলেস্তারা ভেঙে পড়া, ছাদ চুইয়ে পানি পড়াসহ অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলে যায় এ ভবনটি। যে কারণে সাম্প্রতিক সময়ে ওই ভবনে কাজ করা সম্পূর্ন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরায়, তা গত সেপ্টেম্বর মাসে পুনঃসংস্কারের কাজ শুরু করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। যার অংশ হিসেবে ভবনের একটি অংশের ছাদ ভেঙে ফেলা হয়েছে। সেই সাথে ভেঙে ফেলা ছাদের ওই ভিতের উপরই ফের ছাদ স্থাপনের কাজ করা হচ্ছে পুরোদমে।
সরজমিনে ওই কাজ পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ওই ভবনের দরজার উপরের অংশ ছাদসহ পর্যন্ত ভেঙ্গে ফেলেছেন নিযুক্ত ঠিকাদারের শ্রমিকরা। সেই সাথে ব্রিটিশ আমলে নিমার্ণ করা ওই দেয়ালের উপরই নতুন করে গাঁথা হয়েছে ইটের গাথুনি। আর এই গাথুটির উপর ফের ছাদ স্থাপনের কাজ চলছে তখন পুরোদমে।
স্টেশনে আগত বৃদ্ধযাত্রী আকবর আলী মিয়া বলেন, এক থেকে দেড়শত বছর আগে এই রেলস্টেশন ভবন স্থাপন করা হয়েছে। অথচ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিবেচনাহীনভাবে এই ভবনের ছাদের অংশ ভেঙে ফেলে পুরোনো এই ভিতের উপর ফের ছাদ স্থাপনের কাজ করছে। এটি বোধগম্য নয়। পুরোনো গাঁথুনি নতুন ছাদের ওজন আর সইতে পারবে না। ওজনের ভারে স্বল্প সময়ের মধ্যে তা ভেঙে পরবে না তার নিশ্চিয়তা কে দেবে।
অপর যাত্রী শাহানা বেগম বলেন, মানুষ সামনের দিকে এগিয়ে যায়, আর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের এই সংস্কার কাজ দেখে মনে হচ্ছে তারা অতিতেই ফিরে যেতে পছন্দ করেন।
সংস্কার কাজ করতে থাকা আশুলিয়ার ইনসিনেটি কনস্ট্রাকশনের প্রতিনিধি রেজাউল মোল্লা জানান, ২৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে নিয়ম মেনে তারা প্রায় ৩ মাস ধরে ২ হাজার ৯শত স্কায়ার ফুটের এই ভবন সংস্কারের কাজ করছেন। তাদের সিডিউলে বলা হয়েছে, পুরোনো ১৫ ইঞ্চি দেওয়ালের ভিতের দরজার উপরের অংশ পর্যন্ত ছাদসহ ভেঙে ফেলা এবং ভেঙে ফেলা অংশের উপর নতুর করে আরও দুই ফুট উচ্চতা বৃদ্ধি করে নতুন ছাদ স্থাপন, নতুন দরজা ও থাইগ্লাসের জানালা, মেঝে টাইলস করা।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই তাদের এ কাজ শেষ হবে। তিনিও মনে করেন, পুরোনো নয়, নতুন করে যদি ভবনটি নির্মাণ করা সম্ভব হতো তাহলে ভাল হতো। তবে তাদের কিছু করার বা বলার নেই। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দেয়া নির্দেশনার আলোকেই তারা এ কাজ করছেন।
রাজবাড়ী রেলস্টেশন মাস্টার কামরুজ্জামান জানান, পুরোনো ভীতের উপর তাদের একটি ভবনের কাজ শুরু করা হয়েছে। এটি ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া এ রেলস্টেশনে আরেকটি ভবন রয়েছে, সে ভবনটিও পলেস্তারা ভেঙ্গে পড়ছে, ছাদ চুইয়ে পানি পড়ছে। ফলে তারা অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় কাজ করছেন।
রাজবাড়ী রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল হানিফ জানান, পুরোনো ভিতের উপর নতুন করে ছাদ স্থপনের বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হবে না। কারণ তাদের প্রকৌশলীরা বিষয়টি খতিয়ে দেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন