: প্রায় অর্ধশত নারী জঙ্গিকে খুঁজছে গোয়েন্দারা। এদের বেশিরভাগাই জামায়াতের নারী সংগঠন ছাত্রী সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের নেত্রী। এরা গ্রামগঞ্জের সহজ সরল নারী ও স্কুল-কলেজ ছাত্রীদের আল্লাহর সান্নিধ্যের প্রলোভনে জঙ্গিবাদে উদ্ধুব্ধ করছে। দেশের বিভিন্নস্থানে আত্মগোপনে থেকে তৎপরতা চালাচ্ছে এরা। গত ২ বছরে ২০ নারী জঙ্গি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অভিযান চালিয়ে ইসলামী ছাত্রী সংস্থার ৫ ছাত্রী, যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সাবেক আমীর মতিউর রহমান নিজামীর স্ত্রী শামসুন্নাহার নিজামী পরিচালিত ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ৫ নারী ও সিরাজগঞ্জে জিহাদী বই ও তাজা সেহ ৪ নারী জঙ্গিকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে রগার সিঙ্গারাভেলু নামে এক ব্যক্তির ওপর ছুরি নিয়ে হামলা চালায় মোমেনা সোমা নামের এক বাংলাদেশি নারী। পরদিন তাকে গ্রেফতারের পর হামলাটি আইএসের অনুপ্রাণিত হামলা বলে জানায় অষ্ট্রেলিয়ান পুলিশ। এরপর বাংলাদেশ পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে মিরপুরে ৩৫৫/১ পূর্ব কাজীপাড়ার বাসায় যায়। একপর্যায়ে সিটিটিসির এক কর্মকর্তার ওপর ছুরি নিয়ে আক্রমণ চালায় মোমেনার বোন সুমনা। প্রথমে ছাত্রী সংস্থা পরে বোনের মাধ্যমেই সে জঙ্গিাবাদে জড়িয়েছে বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একজন পদস্থ কর্মকর্তা জানান, নব্য জেএমবির মাস্টারমাইন্ডসহ শীর্ষ নেতাদের সাথে মোমেনার যোগাযোগ ছিল বলে তথ্য পেয়েছে তারা। সুমনার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে চার্জশিট চুড়ান্ত করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। খুব শিগগিরই সেটা আদালতে দাখিল করার কথা রয়েছে। ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরের একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় পুলিশ। এই আস্তানায় হলি আর্টিজানের অর্থ জোগানদাতা তানভির কাদেরী কিশোর শিশুপুত্রসহ নিহত হন। পুলিশ এই আস্তানা থেকে শীলা ও শারমিন নামে ২ নারী জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। ওই সময় ১ বছরের এক কন্যা শিশুকে উদ্ধার করে সেভ হোমে পাঠানো হয়। সর্বশেষ নরসিংদীর মাধবদীতে মেঘলা ও মৌ নামে ২ নারী জঙ্গিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরা দুজন ঢাকার মানারত বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষার্থী এবং এর আগে ছাত্রী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিল।
পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, জঙ্গিরা কৌশল পরিবর্তন করছে। এখন তারা নারীদের ব্যাবহার করছে। তবে এ বিষয়েও আমরা অবগত আছি। ওরা যেখানে যে কোনো প্রোগ্রাম করুক না কেন স্ট্রং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আমরা পেয়ে যাই। বিশেষ করে হলি আর্টিজানে হামলার পর থেকেই জঙ্গিদের দেখে নেয়ার মানসিকতা থেকে পুলিশ চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করছে। ইতিমধ্যে জঙ্গিদের ভীত নড়বড়ে হয়ে গেছে। বাংলাদেশের বড় হামলার সক্ষমতা জঙ্গিদের নেই। তবে তারা ঘাপটি মেরে থেকে বিচ্ছিন্ন তৎপর হওয়ার চেষ্টা প্রায়ই করে থাকে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন