সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ ধরার দায়ে গত ২ সপ্তাহে চৌহালী উপজেলার ৭১ জেলেকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া অভিযানে ২ লাখ মিটার কারেন্ট জাল এবং সাড়ে ৫শ কেজি মা ইলিশ জব্দ করা হয়েছে।
দেশব্যাপী ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ আহরণ, বিপনণ ও পরিবহনে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আগে থেকেই উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের জেলেদের নিয়ে সভা সেমিনার করে সচেতন করা হয়েছে।
এছাড়া অসহায় দরিদ্র জেলেদের মধ্যে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত বিশেষ সহায়তার চালও বিতরণ করা হয়। তারপরও যমুনার ভাঙনে বিধ্বস্ত কিছু জেলে ও অতিলোভী মৎস্যজীবি সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ আহরণে নদীতে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও মৎস্য অফিসের করা টহল ফাঁকি দিয়ে সুযোগ বুঝে মা ইলিশ ধরছে।
মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, চৌহালীর উত্তরে বোয়ালকান্দি ও দক্ষিণে পাথরাইল এবং পশ্চিমে এনায়েতপুর পর্যন্ত যমুনা নদীর প্রায় ২৮ কিলোমিটার বিশাল এলাকায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে দ্রুতগতির নৌযান নিয়ে জেলেরা জাল ফেলে মা ইলিশ ধরছে। তাদের জালে ধরা পড়ছে ডিমওয়ালা রুপালি ইলিশ।
মা ইলিশ ধরার অপরাধে গত ১৪ দিনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ৭১ মৎস্যজীবিকে আটক করে ৪৮ জনকে ১৫ দিন করে ও ২৩ জনকে ৭ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া প্রায় আড়াই লাখ টাকা মূল্যের ২ লাখ ২৫ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। জব্দকৃত সাড়ে ৫শ কেজি মা ইলিশ স্থানীয় এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সদিয়া চাঁদপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম সিরাজ পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, যমুনা চরের অধিকাংশ মানুষের প্রধান পেশা মৎস্য শিকার। দারিদ্রতা ও অসচেতনতার কারণে নিষিদ্ধ সময়েও অনেকই মাছ ধরছেন।
তবে প্রচার ও সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জেলের মধ্যে সরকারি সহায়তা বৃদ্ধির দাবি জানান তিনি। জাতীয় সম্পদ রক্ষায় জেলেসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।
উপজেলা মৎস্য অফিসের ক্ষেত্র সহকারী শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, বিশাল যমুনা নদীতে একদিকে অভিযান চলছে, অন্যদিকে কিছু অসাধু জেলে মাছ ধরছেন। তবে এটা গত বছরের তুলনায় অনেক কমেছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আনিছুর রহমান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের জন্য আলাদা টাস্কফোর্স গঠন করে পুলিশ ও মৎস্য অফিস যৌথভাবে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। ১৪ দিনে ৭১ জেলেকে সাজা প্রদান ও ২ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে।
মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন