চট্টগ্রামের যানজট নিরসনে লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত উড়াল সড়ক নির্মাণের বিরোধিতা করছে ‘পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন। মাত্র ২০০ জন ভিআইপি-সিআইপির বিমানবন্দরে যাতায়াতের জন্য ২৮০০ কোটি টাকায় উড়াল সড়ক না বানিয়ে তাঁদের হেলিকপ্টারে বিমানবন্দরে আনা-নেওয়ার কথা বলেছেন সংগঠনের সভাপতি।
গতকাল সোমবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম’-এর নেতারা এসব কথা বলেন। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব স্থপতি জেরিনা হোসাইন।
সংগঠনের সভাপতি অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ সিকান্দার খান বলেন, ‘২০০ জন ভিআইপি-সিআইপিকে যারা মাথায় তুলতে চায়, সেই সরকার গণতান্ত্রিক সরকার নয়। আমার রাস্তায় আগে আমাকে নির্বিঘ্নে হাঁটার অধিকার দিন। ২০০ জন ভিআইপি-সিআইপিকে হেলিকপ্টারে করে বিমানবন্দরে আনা-নেওয়া করুন। উনারা সম্পদশালী মানুষ।
হেলিকপ্টারে করে আসা-যাওয়ার সামর্থ্য উনাদের আছে। কিন্তু কোনোভাবেই আমার মাথার ওপর পা ফেলে নয়। ’
নগরীর লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে না বানিয়ে বিকল্প ‘ডেডিকেটেড লেইন’ করার চিন্তা করতে সরকারকে অনুরোধ করেছে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সিডিএ চেয়ারম্যান ঘোষণা দিয়েছেন লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করবেন। ইতিমধ্যে টেন্ডারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। যুক্তি হিসেবে সিডিএ চেয়ারম্যান সিআইপি-ভিআইপিদের দ্রুত বিমানবন্দর যাত্রার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন। ’
জেরিনা হোসাইন বলেন, ‘বর্তমানে সড়কের যে সক্ষমতা আছে, অব্যবস্থাপনার জন্য সেটার শতভাগ ব্যবহার হচ্ছে না। সঠিক বিকল্প বিবেচনা না করে মাত্র ২০০ জন শিল্পদ্যোক্তার বা সিআইপি-ভিআইপির জন্য ২৮০০ কোটি টাকার এক্সপ্রেসওয়ে কি সমর্থন করা যায়? এই সিআইপি-ভিআইপিরা মোট জনসংখ্যার কত জন? শূন্য দশমিক ০০৩৩ শতাংশ। ২০১৬ সালের পরিসংখ্যন অনুযায়ী দৈনিক বিমানযাত্রী ৩৪৭২ জন। সেটা বিবেচনা করলেও এই বিনিয়োগ যৌক্তিক নয়। ’
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহসভাপতি সুভাষ বড়ুয়া, এম এ বাসেত ও বিধান বড়ুয়া এবং সদস্য প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, শাহরিয়ার খালেদ ও তাসলিমা মুন ছিলেন।
উল্লেখ্য, সরকারের ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গত ১০ অক্টোবর লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ নির্মাণসংক্রান্ত ব্যয় অনুমোদন করেছে। চট্টগ্রাম শহরের মূল অংশ থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যাতায়াত সহজতর করতে নেওয়া এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন