চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া শান্তিনগর এলাকায় চলাচলের সেই ১২ ফুট চওড়া সড়কের ২ ফুটও এখন আর অবশিষ্ট্য নেই। ধারক দেওয়ালসহ পুরো সড়কই ধসে গেছে খালের মাঝে। ফলে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন আশপাশের তিনটি এলাকায়
বসতিগড়া প্রায় পঞ্চাশ হাজার পরিবারের সদস্যরা।
শান্তিনগর এলাকার মহল্লা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হাসেম বলেন, ‘খালপাড়ের এ সড়ক দিয়েই শান্তিনগর, পশ্চিম বাকলিয়া ও শাহ আমানত আবাসিক এলাকার প্রায় ২ লাখ লোকের চলাচল। এলকাটি রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা ও
বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ওই তিনটি এলাকায় ৭টি মসজিদও রয়েছে। সেসব মসজিদের মুসল্লিরা এ সড়ক দিয়েই জামায়াতে নামাজ আদায়ের জন্য চলাচল করতেন। তবে এখন জুমার নামাজ ছাড়া পাঁচ ওয়াক্ত জামায়াতে নামাজ আদায়ের জন্য
যেতে পারেন না কেউই। খালের নোংরা পানি ও ময়লার জন্য ঘর থেকেও কেউ আর বের হতে পারেন না।’
স্থানীয় বয়োবৃদ্ধ শামসুল আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কোনো প্রসুতি মা অথবা মুমূর্ষু রোগিকে যে এ রোড দিয়ে বের করে হাসপাতালে নিবেন সে সুযোগটিও এখন আর নেই। ছেলে-মেয়েরা এ ধসে যাওয়া দেড়শ ফুট সড়কে খালের নোংরা পানি ও
ময়লা মাড়িয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। খুব কষ্ট করেই এ এলাকা থেকে বেড়িয়ে কর্মস্থলে যান নারী ও পুরুষরা। কাউন্সিলরকে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেননি ‘
মোহাম্মদ হাসেম বলেন, ‘সড়ক দিয়ে এক সময় এ্যাম্বুলেন্স, কার, মাইক্রোবাস ও ছোট ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করতো। চলতো সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা, টমটমসহ নানান যানবাহন। তবে এখন আর কিছুই চলে না। সৎকারের জন্য লাশ নিয়ে এ
রাস্তা দিয়ে পায়ে হেটে বের হবেন সেই সুযোগটিও আর নেই। প্রায় দেড়শ ফুট রাস্তা ধারক দেওয়ালসহ পুরোটাই ধসে গেছে খালের মাঝে। ফলে এ শান্তিনগর এখন নরক নগরে পরিনত হয়েছে।’
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ওই এলাকার কাউন্সিলর এ.কে এম জাফর ওরপে জাফর মাষ্টার বলেন, ‘সড়কটি গত ৩ থেকে ৪ মাস আগে ভালোই ছিলো। খালপাড়েরর এ সড়কের খালের দিকের পুরোনো ধারক দেওয়াল (গার্ডওয়াল) ভেঙে নতুন গার্ড ওয়াল করার
১৫ থেকে ২০ দিনের মাথায় ধসে গেছে। এক জায়গায় বা দুজায়গায় নয়! প্রায় দেড়শ ফুট সড়ক পুরোটাই ধসে এখন খালের মাঝে।’
কাউন্সিলর জাফর মাষ্টারের অভিযোগ নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার ও ধারক দেওয়ালের মধ্যে কোনো রড ব্যবহার না করা ও খালের মধ্য থেকে গাঁথুনী ঠিকভাবে না দিয়ে যেততেনভাবে কাজ করার কারণে নির্মাণকাজ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে ধসে গেছে। এই জন্য তিনি সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে কাজের তদারকিতে থাকা সহকারী উপ-প্রকৌশলী ও কাজ বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারকে দুষেছেন।
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সহকারী উপ-প্রকৌশলী মোহাম্মদ শওকত বলেন, ‘এটা নির্মাণ ত্রুটি নয়, আমরা নির্মাণ করেছি গার্ডওয়াল ও একটি কালভার্ট। সেখানে কোনো সমস্যা হয়নি। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ওই খালের
মধ্যে গভীর থেকে ড্রেজিং করার কারার কারণে গার্ডওয়াল ধসে সড়কটি ধসে গেছে। তাছাড়া ড্রেজিংয়ের সময় গার্ডওয়ালের নিচ থেকেও মাটি তুলে ফেলার কারণেদেওয়াল ধসে গেছে বলে দাবী করেন তিনি।’
শওকত আরও বলেন, ‘বিষয়টি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। ওই দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানটি ধসে যাওয়া গার্ডওয়াল নির্মাণকরে দিলেই সড়কের কাজ সিটিকর্পোরেশন থেকে করার ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানান।’
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন