এসকে সিনহা আজ যা বলছেন সব মিথ্যা মন্তব্য করে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আপিল বিভাগের বিচারকরা সাবেক প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বসে বিচার কাজ পরিচালনা করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ছিলেন। কেন জানিয়েছিলেন? কারণ তিনি একজন দুর্নীতিবাজ। তাদের বার বার অস্বীকৃতির জানানোর কারণে তিনি কোনও উপায় না দেখে পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগের প্রায় এক বছর পর এসে তিনি এই নতুন গল্প সৃষ্টি করেছেন। আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি এটা হচ্ছে একজন পরাজিত ব্যক্তির হা হুতাশ।’
রবিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের চাঁদমারী এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী সমিতির কার্যকরি কমিটি অভিষেক ও ডিজিটাল বার ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন,‘সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা একজন দুর্নীতিবাজ। এ নিয়ে বিষয়ে প্রশ্ন আসতে পারে? একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। আমরা সব সময় বলে এসেছি আইন সবার ঊর্ধ্বে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন সেটা খতিয়ে দেখছে। তারা যখন তার বিরুদ্ধে মামলা করবে তখনই মামলা হবে। সেখানে সরকার কোনও হস্তক্ষেপ করবে না।’
মন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বর মাসের নির্ধারিত সময়ে সুষ্ঠু ও নিপেক্ষভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিছু লোক বলছেন নির্বাচন হবে না। অওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে অংশ নিবে। বিএনপিকে এই নির্বাচনের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। জনগন যাকে ভোট দিবে সেই ক্ষমতায় আসবে।’
মন্ত্রী বলেন,‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং নিজস্ব টাকায় পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে। দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে। অনেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচনের কথা বলে। কিন্তু এটা এখন সংবিধানে নেই। আমরা আর পেছন দিকে আর হাটবো না। হাটলে সামনের দিকে হাটবো।
মন্ত্রী বলেন, ‘যারা আজকে সংবিধান পরিপন্থি ব্যবস্থা করার জন্য পায়তারা করছেন তাদের শুধু একটা কথাই বলতে চাই। আপনারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। মানুষ যদি আপনাদের গ্রহণ করে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আর মানুষ যদি আমাদের গ্রহণ করে তবে আপনারা কোনও আপত্তি করতে পারবেন না।’
মন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জের সিজিএম কোর্ট ও জেলা দায়রা জজ দু জায়গায় হওয়ায় আইনজীবীরা বিচার কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে পড়েন। এই সমস্যা সমাধানের কথা দিয়েছি। এরই মধ্যে পাওয়ার ডেভলাপমেন্ট বোর্ডের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা সিজিএম কোর্ট নির্মাণের জন্য তাদের জায়গাটি আমাদের ছেড়ে দিবে। আর পাওয়ার ডেভলাপমন্টে বোর্ড সিজিএম কোটের জন্য যে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে সে ভবনটি নিয়ে নিবেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই এই কাজ সম্পন্ন করা হবে।’ এসময় মন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণের জন্য আইন মন্ত্রণালয় থেকে এক কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শামীম ওসমান বলেন,‘সাবেক রাষ্ট্রপতি ড. বদরুদ্দোজা চৌধুরি বিএনপি দিকে হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় বিএনপি আশার আলো দেখছেন। আপনাদের শোকরানা নামাজ পড়া উচিত। কিছু ডক্টর এক হয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। অনেকে স্বপ্ন দেখছেন দেশে কিছু একটা ঘটবে। যদি ২০১৪ সালের মতো আবার মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করেন তবে তা মোকাবেলা করার জন্য শেখ হাসিনার কর্মীরা প্রস্তুত আছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, একেএম শামীম ওসমান, গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতিক, নজরুল ইসলাম বাবু, সংরক্ষিত নারী সাংসদ হোসনে আরা বাবলী, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু সালেহ শেখ মো জহিরুল হক, নারায়নগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, ও জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়াসহ অনেকে।
উল্লেখ্য নারায়ণগঞ্জ পাঁচ আসনের সংসদ সদস্য বিকেএমইএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমানর ব্যক্তিগত আর্থিক সহায়তায় (তিন কোটি টাকা ব্যয়ে) বহুতল ডিজিটাল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন