বরগুনা-২ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) শওকত হাচানুর রহমান রিমন ও তার লোকজন জেলা তাঁতী লীগ সভাপতি সভাপতি মো. ইদ্রিস চৌধুরীকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এসময় তার সঙ্গে থাকা গরু কেনার টাকাও তারা নিয়ে যান বলে অভিযোগ ইদ্রিস চৌধুরীর।
রোববার বিকালে বরগুনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন জেলা তাঁতী লীগ সভাপতি ও রায়হানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইদ্রিস চৌধুরী।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার পাথরঘাটা চরদুয়ানী বাজার সংলগ্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
এই অনুষ্ঠানে বিকাল ৩টার সময় এমপি রিমন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ-বিষয়ক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হাওলাদারসহ পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হন।
জেলা তাঁতী লীগ সভাপতি বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টার দিকে অনুষ্ঠান শেষ হলে নেতারা অনুষ্ঠান থেকে বের হয়ে স্কুল গেটের সামনে বেড়িবাঁধের ওপর গাড়িতে অপেক্ষা করেন। এসময় আমি এমপির গাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় এমপি রিমন গাড়ি থেকে বের হয়ে আমার শার্টের কলার ধরে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন। মারধর থামাতে চাইলে এমপি অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে আমাকে মারধর করেন।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এসময় এমপির সঙ্গে থাকা বশির মিয়াসহ কিছু আওয়ামী লীগ নেতারা মারধরে অংশ নিয়ে আমার কাছ থেকে গরু কেনার ৯৬ হাজার ৫০০ টাকা, ১ ভরি ২ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন, একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি মোবাইল ফোন ও একটি হাতঘড়ি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ইদ্রিস চৌধুরী আরও জানান, এমপি রিমন এবং তিনি একই এলাকার বাসিন্দা। এমপি রিমন উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় পূর্ব শক্রতার জেরে ইদ্রিস চৌধুরীর বোন হোসনে আরা বেগমকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করেন। এনিয়ে আইনি ব্যবস্থা নিলে এমপিকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। এর জের ধরেই তাকে মারধর করা হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
এবিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাবির হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এরকম ঘটনা ন্যাক্কারজনক। উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা মো. খবির আহম্মেদ বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার বলার কিছু নেই। তবে অনুষ্ঠানটির শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা যা পরিশ্রম করেছি শেষ পর্যন্ত তার কোনো ফল পেলাম না।’
এবিষয়ে জানতে চাইলে এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন বলেন, ‘ইদ্রিস আমার এলাকার একজন নামকরা চোর। আমি উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তাকে পিটিয়ে এলাকা ছাড়া করেছি। এখন আমার ক্ষতি করার জন্য আমার চারপাশে ঘোরাফেরা করছে।’
মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওখানে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি। আমি তাকে শুধু শাসিয়েছি।’
পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, একজন এমপির এরকম কর্মকাণ্ড কোনভাবেই সমর্থন করা যায় না। তিনি যে কাণ্ড ঘটিয়েছেন সেটা সত্যি ন্যাক্কারজনক।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন