আমি এক নিঃসঙ্গ মৃত্যু পথযাত্রী। নতুন জনমের জন্য আকুতি করছি আমার চিকিৎসার জন্য এখনই এগিয়ে আসুন। নইলে বড্ডো দেরি হয়ে যাবে। আপু/ভাইয়ারা আমি অন্ধকারকে অনেক ভয় পাই। আমায় আলোতে আনতে এগিয়ে আসুন। আমি আপনাদের পুরোটা চাইনি...শুধুই সবার মতো জীবন স্বপ্নে বিভোর আমি ওই সামান্য সাহায্য টুকু চেয়েছি। আপনারা সবাই ভালো থাকুন। আর পৃথিবীর কোনো চাঞ্চল্যকে যেন এই রোগ ছুঁতে না পারে এমনটা দোয়া করি।
চার পায়ার বেডটি থেকেই জোরে চিৎকার করে আমি রিয়াদ বলছি, আমি বেঁচে থাকার প্রচেষ্টায় প্রতিদিন ছটফট করছি। প্রতিটা ব্যথাও এখন সয়ে গেছে ওই মৃত্যু ভয়ের কাছে। জানেন আপনারা, আমার মা প্রতিদিন এই চার দেয়ালের কেবিন থেকে বেড়িয়ে নিঃশব্দে অঝোরে কাঁদে। আর আপু সে একা স্তম্ভিত হয়ে আছে। সব কিছুর জন্য দায়ী আজ আমিই। পৃথিবীতে যখন এসেছিলাম তখন সবার মুখে হাসি ছিলো। আজ সবাই কাঁদছে। তবে কি আমি.....। হয়তো তাই।
কেবিনের বেড কাভারটা সাদা। প্রতিদিন মনে হয় এটাই বুঝি কাফনের কাপড়। আজ অনেক একা মনে হয়। বন্ধুরা ফার্স্ট টার্ম পাস করে ফিলিং রিল্যাক্সড বলে। আর আমি ওই মোটা সিরিঞ্জ যখন হিপবোন থেকে বের করে তখন রিল্যাক্সড বলি। ওরা আজ অ্যাবডোমেন কার্ড শেষ করছে। আর আমি Non-Hodgekin's lymphoma এর 4th স্টেজ এ আছি।
আচ্ছা, আমার মেডিকেল পড়তে চাওটায় কি দোষ ছিলো, না আমার জন্মটায় দোষ? আমি বাঁচতে চাই। আমিও সবার মতো আইটেম, কার্ড, টার্ম, প্রফ দিতে চাই। আমার আম্মু আর আপু তাদের সর্বস্ব দিয়ে দিছে...কিন্তু এতে আমার চিকিৎসা হবে না। আমি এক নিঃসঙ্গ মৃত্যু পথযাত্রী। নতুন জনমের জন্য আকুতি করছি আমার চিকিৎসার জন্য এখনই এগিয়ে আসুন। নইলে বড্ডো দেরি হয়ে যাবে।
নিজেকে বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে এভাবেই ফেসবুকে লিখেছেন এনাম মেডিকেল কলেজের ইএম-১৫ ব্যাচের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রিয়াদ। তিনি বর্তমানে ভারতের মুম্বাইয়ে টাটা মেমোরিয়াল হসপিটাল এ চিকিৎসাধীন। রিয়াদের বাড়ি রংপুর শহরের কেরানিপাড়া ডিসির মোড়ে। সে ওই এলাকার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে।
এনাম মেডিকেল কলেজের ইএম-১০ ব্যাচের শিক্ষার্থী ডাক্তার তপু জাগো নিউজকে জানান, গত দুই বছর ধরেই রিয়াদ অসুস্থ ছিল। রমজান ঈদের ছুটিতে রংপুরে যাওয়ার পর ১৩ জুন রিয়াদের বায়োপসি করা হয়। সেই টেস্টে Non-Hodgekin's lymphoma নামে ক্যান্সার ধরা পড়ে। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল, ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্নস্থানে তাকে ডাক্তার দেখানো হয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম সে হয়তো ক্যান্সারের প্রথম বা ২য় স্তরে আছে। গত ২৮ জুলাই ভারতে যাওয়ার পর আমরা জানতে পেরেছি সে ক্যান্সারের লাস্ট স্টেজে আছে। তার চিকিৎসার জন্য আপাতত ২০ লাখ টাকা প্রয়োজন। এছাড়াও পরে ফলোআপ চেকাপসহ বিভিন্ন ধাপে টাকার প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি জানান, আমাদের কলেজ থেকে সিনিয়র-জুনিয়র মিলে তাকে আপাতত এক লাখ ১৫ হাজার টাকা সহযোগিতা করেছি। তবে এখনও কলেজ কৃর্তপক্ষের কাছে এ ব্যাপারে কোনো আবেদন করিনি।
তিনি আরও জানান, রিয়াদের বাবা মারা গেছে অনেক আগেই। অনেক কষ্টে চলে তাদের সংসার। এতো টাকা তার পরিবারের পক্ষে যোগাড় করা কোনোভাবেই সম্ভব না। তিনি রিয়াদের পাশে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে আহ্বান জানান। রিয়াদের বিষয়ে আরও জানতে যোগাযোগ করতে পারেন ডাক্তার তপুর সঙ্গে। মোবাইল : 01682369604।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন