আর মাত্র চারদিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। রাজধানীর বিভিন্ন পশুর হাটে এখনও বেচা-বিক্রি জমে ওঠেনি। চলছে শেষ সময়ের সব কাজের প্রস্তুতি। ঘরে ফেরা ও পশু কেনাবেচার জন্য গাবতলীতে জড়ো হচ্ছে লাখো মানুষ। নিজেদের প্রয়োজনে করছেন কেনাকাটাও। পশু বিক্রির পাশাপাশি গাবতলীতে গড়ে উঠেছে খণ্ডকালীন ব্যবসা।
সব মিলিয়ে গাবতলীর বহুমুখী ব্যবসা-বাণিজ্য এখন দারুণ চাঙ্গা। আজ গাবতলী হাটে ওঠা গরু সর্বনিম্ন ৪৫ হাজার থেকে শুরু করে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকতে দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের।
শুক্রবার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর বৃহত্তম পশুর হাট গাবতলীতে গিয়ে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে। গাবতলী হাটে এবার দেশি গরু বেশি। দামও বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। তবে ব্যাপারী, হাট ইজারাদারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন এখন পর্যন্ত গরুর দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।
গাবতলীর পশুর হাট গতকাল পর্যন্ত জমে না উঠলেও ব্যাপারীরা জানিয়েছেন, আজ পুরোপুরি জমে উঠেছে এই হাট। সকাল থেকে মোটামুটি বেচা-বিক্রি শুরু হয়েছে।
ব্যাপারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার ভারত থেকে গরু আমদানি হয়নি। তবে ঈদের দুই দিন আগে যদি চোরাই পথে গরু আসে তাহলে তাদের অনেক লোকসান গুনতে হবে।
সর্বনিম্ন ৪৫ হাজার থেকে শুরু করে ২০ লাখ টাকা দামের গরু রয়েছে। রং, প্রজাতি, আকারভেদে দাম হাঁকছেন ব্যবসায়ীরা। তবে গাঢ় উজ্জ্বল রংয়ের গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এহাটে দেশি গরুর পাশাপাশি রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান, শ্রীলঙ্কানসহ নানা প্রজাতির গরু। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ও উট। হাটের একপাশে দেশি ছাগল সারিবদ্ধভাবে বেঁধে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।
গাবতলীর হাটে ঘুরে ঘুরে পশু দেখছিলেন মিরপুরের বাসিন্দা তাসমিন কবির। তিনি ব্রেকিংনিউজকে বলেন, দামদর যাচাই করতে এসেছিলাম। গরু রাখার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তাই আগেভাগে কেনারও সুযোগ নেই। কোরবানির আগের রাতে কিনবো, যাতে রাস্তায় বেঁধে রেখে পরেরদিন কোরবানি দেয়া যায়।
গরুর দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে কুষ্টিয়ার ব্যাপারী আলমগীর মিয়া বলেন, ‘গিরস্তের কাছ থেইক্কা চড়া দামে গরু কিনি হাটে তুলছি। দামও এবার অন্যান্য সময়ের থেকে বাড়তি হবে। গ্রামেও গরু পালতে অনেক খরচ। সামনে ভোট, এবার কোরবানিও অনেক হবে। যে নেতা গেলবার ৫টা কোরবানি দিছে, এবার সেই নেতা ১০টা দেবে। মনে হচ্ছে এবার কোরবানিতে গরু শট হবে।’
এদিকে, হাটের মধ্যে বাড়তি চাপ এড়াতে আশপাশের এলাকায় বাঁশ, চট, রশি দিয়ে চলছে ছাউনি নির্মাণের কাজ। নির্মাণ শ্রমিকদের দাবি, শনিবার থেকে বাজারে পশু ও ক্রেতাদের চাপ বাড়বে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আরও পশু আনা হবে। হাটে পা ফেলানোর জায়গা থাকবে না। তাই আগেভাগেই প্রস্তুতি চলছে।
গাবতলী হাট পরিচালনা কমিটির সদস্য সানোয়ার হোসেন ব্রেকিংনিউজকে বলেন, সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী ঈদের তিন দিন আগ থেকে আমাদের ঈদের হাট শুরু হবে। যেহেতু এটা স্থায়ী হাট তাই সবদিনই পশু কেনা-বেচা হয়, হবে। হাটে পশু ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার সুবিধার্থে সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পুরো হাট সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। তাই কেউ অপরাধ করে পার পাবে না।
গাবতলী হাটের নিরাপত্তায় ১১টি ওয়াচ টাওয়ার থাকবে। এই ওয়াচ টাওয়ার থেকে পুরো হাটের সার্বিক নিরাপত্তা দেখভাল করা হবে। এছাড়া প্রতিটি রাস্তায় স্বেচ্ছাসেবকরা থাকবেন পশু হাটে আনা থেকে শুরু করে বিক্রি পর্যন্ত তদারকি করবে।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন