শূন্য পদ না থাকা সত্তে¡ও আরেক দফা পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। এ ধাপে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও উপসচিব পদে পদোন্নতি পাবেন কর্মকর্তারা। চলতি মাসে এ বিষয়ে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) দুটি বৈঠকও করেছে। এতে অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতির বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। আসন্ন ঈদুল আজহার পরই অতিরিক্ত সচিব পদের পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন হতে পারে।
সূত্র জানায়, পদোন্নতির জন্য কর্মকর্তাদের নামের তালিকা চেয়ে গেল এপ্রিলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব, সচিব ও ভারপ্রাপ্ত সচিবদের চিঠি দেন উপসচিব মো. তমিজুল ইসলাম খান। চিঠিতে উপসচিব পদে পদোন্নতির জন্য আগ্রহী বা যোগ্য বিভিন্ন ক্যাডারের ২৫তম ব্যাচ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের তালিকা চাওয়া হয়। যেসব কর্মকর্তার সিনিয়র স্কেল পদে ন্যূনতম পাঁচ বছর চাকরিসহ সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের সদস্য হিসেবে অন্যূন ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে, তাদের মধ্য থেকে ১০ জনের (জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে) তালিকা ১০ মের মধ্যে পাঠানোর জন্য বলা হয়।চার কারণে অযোগ্য কর্মকর্তাদের তালিকা না পাঠানোর নির্দেশনা দিয়ে ওই চিঠিতে বলা হয়, উপসচিব হতে অনাগ্রহী কর্মকর্তাদের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। এ ছাড়া সিনিয়র স্কেলে চাকরির মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ না হলে ও ২৫তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের যোগদানের জন্য নির্ধারিত তারিখের পর যারা ক্যাডার সার্ভিসে যোগ দিয়েছেন, তাদের নামও তালিকায় রাখা যাবে না। এর পর থেকেই পদোন্নতি পেতে কর্মকর্তারা বিভিন্ন চ্যানেলে যোগাযোগ শুরু করেন।
সূত্র জানায়, যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পাবেন ১৫ ও ১৭ ব্যাচের কর্মকর্তারা। অতিরিক্ত সচিব হবেন দশম ব্যাচ থেকে। আর উপসচিব পদের জন্য ২৫ ব্যাচের কর্মকর্তাদের নির্বাচিত করা হচ্ছে, যারা ২০০৬ সালে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। তারা বর্তমানে সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে কাজ করছেন। উপসচিব পদে পদোন্নতি বিবেচনার জন্য প্রশাসন ছাড়া অন্যান্য ক্যাডারের কাছ থেকেও নামের তালিকা চাওয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, বর্তমানে স্থায়ী ১২১ অতিরিক্ত সচিব পদের বিপরীতে আছেন ৪৭৯ জন। উপসচিবের নিয়মিত (ডিউটি) ১ হাজার ৬ পদের বিপরীতে ১ হাজার ৭৫৯ জন কর্মরত। আর যুগ্ম সচিবের ৪১১টি স্থায়ী পদের বিপরীতে আছেন ৭৭৯ জন। নির্ধারিত পদের বাইরে সুপারনিউমারারি ভিত্তিতে অতিরিক্তদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে নতুন করে পদোন্নতি দিলে বিসিএস প্রশাসন ছাড়া অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকেই।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, পদোন্নতি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। নিয়ম অনুযায়ীই কর্মকতারা এটা পান। তবে এবারের পদোন্নতি নিয়ে বেশ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অনেক সিনিয়র কর্মকর্তার সঙ্গে প্রায় ১১ বছরের জুনিয়র কর্মকর্তাদেরও উপসচিব করা হচ্ছে। অর্থাৎ বিসিএস প্রশাসনের ২৫ ব্যাচের সঙ্গে অন্য ক্যাডারের ১৫ ব্যাচের কয়েকজন কর্মকর্তাকেও উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হবে। অনেকে পদোন্নতি না পাওয়ার কারণে কাজে উৎসাহ হারাচ্ছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন