বিএনপি’র পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির দিনে ৮ মহানগরে শোডাউন করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল ১০ দফা দাবিতে দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিএনপি। এর বিপরীতে ৮টি শহরে শান্তি সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বিএনপি ও সমমনা দল ও জোটগুলো আগামী ১১ই ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। রাজধানীর নয়া পল্টনে আয়োজিত সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ওদিকে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশ থেকে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, বিএনপি সারা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চায়। এজন্য নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।
পূর্ব-ঘোষণা অনুযায়ী বিএনপি ১০ সাংগঠনিক বিভাগ ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও কুমিল্লায় সমাবেশ করে। এতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন। অন্যদিকে রাজশাহী ও কুমিল্লা ছাড়া অন্য মহানগরে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ সমাবেশ করে।
নয়া পল্টনে আয়োজিত সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান সরকার হিরো আলমের কাছেও অসহায়। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে হিরো আলমকে পরাজিত করা হয়েছে।
আজকে হিরো আলম হিরো হয়ে গেছে। সে হিরো হয়েছে একটি মাত্র কারণে। সে প্রমাণ করেছে যে, আওয়ামী লীগ কতটা অসহায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উকিল আবদুস সাত্তার বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে উপনির্বাচনে গেছেন। তাকে আওয়ামী লীগ নিজের লোক মনে করে জয়ী করতে বিরোধী পক্ষের প্রার্থীকে গুম করতে হয়। এই সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি’র বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানো এবং আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমন-নিপীড়ন বন্ধ, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি, গণতন্ত্র বিরোধী দুর্নীতিবাজ সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে সারা দেশে ১০টি সাংগঠনিক বিভাগীয় সদরে পঞ্চম ধাপের কর্মসূচি পালন করলো বিএনপি ও সমমনা দল এবং জোটগুলো। তিনি বলেন, আজকে এই সরকার শুধু কথা আর চাপার জোরে টিকে আছে। মিথ্যাচার করে দেশের মানুষকে প্রতারিত করছে। চাল, ডাল, তেল ও গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। এই সরকার আমাদের ভবিষৎকে নষ্ট করে দিয়েছে। তারা একদিকে ঋণ করছে আরেকদিকে জনগণের পকেট কাটছে। ঋণের টাকা পাচার করছে। বিদেশে বাড়ি কিনছে। সেই ঋণের টাকা বাংলাদেশের মানুষ পরিশোধ করবে কেন? ফখরুল বলেন, দেশের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন এই মুহূতে সরকারের পতন দেখতে চায়। পরিবর্তন দেখতে পায় জনগণ।
তিনি বলেন, এই সরকার জনগণের দিকে তাকায় না। দেশ এখন লুটেরাদের কবলে পড়েছে। যার নেতৃত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই গণতন্ত্র হত্যা করেছে। দেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দিয়েছে। সব গণমাধ্যম বন্ধ করে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। আজও আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়ে জেলে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদেরকে দমাতে পারবে না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা আমাদের অধিকার ফেরত পেতে চাই। আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য একটা কল্যাণমূলক রাষ্ট্র তৈরি করতে চাই। দ্রব্যের মূল্য কমিয়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে চাই। এখনো সময় আছে অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তারেক রহমানসহ সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এখনো কারাগারে যে হাজার হাজার নেতাকর্মী আছেন তাদের মুক্তি দিতে হবে। আন্দোলন শুরু হয়েছে। এই আন্দোলনের মধ্যদিয়ে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে আমরা গণতন্ত্র উদ্ধার করবো।
ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনবো। আমরা ধীরে ধীরে চলছি। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছি। ফখরুল বলেন, আজকে হাজার হাজার ভুলে ভরা পাঠ্যপুস্তক তৈরি করেছে। তারা প্রতিনিয়ত আমাদের কৃষ্টি কালচার নষ্ট করছে। সরকার সংসদ থেকে শুরু করে সবকিছু ধ্বংস করে এখন একটি ব্যর্থ জাতি তৈরি করতে চায়। তারা প্রতিনিয়ত জনগণের ঘৃণা কুড়াচ্ছে। তিনি বলেন, আজকে আমাদের আন্দোলনে অনেক রাজনৈতিক দল এগিয়ে আসছে। আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। এই আন্দোলন মানুষের অধিকার রক্ষার আন্দোলন। বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য নয়। আমাদের এই যাত্রা জাতি হিসেবে নিজেদের টিকিয়ে রাখার যাত্রা। এই সমাবেশের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ আরেকবার প্রমাণ করেছে যে তারা ফ্যাসিস্ট, গণতন্ত্র বিরোধী, গণবিরোধী, গণবিচ্ছিন্ন সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে। ফখরুল আরও বলেন, এ সরকার ফ্যাসিস্ট সরকার। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে ক্ষমতায় বসে আছে। এ আন্দোলন অধিকার আদায়ের আন্দোলন। আমরা অধিকার আদায়ের লড়াই করছি ভোটের অধিকার, বাঁচার অধিকার, বাক-স্বাধীনতার অধিকার, মানবাধিকার রক্ষার অধিকার। আপনারা সবাই এ সরকারের বিরুদ্ধে লড়ে যাবেন। সরকার দেশের বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও আইন বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ১৯৭১ সালের চেতনা নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ফখরুল বলেন, আমাদের জাতির অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলন। আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলন। সেই লক্ষ্যেই আমরা দশ দফা ও ২৭ দফা প্রণয়ন করেছি। এর মধ্য দিয়েই দেশের মানুষ প্রমাণ করেছে যে তারা একটি দাবিতে আন্দোলন করছে। সেটা হলো এই অবৈধ ভোটারবিহীন সরকারের পদত্যাগ। আমরা বলে আসছি অনির্বাচিত সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবো না।
সকাল ১০টা থেকে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন ইউনিটের ছোট ছোট মিছিল নয়া পল্টনে আসতে থাকে। নয়া পল্টনে জড়ো হয়ে তারা বিদ্যুতের দাম কমানোসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু এবং আমিনুল হকের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, তাবিথ আউয়াল, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, অঙ্গসংগঠনের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, আফরোজা আব্বাস, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না সহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন ও ঢাকা বিভাগের কয়েকটি জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ।
এদিকে বিএনপি’র সঙ্গে দাবি- দাওয়া মিল রেখে একই দিনে বিক্ষোভ সমাবেশে করেছে সমমনা দল ও জোটগুলো।
গতকাল সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। এ সময় মঞ্চের নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সব নৈতিকতা হারিয়ে ফেলেছে। এখন তারা বাজার ব্যবস্থা পাচারকারীদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। বিভিন্ন আসনে উপ-নির্বাচনের নামে প্রহসন করছে। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক যুগপৎ ধারায় পরবর্তী আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম কমানোর দাবিতে আগামী ১১ই ফেব্রুয়ারি ঢাকাসহ সারা দেশে গণপদযাত্রা ও গণসংযোগ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ। ওইদিন সকাল ১০টায় রাজধানীর মিরপুর-১২ নম্বরে সমাবেশ করবে নেতৃবৃন্দ। সমাবেশ শেষে পদযাত্রা শুরু করবেন তারা। মিরপুর-১০, আগারগাঁও, ফার্মগেট, শাহবাগ হয়ে মতিঝিল গিয়ে শেষ হবে বলে জানান তিনি। সাইফুল হক বলেন, সরকার যদি সোজা পথে না হাঁটে তবে গণজাগরণ জোরদার করে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের গলায় গামছা পেঁচিয়ে বিদায় করা হবে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি’র সাধারণ সম্পাদক শহীদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ। বিকালে রাজধানীর পূর্বপান্থপথস্থ এফডিসি সংলগ্ন এলডিপি’র কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি। দলটির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেছেন, নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে সবকিছু। মনে হচ্ছে জ্বলন্ত চিতার উপরে আছে দেশের মানুষ। দেশের মানুষ আজ কর্মহীন, দিশাহীন, তার উপর অত্যাধিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য দেশ আজ জ্বলন্ত চিতার উপর দাঁড়িয়ে। সরকারি দলের লুটপাটের জন্য দুইদিন পর পর নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেশের মানুষকে শাস্তি দেয়ার কোনো অধিকার এই নিশিরাতের সরকারের নেই। পরে এলডিপি কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের করে এলডিপি। মিছিলটি মালিবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
এদিকে জনগণের সম্মতিবিহীন ‘অবৈধ’ সরকারকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা অনিবার্য হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ১২ দলীয় জোটের নেতারা। গতকাল বিজয়নগর পানির ট্যাংকি সংলগ্ন রাস্তায় আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। তারা বলেন, স্বাধীন দেশে আজ ভিন্নমত দমনে রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে কর্তৃত্ববাদী শাসনের সামাজিক ভিত্তি রচনা করা হচ্ছে। ক্ষমতালিপ্সা রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে, রাষ্ট্রকে দেউলিয়া করে ফেলেছে। সুতরাং দেশ ও জনগণের স্বার্থেই এ অবৈধ সরকারের পতন ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর আবশ্যক হয়ে পড়েছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল গনি, এনডিপি’র চেয়ারম্যান ক্বারি মুহাম্মদ আবু তাহের, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, ইসলামী ঐক্য জোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শওকত আমিন প্রমুখ। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানোসহ ১০ দফা দাবিতে সারা দেশের ইউনিয়নে ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। আগামী ১১ই ফেব্রুয়ারি যুগপৎভাবে এ কর্মসূচি পালন করবে তারা। গতকাল দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে আল রাজি কমপ্লেক্সের সামনে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপি’র চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, জাগপার একাংশের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান এডভোকেট আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী, মাইনোরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি ম-ল, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. নুরুল ইসলাম, এনপিপি’র মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা প্রমুখ। একই দাবিতে গতকাল পুরানাপল্টনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট। জোটের সমন্বয়কারী ও বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, ভোটারবিহীন সরকার তার পতনের ধ্বনি শুনতে পাচ্ছে। ক্ষমতা টেকসই করার জন্য সীমাহীন দমন-পীড়ন করছে। কিন্তু সরকার ভুলে গেছে দমন-পীড়ন করে পৃথিবীর কোনো স্বৈরাচার শক্তি টিকতে পারেনি। এই সরকারও টিকতে পারবে না। তারা শুধু মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়নি, ক্ষমতায় থাকার জন্য গুম, খুন ও ক্রস ফায়ারের পথ বেছে নিয়েছে। বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীদেরকে কারাগারে দিয়ে তারা মনে করেছে ক্ষমতা চিরস্থায়ী। সাধারণ জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধ। এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছেড়ে যাবে না। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, জিয়া নাগরিক সংসদের সভাপতি এডভোকেট মাইনুদ্দিন মজুমদার, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী নাগরিক দলের সভাপতি সৈয়দ ওমর ফারুক পীর সাহেব, সংবিধান সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি এডভোকেট আতিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসাইন মৃধা, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি আমির হোসেন বাদশা, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিলের সভাপতি শেখ আলীম উল্লাহ আলীম, সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ, বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো. ওমর ফারুক প্রমুখ।
সংসদকে ছোট করতে হিরো আলমকে প্রার্থী করেছে বিএনপি: কাদের
ওদিকে বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ফখরুল সাহেব বললেন, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে হিরো আলমকে হারানো হয়েছে। হায়রে মায়া! হিরো আলমের জন্য এত দরদ উতলে উঠলো তার। তিনি ভেবেছিলেন, হিরো আলম জিতে যাবে। কিন্তু হিরো আলম এখন জিরো হয়ে গেছে। হিরো আলমকে বিএনপি নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছে। তারা সংসদকে ছোট করার জন্য হিরো আলমকে প্রার্থী করেছে। অবশেষে ফখরুলের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে।
গতকাল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। কামরাঙ্গীরচর সরকারি হাসপাতাল মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ফখরুল সাহেব, পাকিস্তান আমল তো ভালো, এখন পাকিস্তানের কী অবস্থা? বাংলাদেশের ৬ মাস আমদানি করার রিজার্ভ আছে। পাকিস্তানে ৩ সপ্তাহের রিজার্ভও নেই। আজকে ক্ষুধায় সমস্ত পাকিস্তান কাঁপছে। সেই পাকিস্তান আপনার ভালো লাগে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু আপনারা যদি ক্ষমতায় যান বাংলাদেশ আজকের পাকিস্তান হবে। ফখরুল সাহেবরা বাংলাদেশকে পেয়ারের পাকিস্তান বানাবে আমরা সেটা হতে দেবো না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, এডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রমুখ। শান্তি সমাবেশ পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন