ইতালিতে জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। ৫ কোটিরও বেশি ভোটার রবিবার ইতালির পরবর্তী সরকার বেছে নিতে ভোট দেবেন। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে কট্টর ডানপন্থি সরকার ক্ষমতায় আসতে পারে ইতালিতে। আর তা জানতে ইউরোপের অন্যান্য দেশও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
ভোটের আগে হওয়া সর্বশেষ জনমত জরিপগুলোতে জর্জিয়া মেলোনির নেতৃত্বাধীন কট্টর ডানপন্থি ব্রাদার্স অব ইতালি পার্টির জয়জয়কার দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
আরও দুই ডানপন্থি দলের সঙ্গে মিলে করা তার জোট ক্ষমতাসীন হলে মেলোনিই ইতালির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ব্রাদার্স অব ইতালির এ শীর্ষ নেতা সাম্প্রতিক সময়ে নিজের খানিকটা উদার ভাবমূর্তি দাঁড় করিয়েছেন, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থনও করেছেন। ইউরোপ নিয়ে তার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও অনেকখানিই কমে এসেছে।
অবশ্য এখনও তিনি ফ্যাসিস্টদের পুরনো স্লোগান ‘ঈশ্বর, পিতৃভূমি, পরিবার’-এর ওপরেই আস্থা রাখছেন। তিনি সমকামিতার পক্ষে কাজ করা লবির বিরোধী, অভিবাসন রুখতে লিবিয়ার ওপর নৌ অবরোধ দেওয়ার পক্ষে।
জুলাইয়ে মারিও দ্রাঘির জাতীয় ঐক্য সরকার ভেঙে যাওয়ায় ইতালিতে এক শতকেরও বেশি সময় পর শরৎকালে প্রথম সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে।
রেবিবার সকাল ৭টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোট স্থানীয় সময় রাত ১১টা পর্যন্ত চলবে, এরপর বুথফেরত জরিপ ও ভোটের চিত্র দেখে কারা পরবর্তী সরকার গঠন করতে যাচ্ছে, তার আভাস মিলবে।
মেলোনির ব্রাদার্স অব ইতালির সঙ্গে ডানপন্থিদের জোটে আছে মাত্তিও সালভিনির লিগ পার্টি ও সিলভিও বারলুসকোনির ফোর্জা ইতালি।
নির্বাচনে জিতলে তা হবে রোমের বাসিন্দা ৪৫ বছর বয়সী মেলোনির জন্য বড় উত্থান। ২০১৮ সালের সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচনেই তার দল পেয়েছিল মাত্র ৪ শতাংশ ভোট।
ভোটগ্রহণ আজ রাতে শেষ হলেও সংখ্যানুপাতিক হিসাব আর বেশি ভোট পাওয়া প্রার্থীর আসন জয়সহ নানান জটিল বিন্যাস থাকায় পার্লামেন্টে কোন দল ঠিক কত আসন পেতে যাচ্ছে তা বের হতে সময় লাগবে।
সর্বশেষ জনমত জরিপ হয়েছে ভোটের দুই সপ্তাহ আগে; এর মধ্যে বাম ঘরানার ফাইভ স্টার মুভমেন্ট দলের সমর্থন কিছুটা বেড়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে, এ কারণে কেউ কেউ ভোটের ফলে চমকও আশা করছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ফাইভ স্টার সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছিল।
আর ডানপন্থিরা সুস্পষ্ট ব্যবধানে জিতলেও অক্টোবরের শেষভাগের আগে তারা সরকার গঠন করতে পারছে না, দেশটির নতুন পার্লামেন্টও আগামী ১৩ অক্টোবরের আগে বসছে না।
ইতালি সহ পুরো ইউরোপের জন্যই এক সংকটজনক সময়ে হচ্ছে এই নির্বাচন। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পুরো ইউরোপজুড়েই রকেট গতিতে বাড়ছে জ্বালানির দাম। গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম আগের বছরের তুলনায় ইতিমধ্যেই ১০ গুন বেড়ে যাওয়ায় ইতালির শিল্প-কারাখানাগুলো প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে নির্বাচনে সব দলেরই প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল জ্বালানির দাম কমানো নিয়ে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন