রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ছয় বছর পূর্ণ হচ্ছে ১ জুলাই। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে জঙ্গি হামলায় ১৭ জন বিদেশিসহ নিহত হন মোট ২২ জন। তাদের মধ্যে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা। জঙ্গিদের গুলি ও বোমায় আহত হন পুলিশের অনেকে। কয়েকবার প্রস্তুতি নেওয়া সত্ত্বেও স্পর্শকাতর বিবেচনায় রাতে হলি আর্টিসানে অভিযান চালানো থেকে বিরত থাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো সদস্যদের পরিচালিত ‘অপারেশন থান্ডারবোল্টে’ অবসান হয় জিম্মিদশার, নিহত হন হামলাকারী পাঁচ জঙ্গি।
জঙ্গিবাদ দমনে অগ্রণী ভূমিকা রাখা বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষ ও সাহসী কর্মকর্তাদের একজন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান। ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় নৃশংস জঙ্গি হামলার পর দেশজুড়ে পুলিশের জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বিসিএস ১৮ ব্যাচের এই পুলিশ কর্মকর্তা। কর্মজীবনে যেখানেই দায়িত্ব পালন করেছেন, রেখেছেন দক্ষতা ও বিচক্ষণতার ছাপ।
আইএসের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ দেশের জঙ্গিদের ছিল না। তারা শুধু প্রযুক্তির সহায়তা নিয়েছে। আমরা জঙ্গি সংগঠনের সব আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছি। শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিদের সিটিটিসি গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ছয় বছরপূর্তি উপলক্ষে দেশে বর্তমানে জঙ্গিবাদ, সিটিটিসির সক্ষমতার বিষয়ে কথা বলতে সম্প্রতি জাগো নিউজের মুখোমুখি হন মো. আসাদুজ্জামান। বিশেষ এ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তৌহিদুজ্জামান তন্ময়।
জাগো নিউজ: বর্তমানে দেশে জঙ্গিবাদ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবে গোপনে জঙ্গিরা তাদের কার্যক্রম ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছে। সিটিটিসি বিষয়টি কীভাবে পর্যবেক্ষণ করছে?
আসাদুজ্জামান: বড় কোনো ঘটনার পরিকল্পনা তখনই আসে যখন পরিকল্পনার সঙ্গে তাদের সক্ষমতার বিষয়টি চলে আসে। এমন সক্ষমতা তাদের নেই। যেহেতু পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সক্ষমতা নেই তাই বড় কিছু তারা ঘটাতে পারবে না। সিটিটিসি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কল্যাণে দেশে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আছে। গ্লোবাল টেরোরিজম ইনডেক্সের (জিটিআই) তথ্যমতে, জঙ্গিবাদ দমনের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ৪০। সবার প্রথমে আছে আফগানিস্তান। পাকিস্তান রয়েছে ১০-এ, ভারত ১২-তে, যুক্তরাষ্ট্র ২৮-এ ও যুক্তরাজ্য ৩১-এ। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বাংলাদেশ।
জাগো নিউজ: এক জরিপে দেখা গেছে, দেশের ২৩ শতাংশ মাদরাসার শিক্ষার্থী ও ৭৩ শতাংশ সাধারণ বিভাগের শিক্ষার্থী জঙ্গিবাদে জড়ায়। সাধারণ মানুষের ধারণা জঙ্গিরা মাদরাসার শিক্ষার্থী। এ সম্পর্কে আপনার মতামত কী?
২০২১ ও ২০২২ সালে দেশের কোথাও কোনো ধরনের অ্যাটাক করতে সক্ষম হয়নি। তাদের সক্ষমতা থাকলে তারা অবশ্যই চেষ্টা করতো। আমরা তাদের সক্ষমতা গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি
আসাদুজ্জামান: জঙ্গিবাদের ধরনটা পরিবর্তনশীল। এক সময় শুধু কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদে জড়াতো বা জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হতো। পরে সাধারণ মাদরাসার শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদে জড়ায়। যারা ছিল জেএমবির সদস্য। পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীরাও এতে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। পরবর্তীসময়ে জঙ্গি সংগঠনগুলো তাদের প্রযুক্তি শাখাকেও সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করে। সেই হিসেবে তারা মাদরাসা শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্কুল-কলেজ, ইংলিশ মিডিয়াম ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে জঙ্গিরা প্রচার-প্রচারণা চালায়।
জঙ্গিরা প্রথমে টার্গেট সিলেক্ট করে এরপর দাওয়াত দেয়। দাওয়াতে যারা উদ্বুদ্ধ হয় তারাই জঙ্গিদের সংগঠনে আনতে সক্ষম হয়। তবে বর্তমান প্রজন্ম অনেক বেশি সচেতন। আগে যত সহজে জঙ্গি সংগঠনগুলো দাওয়াতি কার্যক্রম করতো, যত সহজে শিক্ষার্থীদের রেডিকালাইজ করতে পারতো এখন তারা (জঙ্গিরা) সেভাবে পারছে না। কারণ হচ্ছে দীর্ঘ সাত-আট বছরে তরুণ প্রজন্ম দেখতে পেয়েছে জঙ্গিবাদ ভুল পথ এবং এর যে পরিণতি তাও তারা সচক্ষে দেখেছে। এছাড়া সিটিটিসির সক্ষমতা বাড়ায় সহজেই জঙ্গিদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছেন। সেই মোতাবেক জঙ্গি মোকাবিলায় সিটিটিসি তথা পুলিশ বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। আমরা জঙ্গিবাদ মোকাবিলা ও দমনে অনেকখানি সক্ষম হয়েছি।
জাগো নিউজ: হলি আর্টিসান হামলার পরে বড় কোনো ঘটনা না ঘটলেও সাইবার স্পেসে আগের তুলনায় জঙ্গিদের অ্যাক্টিভিটিস বেড়েছে। সাইবার স্পেসে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে সিটিটিসির সক্ষমতা কতটুকু?
আসাদুজ্জামান: যেহেতু জঙ্গিদের ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটিস করার কোনো সামর্থ্য নেই, প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সুযোগ তারাও নিয়েছে। সাইবার স্পেসে তাদের প্রচার-প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সিটিটিসির তৎপরতার কারণে তারা ফিজিক্যালি তাদের কার্যক্রম চালাতে পারছে না। ২৪/৭ ঘণ্টা সাইবার স্পেসে আমাদের পেট্রোলিং চলছে। এমন অনেককে আমরা শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। তবে বর্তমানে আমাদের তৎপরতার কারণে অনলাইনেও জঙ্গিদের কার্যক্রম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। এ কারণে অনলাইনেও জঙ্গিরা খুব বেশি সুবিধা করতে পারছে না।
জাগো নিউজ: আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতা গ্রহণ ও বাংলাদেশ থেকে কিছু তরুণের আফগানিস্তানে যাওয়ার খবর শোনা গিয়েছিল। আফগানিস্তানে কোনো তরুণ গেছে কি না এবং এই ইস্যুতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কোনো ঝুঁকিতে আছে কি না?
আসাদুজ্জামান: ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতা দখল করে। তার আগে আমাদের দেশে অনেক আলোচনা হয়েছে। অনেকেই ভেবেছিল বাংলাদেশে তালেবানদের উত্থানের প্রভাব পড়বে, দলে দলে লোকজন জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হবে, বাংলাদেশ থেকে দলে দলে তালেবানদের সমর্থক আফগানিস্তানে যাওয়ার চেষ্টা করবে। তবে তখন আমি বলেছিলাম, এমনটা হবে না। বাস্তবেও এমনটা হয়নি এবং সেটা ভুল প্রমাণিত হয়। তালেবানদের অবস্থান এবং বাংলাদেশে আমাদের তৎপরতা- এই দুটি কারণে বাংলাদেশি কেউ আফগানিস্তানে ট্র্যাভেল (ভ্রমণ) করেনি। আমরা বিশ্বাস করি আফগানিস্তানে কেউ যায়নি। ক্ষমতা দখলের পরই তালেবানদের স্পোকম্যান বলেছিলেন- কোনো বিদেশিকে আমাদের (তালেবানদের) সঙ্গে যোগ দেওয়ার সুযোগ দেবো না।
জাগো নিউজ: সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত আনসার আল ইসলামের প্রধান মেজর জিয়া কোথায় আছেন? তার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ আছে কি না?
আসাদুজ্জামান: তিনি এখন পলাতক। তাকে গ্রেফতারে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আমরা আশাবাদী তাকেও আইনের আওতায় আনতে পারবো।
জাগো নিউজ: আগের কয়েকটি ঘটনায় আইএসের নাম ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছে জঙ্গিরা। দেশের জঙ্গিদের কি সত্যিই আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল?
আসাদুজ্জামান: আইএসের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ দেশের জঙ্গিদের ছিল না। তারা শুধু প্রযুক্তির সহায়তা নিয়েছে। আমরা জঙ্গি সংগঠনের সব আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছি। শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিদের সিটিটিসি গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। হলি আর্টিসান হামলার সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া এর পেছনে যারা অস্ত্র সরবরাহকারী, মাস্টারমাইন্ড ছিলেন সবাইকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আবার অভিযানের সময় কেউ কেউ নিহত হয়েছেন। এসব জঙ্গির ডিভাইস উদ্ধারের পর পরীক্ষা করে দেখা গেছে এসব জঙ্গির সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোনো জঙ্গি সংগঠনের কানেক্টিভিটি আমরা পাইনি। তারা নিজেরাও আইএসের কথা স্বীকার করেনি।
জাগো নিউজ: হলি আর্টিসানের মতো এখনো হামলার পরিকল্পনা জঙ্গিদের আছে কি না?
আসাদুজ্জামান: গত দুই বছরে জঙ্গিদের কোনো অ্যাটাক বাংলাদেশে ঘটেনি। যদি জঙ্গিদের সক্ষমতা থাকতো তাহলে কিছুটা হলেও অ্যাটেম নিতো। ২০১৮ সালে জঙ্গিরা কয়েকটি জায়গায় বোমা পুঁতে রেখেছিল। ২০১৯ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ওপর বোমা হামলা করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ২০২১ ও ২০২২ সালে দেশের কোথাও কোনো ধরনের কোনো অ্যাটাক করতে সক্ষম হয়নি। তাদের সক্ষমতা থাকলে তারা অবশ্যই চেষ্টা করতো। আমরা তাদের সক্ষমতা গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি।
জাগো নিউজ: জঙ্গিবাদ নির্মূলে আপনারা বর্তমানে কোন বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন?
আসাদুজ্জামান: প্রধানমন্ত্রী সিটিটিসিকে একটি প্রজেক্টের অনুমোদন দিয়েছেন। তা হলো, ‘সন্ত্রাস দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প।’ এই প্রকল্পের আওতায় জঙ্গিবাদ দমনে হার্ড অ্যাপ্রোস অপারেশনাল অ্যাক্টিভিটিস পরিচালনা করি, ইন্টেলিজেন্স পুলিশের মাধ্যমে জঙ্গিদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করি, একইসঙ্গে দেশে জঙ্গিবাদ বিস্তারে কোনো পরিবেশ না সৃষ্টি হয় সেজন্য সফট অ্যাপ্রোস নিয়েও কাজ করছি। এর মধ্যে রয়েছে সামাজিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম। এ পর্যন্ত দেশের ৪৮টি জেলায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। এ কাজে আমরা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
জাগো নিউজ: কারাগারে জঙ্গিদের সাধারণ বন্দিদের সঙ্গে রাখা হচ্ছে। তাদের মনিটরিংয়ের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কি না?
আসাদুজ্জামান: কারাগারে আমরা মনিটর করতে পারবো না। আমার মনে হয় কারাগার এক্ষেত্রে অনেক বেশি সচেতন। জঙ্গিদের জন্য আলাদা মনিটরিং ও আলাদা থাকার ব্যবস্থা থাকা উচিত এবং আমার মনে হয় তা আছে।
‘আমরা জঙ্গিদের সক্ষমতা গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি’
জাগো নিউজ: যদি কোনো তরুণ বা যুবক বিপথগামী হয়ে উগ্রবাদের দিকে ধাবিত হয় এবং পরে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে চায়, তাহলে তার কী করতে হবে? তার পরিবারের ভূমিকা কেমন হওয়া দরকার এক্ষেত্রে?
আসাদুজ্জামান: জঙ্গিবাদ বিস্তার রোধে পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সন্তানের মানসিক ও ভেতরের অবস্থার পরিবর্তন পরিবারের সদস্যদের আগে নোটিশে আনতে হবে। কারণ একটি ছেলে পরিবারে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেশি সময় কাটায়। জঙ্গিবাদ একটি দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়া। একদিনে একজন ছেলে বা মেয়ে জঙ্গি হয়ে ওঠে না। তার ভেতরে যে পরিবর্তন আসে সেই পরিবর্তনটা যদি অভিভাবকরা খেয়াল করতে পারেন তাহলে অবশ্যই জঙ্গিবাদ বিস্তার রোধ করা সম্ভব এবং সেক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেউ যদি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যায় এবং পুনরায় ফিরে আসে তাকে অবশ্যই আমরা স্বাগতম জানাই। তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য সিটিটিসিরও কার্যক্রম রয়েছে। কেউ যদি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চান তাহলে সিটিটিসি এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জাগো নিউজ: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসাদুজ্জামান: আপনাকে ও জাগো নিউজ পরিবারকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন