বিএনপি সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচিকে সামনে রেখে অধিনস্তদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে শেখ হাসিনার অনুগত ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার। আবারো তথাকথিত আগুন সন্ত্রাস ও নাশকতার কাল্পনিক স্বপ্ন দেখছেন তিনি। সোমবার (১৬ই মে) ঢাকা মহানগর পুলিশের এক বৈঠকে কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম তাঁর কল্পনার আগুন সন্ত্রাস ও নাশকতার বার্তা দিয়েছেন। কথিত এই আগুন সন্ত্রাস বা নাশকতা ঠেকাতে পুলিশ কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
অতীতে ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে দেখা গেছে বিরোধী দলের আন্দোলন তুঙ্গে উঠলে হঠাৎ করেই কথিত আগুন সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছিল। বিরোধী দলের উপর দায় চাপাতে সরকারের অনুগত পুলিশের লোকেরাই এই ঘটনা গুলো ঘটিয়েছিল বলে মনে করা হয়। বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পুলিশ নিজেই নাশকতার ঘটনা ঘটিয়ে বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের ওপর দায় চাপানোর ঘটনা কম নয়। নিজেরা নাশকতা বা আগুন সন্ত্রাস করে দায় চাপিয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের ওপরে। ফের নতুন করে একই ধরনের নীলনকশায় পুলিশকে মাঠে নামানোর ইঙ্গিত দিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার।
ঢাকার রাজারবাগের পুলিশ অডিটোরিয়ামে ডিএমপির মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পুলিশ কমিশনার রাজধানীতে গত এপ্রিল মাসে সংঘটিত নানা অপরাধের পর্যালোচনা করেন।
এই বৈঠকেই ভবিষ্যতে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঠেকাতে নানান কৌশল নিয়েও আলোচনা করেন তারা।
উল্লেখ্য, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো নিজ নিজ কর্মসূচি পালন করছে। এসব কর্মসূচিতে নামছে কর্মীদের পাশাপাশি সমর্থকের ঢল। আর এমন চিত্র দেখেই ভীত-সন্ত্রস্ত আওয়ামী লীগে অতীতের মতোই পেটোয়া পুলিশ বাহিনীকে ফের লাঠিয়ালের ভূমিকায় অবতীর্ণ করতে নানা অপকৌশল শুরু করেছে।
ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ওই সভায় ডিএমপি সদরদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের ডিসি, এডিসি, রাজধানীর ৫০ থানার ওসি এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের প্রহসনের জাতীয় নির্বাচনের আগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচি ঠেকাতে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতা চালায় সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও যুবলীগ-ছাত্রলীগের গুণ্ডারা। অথচ এসবের দায়ভার চাপানো হয় বিএনপি ও দলটির শরীকদের ওপর। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় হাজার হাজার হামলা।
একইভাবে ২০১৮ সালের প্রহসনের জাতীয় নির্বাচনের রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলো বানচাল করতে গোয়েন্দা সংস্থা ও আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা নাশকতা চালায়। কিন্তু, এর দায়ভারও চাপানো হয় বিএনপি ও শরীক দলগুলোর ওপর।
উল্লেখ্য, এই অনুষ্ঠানে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) কৃষ্ণ পদ রায়, অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) একেএম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামানসহ যুগ্ম কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন