বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী।
আজ শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গণফোরামের ষষ্ঠ কাউন্সিলের বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বোন সম্বোধন করে বলেন, 'আমার বোন শেখ হাসিনাকে অনুরোধ, খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে দিন। মানবতা দেখিয়েছেন, আরেকটু দেখান।'
কাদের সিদ্দিকী বলেন, 'আমি বঙ্গবন্ধু প্রেমিক। আমি তার মেয়ে শেখ হাসিনাকে কোনো গালি দিতে পারি না। খালেদা জিয়ার বিষয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলনে যা বলেছেন তা আমি সমর্থন করি। কিন্তু তিনি তা আবেগের বশবর্তী হয়ে বলেছেন, যা সংবিধানের আলোকে বলতে পারেন না।'
বাংলাদেশের এই অবস্থার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে এই রাজনীতিক বলেন, 'দেশের বড় বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি। কিন্তু তারা কোনো আন্দোলনে নামে না। তেলের দাম বাড়ে, জিনিসপত্রের দাম বাড়ে বিএনপি আন্দোলন করে না। ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে তারা রাস্তায় নামে না।'
'বিএনপি জামায়াতের ওপর ভর করেছে। তারা মনে করেছে প্রোগ্রাম হলে জামায়াত লোক আনবে। জামায়াত মনে করেছে বিএনপি লোক আনবে', বলেন তিনি।
কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, 'আমি ঐক্যফ্রন্টে গিয়েছিলাম ড. কামাল হোসেনকে দেখে, তার ওপর ভরসা করে, বিএনপিকে দেখে নয়।'
'যতদিন বিএনপিতে জামায়াত থাকবে ততদিন আমি বিএনপির সঙ্গে নেই। যদি বেহেশতেও জ্ঞান থাকে বলব তাদের সঙ্গে যাব না', যোগ করেন তিনি।
এই বীর মুক্তিযোদ্ধা আরও বলেন, 'জামায়াতের সঙ্গে কোনো আপোষ নেই। যদি তারা নিজেদের ভুল স্বীকার করে তবে ভেবে দেখব।' দ্যা ডেইলি স্টার
....................................................................................
......................................................................................
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, আমি তো আপনাকে ভালোবাসি, আপনার কর্মকাণ্ড ও দলের সমালোচনা করি। আওয়ামী লীগকে বঙ্গবন্ধু কবর দিয়ে গিয়েছিলেন। সে জন্য আমি আওয়ামী লীগ ছেড়েছি। তবে বঙ্গবন্ধুকে ছাড়ি নাই। আজীবন বঙ্গবন্ধুকে আমার বুকে লালন করে যাবো।
তিনি বলেন, মুখে মুখে ঐক্য করবার চেষ্টা করলে হবে না। ঐক্যের জন্য তাগিদ থাকতে হবে। মাহমুদুর রহমান মান্না খুব ভালো বক্তৃতা করেন। আমি ওর কাছ দিয়েও যেতে পারি না। আমাদের আন্তরিকতা থাকতে হবে। ল্যাং মারা, কেনু মারার স্বভাব থাকলে হবে না। এ কাজ সবার আগে বিএনপিকে করতে হবে। মানুষ আমাদেরকে যতোখানি বিশ্বাস করে তার অর্ধেকও বিএনপিকে বিশ্বাস করে না। গণফোরামকে যতোখানি বিশ্বাস করে, বিএনপিকে তাও বিশ্বাস করে না।
শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গণফোরাম একাংশের ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে বক্তব্য রাখার সময় কাদের সিদ্দিকী এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণফোরামকে আরো বেশি বিশ্বাস করতো। কিন্তু ওই মোকাব্বির, না কি নাম, হায়রে হায় এমপি হইয়া, আমি এই সংসদ মানি না। তাহলে সংসদে যাবো কেন? আমি আল্লাহকে হাজার শুকরিয়া জানিয়েছি। আমি আমার মেয়ে কুড়ি সিদ্দিকীকে মনোনয়ন দিয়েছিলাম। কুড়ি যদি পাস করতো, তাহলে তো আমার গলায় বড় একটা ফাঁস পড়তো। আমি তো কুড়িকে এই সংসদে যেতে দিতে পারতাম না। যেখানে ভোট হয়নি। মানুষ ভোট দিতে পারেনি। সংসদকে স্বীকার করি না, আবার সেই সংসদে আমরা ৫/৬জন গেলাম। এটা ঠিক হয়নি। মানুষ এ জন্য বিশ্বাস করে না। মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে হলে, সেই মানুষের কপাল দেখে, মুখ দেখে ভেতরের কথা বুঝতে হবে।
বঙ্গবীর বলেন, আমি ৩০৮ দিন অবস্থান করেছিলাম। কিন্তু সাংবাদিকরা বলে আমি অনশন করেছি। আমি কি পাগল যে অনশন করতে যাবো। যেখানে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী। উনি তো চাইবেন আমি মরে যাই। কিন্তু শেখ হাসিনা জানে না আমি মারা গেলে শেখ হাসিনার ওপর কতোখানি চাপ পড়বে। ৭৫ সালে সবাই আওয়ামী লীগ হয়েছিলো। এমনকি জিয়াউর রহমান পর্যন্ত বাকশালের সদস্য হয়েছিলো। কিন্তু বঙ্গবন্ধু মারা যাওয়ার পর কেউ দাঁড়ায়নি। কেউ কথা বলেনি। আমি বলেছিলাম বঙ্গবন্ধুর তিন ছেলে কামাল-জামাল-রাসেল মারা গেলেও আমি কাদের সিদ্দিকী মরিনি। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ আমরা নেবই নেবো। চেষ্টা করেছি। আজকে যারা ক্ষমতায় আছেন, সেদিন যদি আমি অস্ত্র হাতে না নিতাম, প্রতিবাদ না করতাম, তাহলে বহু নেতাকে কবরে পাঠিয়ে দেওয়া হতো।
তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হয় জাতীয় একটা সহনশীলতা দরকার। বিএনপিকে দেখতে পারে না আওয়ামী লীগ। আবার বিএনপি দেখতে পারে না আওয়ামী লীগকে। একটা সময় এমন না হয় যে আওয়ামী লীগ মরলে বিএনপির লোক যাবে না, আবার বিএনপির লোক মরলে আওয়ামী লীগ যাবে না। মসজিদে নামাজ পড়তে আওয়ামী লীগ গেলে আওয়ামী লীগের মৌলভী লাগবে, বিএনপি গেলে বিএনপির মৌলভী লাগবে। এরকম ভালো না।
পূর্বপশ্চিমবিডি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন