ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে বামজোট নেতাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি-ধাক্কাধাক্কির ঘটনা চলছে। তাৎক্ষণিকভাবে এখনও হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। তবে সময় যত গড়াচ্ছে পরিস্থিতিতে তত উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
সোমবার (১ মার্চ) দুপুরে বামজোটের নেতাকর্মীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে গেলে পুলিশি ব্যারিকেডের মুখে পড়ে নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে ব্যারিকেড ভেঙে বামজোট নেতাকর্মীরা এগোতে চাইলে পুলিশও চড়াও হয়। দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা। এসময় পুলিশকে লাঠিচার্জ করতেও দেখা যায়।
দুপুর ২টা নাগাদ সচিবালয়ের ৩ নম্বর গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে নেতাকর্মীরা সরকারবিরোধী স্লোগান দিচ্ছে। পুলিশ চারপাশ ঘিরে রেখেছে। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বারবারই বাধা ভেঙে এগোতে চাইছে। গোটা এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এদিন বামজোটের ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এদিন সকাল থেকেই জাতীয় প্রেসক্লাব ও সচিবালয়সহ আশপাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।
নেতাকর্মীদের অভিযোগ, সরকার জনগণের রাষ্ট্রকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। জনস্বার্থকে উপেক্ষা করে সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শক্তি প্রয়োগ করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে। বাংলাদেশের জনগণ তা হতে দেবে না। এ রাষ্ট্রের মালিক জনগণ, পুলিশ নয়।
তাদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিনা উস্কানিতে সরকারের লেলিয়ে দেয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাধা দিচ্ছে। যা গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থি।
গতকাল রবিবার লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে ছাত্রদল। সমাবেশ ঘিরে সকাল থেকেই প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে। বেলা সোয়া ১১টার দিকে জমায়েত শুরুর আগেই পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও কাঁদুনে গ্যাস ছুঁড়ে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এক পর্যায়ে নেতাকর্মীরাও পুলিশের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। দুপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশ ও নেতাকর্মীসহ শতাধিক লোক আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছাত্রদলের বেশ কয়েকজনকে আটক করে। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে ছাত্রদলের আরও ৭ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়।
পুলিশের সঙ্গে বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় দলটির ৪৭ জন নেতাকর্মীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় এ মামলাটি দায়ের করে।
মামলায় এজাহারনামীয় ৪৭ জন নেতাকর্মী ও অজ্ঞাতনামা ২০০/২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে (পুলিশ অ্যাসল্ট) হত্যাচেষ্টা, হামলা ও ভাঙচুর চালানোর।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন