দ্বিতল পদ্মা বহুমুখী সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পে ‘ত্রুটি’ নিয়ে জট খুলছে না। নকশায় ত্রুটি ধরা পরার পর থেকেই গত ৪ মাস ধরে পদ্মা সেতুর উভয়প্রান্তে রেল সংযোগের কাজ বন্ধ রয়েছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রেলওয়ের পক্ষ থেকে ‘একটি বিশেষ নকশা’ পাঠানো হয় পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের কাছে। পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ সেটিও প্রত্যাখ্যান করেছে। পদ্ম সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, নকশায় হরিজন্টালে ১৫.৫ মিটার এবং ভার্টিক্যালে ৫.৭ মিটারই রাখতে হবে। কিন্তু রেলের সর্বশেষ নকশায় ভার্টিক্যালে ৫.৭ মিটার রাখা হলেও হরিজন্টালে কম দেখানো হয়েছে। পদ্ম সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, নির্ধারিত ওই মাপেই রাখতে হবে, উনিশ থেকে কুড়ি হলেই নকশা মেনে নেয়া হবে না।
এ নিয়ে রোববার সন্ধ্যায় কথা হয় পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা রেলওয়ের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ নকশা পেয়েছি। সেটি আমরা দেখেছি। আমরা যা যা চেয়েছি, তা তাদের দেয়া নকশায় পূরণ করা হয়নি। আমরা তাদের সাফ বলে দিয়েছি, মূল সেতুর দুই প্রান্তে (মাওয়া ও জাজিরা) রেলপথ নির্মাণে যে ত্রুটি ধরা পড়েছে তা শতভাগ সমাধান না হলে কাজ বন্ধ থাকবে। হরিজন্টাল ও ভার্টিক্যাল- দুই দিকেই রেলওয়ের কাজে আপত্তি দেয়া হয়। আন্তর্জাতিক মান হল হরিজন্টাল ১৫.৫ মিটার এবং ভার্টিক্যাল ৫.৭ মিটার। রেলওয়ের সর্বশেষ নকশায় তার প্রতিফল হয়নি। আমি আমার জায়গা থেকে এটা মানতে পারি না। এখন রেল কি করবে তারাই ভালো জানে। আমাদের চাহিদা অনুযায়ী তাদের নকশা হলে নিশ্চয়ই মানা হবে।
এ নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক শামছুল হকের সঙ্গে। তিনি রোববার সন্ধ্যায় যুগান্তরকে জানান, ভার্টিক্যালে কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়- ৫.৭ মিটার রেখেই রেল নকশা প্রদান করেছে। হরিজন্টাল ১৫.৫ মিটারের স্থলে কিছুটা কম দেখিয়ে নকশা তৈরি করা হয়েছে। এতে কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। তবে আমরা উভয়পক্ষকে নিয়ে দ্রুত সময়ে বসতে চাই। নিশ্চয়ই, দুটি পক্ষ একসঙ্গে বসলে সমাধান বেরিয়ে আসবে। রোববার বিকালে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, আমরা সর্বশেষ একটি বিশেষ ড্রয়িং (নকশা) সেতু কর্তৃপক্ষকে দিয়েছি। কিন্তু সেতু কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন আমরা বুয়েটের বিশেষজ্ঞ প্যানেলসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসে পুনরায় তাদের চাহিদা অনুযায়ী নকশা দেব। আমরা আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই সমস্যার সমাধান হবে। আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, সেতু দিয়ে একই দিন ট্রেনও চালাব। যা দিন দিন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে। আমাদের প্রকল্পের কাজ দ্রুত চলছে। শুধু সেতুর দুই প্রান্তে (আপত্তি করা পিলার) কাজ বন্ধ রয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন