৩ বছরের শিশুকে যৌন নিপীড়ন, অভিযুক্ত গ্রেফতার
কলেজছাত্রীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ
চট্টগ্রামে ৬ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার আসামিকে বাদ দিয়ে বন্দুকযুদ্ধে নিহত একজনকে আসামি করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। অথচ নির্যাতনের শিকার শিশুর আদালতে ২২ ধারার জবানবন্দির পাশাপাশি পুলিশও প্রাথমিক তদন্তে গ্রেফতার আসামির সম্পৃক্ততা পেয়েছিল। কিন্তু প্রকৃত আসামিকে বাদ দিতেই পুলিশ ত্রুটিপূর্ণ তদন্তের মাধ্যমে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে বলে অভিযোগ আইনজীবীদের।
মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ৪ মে বিকেলে নগরীর আকবরশাহ এলাকায় ৬ বছর বয়সী ওই শিশুকে ধর্ষণের পরপরই ৭২ বছর বয়সী নির্মল চন্দ্র আইচকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা। ওই দিনই দায়ের করা এজাহারে নির্মল চন্দ্র আইচকে একমাত্র আসামি করেন ওই শিশুর বাবা। এর মাঝে শিশু কন্যা ওসিসিতে চিকিৎসা নেয়ার পাশাপাশি আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দিও দেয়। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বিকাশ চন্দ্র শীল আদালতে দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনে আসামি হিসেবে নির্মল চন্দ্র আইচের পরিবর্তে ২৩ জুলাই রাতে বায়েজীদে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত বেলাল হোসেনের নাম উল্লেখ করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান বলেন, নির্মল চন্দ্র আইচের পরিবর্তে নিহত বেলালের নাম উল্লেখ করে যে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে তা অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ। এই যে একটা গাফিলতি বা একটা চার্জশিটকে কীভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে এটা তার প্রমাণ।
ওই শিশুর বাবা-মায়ের দাবি, তদন্ত চলাকালে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। এমনকি নিজেদের উদ্যোগে তদন্তের বিষয় জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা গালি-গালাজ করতো বলে অভিযোগ তাদের। অথচ আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনে নির্মল চন্দ্র আইচের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা।
শিশু ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার আসামিকে বাদ দিয়ে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তিকে আসামি হিসেবে দেখানোয় বিস্ময় প্রকাশ করে এ মামলার অধিকতর তদন্তের কথা বলছেন মহানগর পিপি।
পিপি অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দিন আহমেদ বলেন, রিপোর্টটা যেহেতু মূল ঘটনাকে চাপা দেয়ার জন্য করা হয়েছে, সেটা সঠিকভাবে তদন্ত করার দেখা দরকার।
আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের আগে পিপির মতামত না নিলেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদন নিয়েছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র শীল। তবে স্পর্শকাতর এ মামলার তদন্তে কোনো ত্রুটি কিংবা কারো গাফিলতি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
উপকমিশনার ফারুক উল হক বলেন, তারা যেভাবে আসামিকে কেন্দ্র করে মামলা করেছিল, সেভাবে দাখিল করা হয়েছিল। তারপরও একটা বিষয় সামনে এসেছে সেক্ষেত্রে আমরা সেটা তদন্ত করে দেখব।
তদন্তে প্রকৃত আসামিকে বাদ দেয়া এবং গাফিলতির অভিযোগ এনে তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতে দরখাস্ত দিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী। আবেদনটি শুনানির জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফিউদ্দিন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন