পুলিশের হাতে এক কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানের মৃত্যু নিয়ে যে তুমুল সহিংস বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়েছে, তার নজির একেবারেই বিরল। ১৯৬৮ সালেও মার্টিন লুথার কিংয়ের হত্যাকাণ্ডের পর বর্ণবাদের বিরুদ্ধে এমন জনরোষ আমেরিকাতে আর চোখে পড়েনি।
আর এই সুযোগে আমেরিকাকে একচোট দেখে নেয়ার সুযোগ ছাড়ছে না প্রধান দুই বৈরি দেশ- চীন এবং ইরান; সুযোগ পেলেই যাদের সমালোচনা করতে ছাড়েন না প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রে এই বিক্ষোভ নিয়ে অনেক চর্চা চলছে চীনের সোশ্যাল মিডিয়ায়, এবং ‘হট‘ বা সবচেয়ে ব্যবহৃত দুটিশব্দ হচ্ছে - আমেরিকান স্প্রিং বা আমেরিকান বসন্ত।
চীনের সরকার সমর্থিত পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস বলছে, চীনা সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম উইবোতে যুক্তরাষ্ট্রে জনবিক্ষোভ নিয়ে দুটি হ্যাশট্যাগে #আমেরিকান স্প্রিং এবং #ইউএস রায়ট- কোটি কোটি মানুষ কথা বলছে, শেয়ার করছে।
গ্লোবাল টাইমস বলছে, আমেরিকার ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড‘ বা দ্বৈতনীতি মানুষের চোখের সামনে পরিষ্কার হয়ে গেছে। চীনা এই পত্রিকা বলছে, হংকংয়ে বিক্ষোভ সামলাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আমেরিকার ঘুম নেই, কিন্তু নিজের দেশের পুলিশ মানুষের ওপর নির্যাতন করছে।
শুধু মিডিয়া বা সোশ্যাল মিডিয়াই নয়, চীনা সরকারও কথা বলতে শুরু করেছে। সোমবার বেইজিংয়ে চীনা পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনও জীবন, তাদের মানবাধিকারের নিশ্চয়তা দিতে হবে। তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদ যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে একটি চলমান অসুখ।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মুসাভি সোমবার তার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, আমেরিকার সরকার এবং পুলিশকে বলছি- নিজেদের জনগণের ওপর অত্যাচার নির্যাতন বন্ধ করুন, তাদের শ্বাস নিতে দিন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে জারি করা কারফিউকে ইরানের একাধিক পত্রিকায় মার্শাল ল (সামরিক আইন) বলে বর্ণনা করা হয়েছে। ইরানের প্রধান একটি দৈনিক কিহানের শিরোনাম ছিল, ২৫টি আমেরিকান শহরে সামরিক আইন জারি।
ওয়াতান ই এমরুত নামে আরেক দৈনিকে লেখা হয়েছে, আমেরিকা এখন সামরিক বুটের নিচে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের ওয়াশিংটন সংবাদদাতা তার এক রিপোর্টে লিখেছেন, রোববার রাতে হোয়াইট হাউসের বাইরে বিক্ষোভ সমাবেশে মানুষের মুখে তিনি ‘আমেরিকান স্প্রিং‘ শব্দ শুনেছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন