প্রকাশ্যে সব নেতাই বলছেন ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন। কিন্তু তাতেও যেন আশ্বস্ত হতে পারছেন না আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। গত রবিবার তাই মধ্যরাত পর্যন্ত রুদ্ধদ্বার সভা করেছেন, যাতে সব নেতাকর্মী এক হয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীকে জয়ী করেন।
নগরীর জিইসি মোড়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের তারকা হোটেল পেনিনসুলা। সেখানেই ডাকা হয় চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির নেতাদের। আয়োজক ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন নিজেই। শুরুতে কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে কিছু ত্রুটির কথা তুলে ধরেন নগরীর নেতারা। কিন্তু সব ছাপিয়ে আলোচনার মূল বিষয়বস্তু দাঁড়ায় আওয়ামী লীগের অনৈক্য।
গত চার দশক ধরে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ প্রধান দুই ধারায় বিভক্ত। এক ধারার নেতা ছিলেন সাবেক মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, অন্য ধারার নেতা বর্তমান মেয়র ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। মহিউদ্দিন ধারার নেতৃত্বে এখন আছেন তার পুত্র, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। রবিবারের বৈঠকে এ দুই নেতাই উপস্থিত ছিলেন। এর বাইরে আরেকটি বিষয় নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন নেতারা। তা হচ্ছে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে অনীহা। গত ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে নগরীতে ভোটার সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৭১ হাজার। অথচ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের উভয় প্রার্থী মিলে ভোট পান মাত্র ৪০ হাজার। ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে যান সে জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যেতে স্থানীয় নেতাদের দায়িত্ব দেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, দলের ঐক্য নিয়ে সবাই কথা বলেছেন। আর ভোটাররা যাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে যান সেই চেষ্টাও করার জন্য সবাইকে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন আগামী নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পাননি। কিন্তু রেজাউল করিম চৌধুরীকে জিতিয়ে আনার জন্য সম্ভাব্য বিভিন্ন কৌশল নিয়ে তিনিই সবচেয়ে বেশি সরব ছিলেন।
জানা যায়, সভায় কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক ওয়াসেকা আয়েশা খান, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রমুখ। এর বাইরে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার কয়েকজন সংসদ সদস্যও উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন