বাংলাদেশের গণমাধ্যমে সবথেকে প্রভাবশালী সংবাদপত্রের নাম প্রথম আলো। ‘বদলে যাও, বদলে দাও’ স্লোগান দিয়ে এসে তারা সবকিছু বদলে দিতে চায় তাদের মতো করে। আর যেটি বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পথে একটা প্রধান বাধা বলে মনে করেন গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা।
প্রথম আলোর লক্ষ্য শুধুমাত্র বস্তুনিষ্ঠ এবং সত্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন নয়, বরং সংবাদকে তাদের মোড়কে পরিবেশন করে একটা জনমত সৃষ্টি করা এবং একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হাসিল করাই তাদের মূল লক্ষ্য। এই লক্ষ্য নিয়েই প্রথম আলো বাংলাদেশের গণমাধ্যমে একটি প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপকর্মে প্রথম আলো পরিবার যুক্ত হলেও তারা বারবার পার পেয়েছে কারণ তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি অনেক বেশি। শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকবার তারা নিজেদেরকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখতে পেরেছে।
এবারও প্রথম আলো আরেকটি বিপদে পড়েছে। প্রথম আলোর সহযোগী পত্রিকা ‘কিশোর আলো’র প্রকাশনা উৎসবে রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী আবরার মারা যান। অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, আয়োজক কর্তৃপক্ষ প্রথম আলোর দায়িত্ব এবং কর্তব্যে অবহেলার কারণেই আবরারের মৃত্যু ঘটে। এর প্রেক্ষিতে আজ আদালত প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান কি এবারও তাঁর প্রভাব বিস্তার করে আইনের ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাবেন? নাকি এবার প্রথম আলোর পাপস্থলনের একটা সুযোগ হবে? গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, প্রকাশের পর থেকেই প্রথম আলো বিভিন্ন রকম অসাংবাদিকতাসূলভ কার্যক্রমে নিজেদেরকে জড়িয়েছে। আর এসবের কিছু বিবরণ তুলে ধরা যায় তাহলে পরিষ্কার হবে যে, প্রথম আলোর উদ্দেশ্য আসলে সৎ-বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা নয়, বরং প্রথম আলোর নিজস্ব একটি দর্শন বা চিন্তা আছে, সেই চিন্তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই প্রথম আলোর প্রধান কাজ।
প্রথম আলোর প্রথম পাপ; বিরাজনীতিকরণ দর্শণ
এই বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়ার জন্য তারা রাজনীতিবিদদের চরিত্র হনন করে, রাজনীতিবিদদের সম্পর্কে কুৎসিত, নোংরা আপত্তিকর তথ্য উপস্থাপন করে। রাজনীতিবিদদের দুর্নীতিবাজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রথম আলোর চেষ্টার কোনো ক্রটি নেই। আর এটার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের সময়। সে সময় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান তার নিজের নামে দুই নেত্রীকে সরে যেতে হবে শিরোনামে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের সময় বিরাজনীতিকরণের যে তত্ত্ব সেই তত্ত্ব প্রথম আলো থেকেই এসেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
প্রথম আলোর দ্বিতীয় পাপ; ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত
কার্টুনের মাধ্যমে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে কটাক্ষ করেছিল প্রথম আলো। এজন্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা তাদের উপর ক্ষুদ্ধ হয়। প্রথম আলো ঘেরাওয়েরও কর্মসূচি দিয়েছিল। সে সময় মতিউর রহমান প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। আলেদ ওলামাদের কাছে পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়ে সেই যাত্রায় রক্ষা পান তিনি।
তৃতীয় পাপ; ব্যক্তিগত আক্রমণ ও কুৎসা রটনা
শুধুমাত্র রাজনীতিবিদ নয় সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার গুণীজনের চরিত্র হরণের জন্য প্রথম আলো আলোচিত। বিভিন্ন সময় যারাই তাদের বিপক্ষে বা ভিন্ন চিন্তার অনুসারী তাদেরকে আক্রমণ করা, তাদের বিরুদ্ধে সত্য মিথ্যাসহ বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ করে সমাজে তাদেরকে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা, এক ধরণের মিডিয়া ট্রায়েল প্রথম আলোর একটি অন্যতম লক্ষ্য।
চতুর্থ পাপ; বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা করা
বাংলাদেশ দুর্নীতির দেশ, বাংলাদেশে অনিয়ম হয়, বাংলাদেশে সুশাসন নেই ইত্যাদি প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রথম আলো সব সময় বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণা প্রচারের চেষ্টা করে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা প্রথম আলোর চোখে খুবই কমই ধরা পড়ে।
পঞ্চম পাপ; গণতন্ত্র বিরোধী শক্তিকে পৃষ্ঠপোষক
প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রথম আলো সব সময় গণতন্ত্র বিরোধী শক্তি বিশেষ করে একটি শ্রেণীর সুশীল সমাজের প্রতি পক্ষপাত দুষ্ট। ড. মুহাম্মদ ইউনূস, দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যসহ সুশীল সমাজের একটি গোষ্ঠী প্রথম আলো দ্বারা পৃষ্টপোষকতা পায়। যাদের প্রধান লক্ষ্যই হলো বাংলাদেশকে একটি অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করা।
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন