টানা তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনায় আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে এ দলটির তিনটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এসব সম্মেলনে কয়েকজন ছাড়া পুরনোরাই ঘুরেফিরে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। নব্বই এর গণআন্দোলন, ২০০১ পরবর্তী বিরোধী দল ও ২০০৭ এর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনের সাহসী ছাত্রনেতারা রয়ে গেছেন অনেকটাই আড়ালে। দলটির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনে কয়েকজন ছাত্রনেতার জায়গা হলেও বেশিরভাগই বঞ্চিত। পদ-পদবিহীন এসব নেতারা আশায় বুক বাঁধছেন আওয়ামী লীগের আসন্ন ২১তম সম্মেলন ঘিরে। সূত্র বলছে, এবার পরীক্ষিত ও স্বচ্ছ ইমেজের ১২ থেকে ১৫ জন নেতাকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দেওয়া হবে। এসব সাবেক ছাত্রনেতার বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা।
আওয়ামী লীগের সূত্রগুলোর মতে, আসন্ন কাউন্সিলে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে দলকে কারা নেতৃত্ব দেবেন সে বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হবে। এটি মাথায় রেখে নতুন কমিটিকে তারুণ্যনির্ভর করে সাজানো হবে।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৯০-এর গণআন্দোলনে সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন এমন কয়েকজন ছাত্রনেতা এখনো রাজনীতিতে বঞ্চিত। তাদের নানা কারণেই বিভিন্ন সংসদীয় আসনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব হয়নি। স্থান হয়নি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোতেও। এমন কয়েকজন নেতার একটি তালিকা করা হয়েছে। দলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ও ভূমিকা বিবেচনায় কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা দেওয়া হতে পারে।
এর বাইরে ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন সাবেক নেতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তার হয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সম্মেলন সামনে রেখে এমন কয়েকজন নেতার বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরেও অনেক ছাত্রনেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে তৃণমূলে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে এমন কয়েকজন সাহসী ছাত্রনেতাকেও কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা দেওয়া হতে পারে।
সম্ভাব্যদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আ খ ম জাহাঙ্গীর, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের নেতা, বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপকমিটির সদস্য শফী আহমেদ, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না, সাবেক সভাপতি বাহাদুর বেপারী, সাবেক ছাত্রনেতা মনিরুজ্জামান মনির ও ড. সেলিম মাহমুদ, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এপিএস সাইফুজ্জামান শিখর, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল হাসান জুয়েল, ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সোহেল রানা টিপু ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশাহ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআইর সদস্য মিলন পাঠান, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ, ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়দেব নন্দী ও সাবেক ছাত্রনেতা গাজী এমদাদ প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন