নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীরা দুই কূলই হারাতে চলেছেন। আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর বিএনপিতে তাদের জায়গা দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে দলটি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি-জামায়াতের অনেক নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তাদের অনেকই নানা অপরাধে জড়িত। রয়েছে নাশকতার মামলাও। এদের মধ্যে রয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুল মতিন প্রধান, নাসিক ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি রওশন আলি চেয়ারম্যান, ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবেক বিএনপি নেতা ইস্রাফিল প্রধান, নারায়ণগঞ্জ জেলা তরুণ দলের সাবেক আহ্বায়ক টিএইচ তোফা, ১ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, সাবেক বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দিন নাজু, হারুন আর রশিদ, আনিছুর রহমান, নাসিক ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক নেতা নজরুল ইসলাম, ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি রুস্তোম আলি, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতি দল নেতা সেলিম মজুমদার, নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক এসএম আসলামের ছোট ভাই স্বপন মন্ডল, সাবেক বিএনপি নেতা ইউনুস মিয়া, সাইলো এলাকার পাঁচতারা সংসদের সভাপতি সাবেক জামায়াত নেতা আলি আবকর খানসহ শতাধিক।
অভিযোগ রয়েছে, বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীরা মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ফুটপাত বাণিজ্য ও ভূমিদস্যুতাসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত। লোক দেখাতে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতেও তারা তৎপর।
দলীয় ব্যানারে অপকর্ম করে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করায় চক্রের তালিকা কেন্দ্রে জমা হয়েছে বলে জানায় আওয়ামী লীগের একটি সূত্র। তবে তালিকায় কাদের নাম রয়েছে তা সঠিকভাবে জানা যায়নি।
এ বিষয়ে সাবেক বিএনপি নেতা আব্দুল মতিন প্রধান বলেন, ব্যক্তিস্বার্থ ও সুবিধা আদায়ের জন্য নয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি। তা ছাড়া আমি বংশগতভাবেই আওয়ামী লীগের লোক। বিএনপি করার আগে আমি কৃষক লীগ নেতা ছিলাম।
টিএইচ তোফা জানান, ব্যক্তিগত কারণে বিএনপি ছেড়েছি। আওয়ামী লীগে যোগ দিইনি। তবে বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচিতে যাই।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান জানান, অন্য দল থেকে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীরা কোনো পদ পাবে না। গত ২০০৯ সালের পর যারা দলে ঢুকেছে তারা অনুপ্রবেশকারী। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত পেলেই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া বলেন, স্বার্থের জন্য তারা আওয়ামী লীগে এসেছে। এদের দ্বারা দলের কোনো উপকার হচ্ছে না। বরং তারা দলের ক্ষতি করছে।
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানকারীদের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, কিছু সুবিধাবাদী লোক আছে যারা যখন যে দল ক্ষমতায় আসে সে দলে প্রবেশ করে। সুকৌশলে এরা শক্তিশালী হয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করে বিভিন্নভাবে ফায়দা লুটে। যারা বিএনপি ছেড়েছে তারা দলে ফিরতে চাইলেও আর ঠাঁই দেওয়া হবে না। কারণ দল বদলকারীরা কখনো দলের আদর্শ হতে পারে না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন