৫ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য শ্বশুরবাড়ির স্বীকৃতি পাচ্ছেন না কমলগঞ্জের এক নববধূ। স্বামীর কথা মতো শ্বশুরবাড়ি এসে ঢুকতে চাইলে তার ওপর চালানো হয় নির্যাতন-নিপীড়ন।
জানা যায়, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর কেচুলুটি গ্রামের দরাছত মিয়ার বড়ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিকী (৪০)। তিনি একই ইউনিয়নের বড়চেগ গ্রামের আ. রউফের কন্যা শারমিন আক্তার রুজিকে (২৫) গত ৪ সেপ্টেম্বর বিয়ে করেন। কিন্তু তাকে শ্বশুরবাড়িতে না নিয়ে বাবার বাড়িতেই রেখে যান স্বামী। এরপর থেকে শারমিনের বাবার বাড়ি এসে রাত্রিযাপন করতেন আবু বক্কর। স্ত্রী শ্বশুরবাড়ি যেতে চাইলে বিভিন্ন কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যেতেন। কিন্তু বিয়ের দুইমাস না পেরোতেই যৌতুকের টাকার জন্য নববধূ শারমিন আক্তার রুজির কাছে যৌতুকের ৫ লাখ টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ দেয় দেবর মুন্না মিয়া ও তার পরিবার।
শারমিন আক্তার রুজি বাংলানিউজকে বলেন, স্বামীর কথা মতো শুক্রবার শ্বশুরবাড়িতে এসে উপস্থিত হলে আমাকে ঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমি আমার অধিকার চাওয়ায় অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয়েছে। আমার ওপর চালানো হয়েছে নির্যাতন। যদি যৌতুকের ৫ লাখ টাকা দিতে না পারি তাহলে আমাকে শ্বশুরবাড়ি থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিচ্ছেন দেবর ও শ্বাশুড়ি।
‘বিচার-সালিশের রায় আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের পক্ষে। আমার পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই। আমি আমার বিয়ের স্বীকৃতি চাই।’
শারমিনের অভিযোগ, শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে সে প্রথমবারের মতো শ্বশুরবাড়িতে উঠতে চাইলে তাকে ঘরের ভেতরে ঢুকতে না দিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। শারমিন নিরুপায় হয়ে শ্বশুরবাড়ির প্রবেশমুখে রাত পর্যন্ত বসেছিলেন। পরে ওই রাত থেকে স্বামীর বাড়ির পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আছেন তিনি।
শারমিন ও আবু বক্কর। ছবি: বাংলানিউজ
জানা যায়, বিয়ের আগ থেকে আবু বক্করের সঙ্গে শারমিনের প্রেম এবং শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে শারমিন আক্তার বিয়ের আগে গর্ভবতী হয়ে গেলে তাকে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানো হয়। সর্বশেষ ৪ সেপ্টেম্বর তারা বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের প্রায় ২ মাস পার হতে চললেও শ্বশুরবাড়ি যাওয়া হয়নি নববধূ শারমিন আক্তার রুজির। এর কারণ যৌতুকের ওই ৫ লাখ টাকা।
এ ব্যাপারে কথা বলতে শারমিনের স্বামী আবু বক্কর সিদ্দিকীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে সালিশের মাধ্যমে আমরা সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। উভয়পক্ষই নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল। আমরা বলেছি আইনগত ব্যবস্থা নিতে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশেকুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাটি আমার জানা ছিল না। আপনার কাছ থেকেই শুনলাম। আমি খোঁজখবর নিচ্ছি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন