সংবিধান পড়ে শোনালেন আমান, পুলিশ বলল ‘গো ব্যাক’
পুলিশি বাধার মুখে নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাড়িতে যেতে পারেননি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানসহ দলের কয়েকজন নেতা।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার মিনিটে পাবনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের লালন শাহ সেতুর ভেড়ামারা অংশের টোল প্লাজায় পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তারা। সেখানে পুলিশের সঙ্গে কথা বলার পর গাড়ি ঘুরিয়ে তাদের ফেরত পাঠানো হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরারের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামে যাওয়ার জন্য সকালে ঢাকা থেকে সড়কপথে রওনা দেন আমান উল্লাহ আমানসহ দলের কয়েকজন নেতা। আমানের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম। আবরারের পরিবারকে সমবেদনা ও কবর জিয়ারতের জন্য কুষ্টিয়া যাচ্ছিলেন তারা।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লালন শাহ সেতুর ভেড়ামারা অংশে বিএনপির প্রতিনিধি দল পৌঁছায়। সেখানে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভেড়ামারা সার্কেল) এস এম আল বেরুনী, ভেড়ামারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল আলীমসহ পুলিশ সদস্যরা তাদের গাড়ির গতিরোধ করেন। একই সঙ্গে সড়কে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে তাদের বাধা দেয় পুলিশ।
এ অবস্থায় গাড়ি থেকে অন্য নেতাদের সঙ্গে নেমে পড়েন আমান। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ কর্মকর্তার উদ্দেশে তিনি বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশে আবরাবের বাড়িতে যাওয়া হচ্ছে। আমরা তার মা-বাবার সঙ্গে কথা বলব। যেতে না দিয়ে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেবেন না। এ সময় সংবিধান বের করে কয়েকটি লাইন পড়ে শোনান আমান। কিন্তু কোনোভাবেই তাদের সামনে এগোতে দেয়নি পুলিশ।
সংবিধান পড়ে শোনানোর পর আমান উল্লাহর উদ্দেশ্যে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) এস এম আল বেরুনী বলেন, ‘সেফটি সিকিউরিটি পারপাসে আমরা আপনাকে অ্যালাও করছি না, সো গো ব্যাক।’
আমানের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী আহম্মেদ রুমী ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি সোহবার উদ্দিন প্রমুখ।
একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আমান বলেন, নিহত আবরার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে কুষ্টিয়া যাচ্ছিলাম। পুলিশি বাধার মাধ্যমে সরকার আমাদের গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার অধিকার কেড়ে নিলো। সংবিধানের ৩৯ ধারা লঙ্ঘন করে গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করেছে সরকার। আজকে যে অপমান করা হলো এর একদিন জবাব পাবে সরকার।
আমান উল্লাহ আমান আরও বলেন, গণতন্ত্রের জন্য আমাদের সংগ্রাম চলমান। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এ সংগ্রাম চলবে। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক সরকারের পতন হবে।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহম্মেদ রুমী বলেন, বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের পরিবারকে সমবেদনা ও কবর জিয়ারত করতে যেতে চেয়েছি আমরা। কিন্তু পুলিশ আমাদের যেতে দিলো না। অন্যায় এবং অগণতান্ত্রিকভাবে এ কাজটি করেছে পুলিশ।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) এস এম আল বেরুনী বলেন, বিএনপি নেতারা আবরারের বাড়িতে গেলে গন্ডগোল হওয়ার সম্ভাবনা ছিল, তাই তাদের যেতে দেয়া হয়নি। আমরা তাদের গাড়ি ফিরিয়ে দিয়েছি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন