বহুল প্রত্যাশিত বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গদের প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে আগামী ২২ আগস্ট। এইদিন অন্তত প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে প্রস্তুতি চলছে। তবে মিয়ানমারে ফিরতে রোহিঙ্গারা ৫টি শর্ত জুড়ে দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসব দাবি সম্বলিত পোস্টার ছেয়ে গেছে। ‘ভয়েস অফ রোহিঙ্গা’ নামের একটি সংগঠন পাঁচটি দাবির একটি তালিকা সম্বলিত লিফলেট গত দুদিন ধরে ক্যাম্পগুলোতে প্রচার করছে।
লিফলেটে যে পাঁচটি দাবির বাস্তবায়ন চায় রোহিঙ্গারা:
১. রোহিঙ্গারা আরাকানের স্থানীয় আদিবাসী এবং সে জন্য তাদের ন্যাটিভ স্ট্যাটাস বা স্থানীয় মর্যাদা সংসদে আইন করে পুনর্বহাল করতে হবে যার আন্তর্জাতিক গ্যারান্টি থাকতে হবে।
২. নাগরিকত্ব:
প্রথমত, আরাকান রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের 'সিটিজেন কার্ড' দিতে হবে।
দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরও সিটিজেনশিপ কার্ড দিয়ে প্রত্যাবাসন করে স্থানীয় নাগরিক মর্যাদা দিতে হবে।
তৃতীয়ত, একই সাথে বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় থাকা রোহিঙ্গাদের সিটিজেনশিপ কার্ড দিয়ে স্থানীয় নাগরিক মর্যাদা দিতে হবে।
৩. প্রত্যাবাসন
রোহিঙ্গাদের তাদের নিজস্ব গ্রামে ফিরিয়ে নিতে হবে এবং তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেয়া জমিজমা যথাযথ ক্ষতিপূরণসহ ফেরত দিতে হবে।
৪. নিরাপত্তা
আরাকানে রোহিঙ্গাদের জীবন ও সম্পদ রক্ষার জন্য রোহিঙ্গা পুলিশ বাহিনীর সাথে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
৫. জবাবদিহিতা
বার্মার স্থানীয় আদালতের পরিবর্তে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসির মতো কোনো ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনালে অপরাধীদের বিচার করতে হবে।
ভয়েস অফ রোহিঙ্গার নেতৃত্বাদানকারী শমসু আলম বলেন, অন্যান্য সংগঠনের সাথে আলোচনা করেই এসব দাবি চূড়ান্ত করা হয়েছে। আমরা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় সভা করেছি। রোহিঙ্গাদের নিয়ে বসেছি। মতামত নিয়েছি। সবাই এসব দাবি আদায়ে একমত হতে রাজি হয়েছে।’
এগুলো প্রত্যাবাসনের জন্য তাদের দাবি এবং ৭৫ ভাগ রোহিঙ্গাই এর সাথে একমত বলেও দাবি করেন শমসু আলম।
এদিকে মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রোহিঙ্গাদের মতামত গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম। দুপুর ১২টার দিকে প্রত্যাবাসনের তালিকায় থাকা রোহিঙ্গাদের মতামত যাচাইয়ের কাজ করছিলেন জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার কর্মীরা।
যে সকল রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় নিজদেশে ফিরে যেতে আগ্রহী কেবল তাদের প্রত্যাবাসন করা হবে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম।
তিনি বলেন, ‘ বাংলাদেশ যে ২২ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারকে দিয়েছিলো তা থেকে সাড়ে তিন হাজারের মতো রোহিঙ্গার নাম প্রত্যাবাসনের জন্য নির্বাচন করে বাংলাদেশকে দিয়েছে মিয়ানমার। তারাও প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গাকে আগস্ট ফেরত পাঠানোর বিষয়ে কাজ করছেন।’
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন