হংকংয়ে বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিলের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভের একজন কেন্দ্রীয় আন্দোলনকারী জশুয়া ওং। ২০১৪ সালে হংকংয়ে ব্যাপক বিক্ষোভের পর ওই ‘আন্দোলনের মুখ’ ওংয়ের বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
ওই অভিযোগে এক মাস আগে তাকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। সম্প্রতি বিক্ষোভের কারণে সাজার মেয়াদ এক মাস বাকি থাকতেই সোমবার তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
এদিকে ২২ বছর বয়সী শিক্ষার্থী হংকংয়ের এ তরুণ নেতাকে জেল থেকে মুক্তি দেয়ায় নতুনমাত্রা পেয়েছে চলমান আন্দোলনে। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সরাসরি নগর কার্যালয়ের সামনের বিক্ষোভে যোগ দেন ওং।
হংকং সরকার ‘প্রত্যর্পণ বিল’ স্থগিত করলেও দেশটির বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের নেতারা রোববার তাদের পরিকল্পিত সমাবেশ চালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে হংকংয়ের চীনপন্থী শাসক ক্যারি ল্যামের পদত্যাগ এবং বিলের কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বাতিলের দাবি তুলেছেন।
যদিও ল্যাম শনিবারই ওই বিল স্থগিত করেছেন এবং এটি বিতর্ক জন্ম দেয়ায় ক্ষমা চেয়েছেন। তবে বিক্ষোভ নিরসনে কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মিলে এ তরুণ নেতাও ক্যারি ল্যামের পদত্যাগের দাবি জানান। তিনি বলেন, ক্যারি ল্যামকে সরে যেতে হবে। হংকংয়ের নেতা হওয়ার উপযুক্ত নন তিনি।
তরুণ এ নেতা বলেন, আমব্রেলা মুভমেন্টের পর বলেছিলাম- আমরা আবারও রাস্তায় ফিরব। শেষ পর্যন্ত পাঁচ বছর পর আমরা ঠিকই এসেছি।
ওং আরও বলেন, এটি সৌভাগ্যের যে, বেইজিং আর ক্যারি ল্যাম একটি তরুণ প্রজন্মকে সাধারণ নাগরিক থেকে তাদের বিরোধী হিসেবে রূপান্তরিত করেছে। এর মূল্য বেইজিংকে পরিশোধ করতেই হবে।
২০১৪ সালের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলন যা আমব্রেলা মুভমেন্ট হিসেবে পরিচিত হয়, সেই আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছিলেন জশুয়া ওং।
ওই আন্দোলনে হংকংয়ের রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। সেই সময় সরাসরি ভোটে নেতা নির্বাচনের পথ বন্ধ করার জন্য হতে চলা আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিলেন তারা।
সেই আন্দোলনে দাবি ছিল, বেইজিংপন্থী নেতাদের তালিকা থেকে বেইজিং এ অনুমোদিত কোনো নেতার বদলে অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রার্থী ওং এবং অন্যান্য ছাত্র নেতা সেই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন।
তখন ৭৯ দিন ধরে হাজার হাজার মানুষ হংকংয়ের কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক সড়কে ক্যাম্প গেড়ে বসে এবং শহরটি স্থবির হয়ে পড়ে।
ছাত্র বিক্ষোভকারীরা, কতগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ব্যাপ্টিস্ট মন্ত্রীদের সঙ্গে পরে বেআইনি সমাবেশের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাগারে বন্দি হন।
বিক্ষোভে অংশ নেয়ার কারণে ওং-কে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে দুটো আলাদা কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। কিন্তু দণ্ডাদেশের মেয়াদ কমিয়ে দেয়ার পর সোমবার তিনি মুক্তি পান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন