ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড সুয়ারেজ অথরিটির (ওয়াসা) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন জুরাইন নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক মিজানুর রহমান।
তাকসিম এ খানকে শরবত খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবারের ঘটনাকে ষড়যন্ত্র ও সাজানো নাটক হিসেবে উল্লেখ করেন ওয়াসার এমডি।
এছাড়া এমডি বলেন, মিজানুরের মাথায় একটু গোলমাল আছে।
এমডির এমন মন্তব্যের পর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন মিজানুর রহমান।
বুধবার বিকালে যুগান্তরকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ওয়াসার এমডি সাহেবের সঙ্গে তো আমার কোনো ব্যাক্তিগত সমস্যা নাই। রোশারেশি নাই। এটা তো আমার ব্যাক্তিগত ব্যাপার না। তিনি বলেছেন, ঢাকায় ওয়াসার শতভাগ পানি সুপেয়। শুধুমাত্র আমি এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছি।
মাথায় গোলমালের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার মাথায় গোলমাল আছে কিনা বা আমি পাগল কিনা তিনি সেটা প্রমাণ করুক। আমার সঙ্গে তো তার ব্যাক্তিগত রেশারেশি নাই। আমি পাগল কি পাগল না এটা তো বড় বিষয় না। আমি তাকে চ্যালেঞ্জ করলাম সে প্রমাণ করে দেখাক আমি পাগল কিনা।
শরবত খাওয়ানো নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী ও সাজানো নাটকের বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করে মিজানুর বলেন, আমি তাকে চ্যালেঞ্জ দিলাম যদি এমডির সৎ সাহস থাকে তাহলে প্রমাণ করুক।
এর আগে এদিন সকালে ওয়াসার এমডি তাসকিন এ খান বলেন, ‘টিআইবির রিপোর্ট আমি প্রত্যাখ্যান করছি। এ নিয়ে কোনও কথা বলতে আমি রাজি নই।’
সেইসঙ্গে ওয়াসার পানি নিয়ে নগরবাসীর প্রতিবাদ কর্মসূচিকে ‘সাজানো নাটক’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তাসকিন এ খান বলেন, ‘আমরা আমাদের স্টাডি থেকে পেয়েছি যে, লিকেজ থেকে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়। এখন জানা দরকার, মিজানুরকে দিয়ে এই ষড়যন্ত্র করালো কে? বিষয়টি পুরোপুরি সাজানো নাটক।’
মিজানুরের দিকে পাল্টা অভিযোগ তুলে ওয়াসা এমডি বলেন, ‘এটা তার বাসার পানি না। তাকে কে বা কারা সহযোগিতা করছে, এটা জানা দরকার। কারণ, সরকাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে অনেকেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’
তিনি বলেন, ‘মিজানুরের ভাই বলেছে, তার ভাইয়ের মাথায় নাকি একটু গোলমাল আছে। এর বেশি কিছু আমি বলতে চাই না।’
সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বুধবার তার বাসায় গিয়ে ওয়াসার লোকেরা হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন মিজানুর রহমান।
তিনি যুগান্তরকে বলেন, দুপুর দুইটার দিকে কে বা কারা আমার স্ত্রীর বাসায় প্রবেশ করে কোনো অনুমতি ছাড়াই। পরে আমি তাদের সঙ্গে ফোনে কথাবার্তা বললে তারা আমার ওপর চড়াও হয়। এরপর আমি ফোন কেটে দিয়ে তাড়াতাড়ি বাসায় যায়।
মিজানুর রহমান বলেন, আমি বাসায় যাওয়ার পর তাদের জিজ্ঞেস করি তারা অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করেছে কিনা। তারা অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করেছে বললেও আমার স্ত্রী বলে তারা অনুমতি নেননি।
হুমকির বিষয়ে প্রশ্ন করলে মিজানুর বলেন, তারা আমাকে মামলা-হামলার হুমকি দিয়েছে। আমার সঙ্গে খারাপ আচারণ করেছে। তারা দেখে নেয়ারও হুমকি দিয়েছে।
হুমকিদাতারা কারা? এমন প্রশ্নের জবাবে মিজানুর বলেন, তারা সবাই ওয়াসার লোকজন। আমি তদের সবাইকে চিনি। তারাই এসে আমাকে হুমকি দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে ওয়াসা ভবনে ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড সুয়ারেজ অথরিটির (ওয়াসা) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে ‘শতভাগ বিশুদ্ধ’ পানি দিয়ে শরবত খাওয়াতে যান মিজানুর রহমান।
এমডিকে ওয়াসার পানির শরবত খাওয়াতে না পেরে হতাশ মিজানুর বলেন, এ পর্যন্ত ঢাকা ওয়াসার পানি খেয়ে যারা অসুস্থ হয়েছে বা মারা গেছে, তদন্ত করে ওয়াসাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এ পর্যন্ত ওয়াসা দূষিত পানি দিয়ে যে বিল নিয়েছে, তা গ্রাহকদের ফেরত দিতে হবে। এই ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত ওয়াসাকে আর এক পয়সাও বিল দেব না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন