বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে হলে কমপক্ষে খরচ হবে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৮০০ টাকার। এর বাইরে কোরবানির জন্য অতিরিক্ত খরচ হবে ১১ হাজার ৮১২ টাকা। কোনো এজেন্সি এর চেয়ে কম খরচে কাউকে হজে নিতে প্রতিশ্রুতি দিলে তিনি নির্ঘাত প্রতারিত হবেন।
দালাল ও মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রতারণা এড়াতে দালাল নয়, সরাসরি সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে টাকা দিতে অনুরোধ জানিয়েছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।
শনিবার ঢাকার এক রেস্তোরাঁয় বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য প্যাকেজ ঘোষণা অনুষ্ঠানে এ অনুরোধ জানান হাব মহাসচিব এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম।
এ সময় হাব সভাপতি আবদুস ছোবহান ভূঁইয়া, সিনিয়র সহসভাপতি ইয়াকুব শরাফতী, সহসভাপতি আব্দুস সালাম আরেফসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘কোরবানি ছাড়া সর্বনিম্ন প্যাকেজ মূল্য তিন লাখ ৪৫ হাজার ৮০০ টাকা। সর্বোচ্চ প্যাকেজের কোনো নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা নির্ধারণ করা হয়নি। সুযোগ-সুবিধামতো তিন থেকে চার ধরনের প্যাকেজ হতে পারে। এর চেয়ে কম মূল্যে কেউ হজযাত্রী পাঠাতে পারবে না। এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে প্যাকেজ-২ এ তিন লাখ ৪৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।’
খাতওয়ারি খরচ উল্লেখ করে শাহাদাত হোসাইন বলেন, ঘোষিত প্যাকেজে বিমান ভাড়া এক লাখ ২৮ হাজার টাকা, মক্কা ও মদিনায় বাড়ি ভাড়া এক লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা, সৌদি আরবের বিভিন্ন সার্ভিস চার্জ ও পরিবহন ভাড়া ৪০ হাজার ৮৮২ টাকা ৫০ পয়সা, জমজমের পানির জন্য ২৬০ টাকা, অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ ও ভ্যাট ৩৫ হাজার ৪৩৭ টাকা ৫০ পয়সা, স্থানীয় সার্ভিস চার্জ ৮০০ টাকা, হজযাত্রীদের কল্যাণ তহবিলের জন্য ২০০ টাকা, প্রশিক্ষণ ফি ৩০০ টাকা, চিকিৎসা কেন্দ্র ফি ১০০ টাকা, খাওয়া খরচ ৩০ হাজার, অন্যান্য খরচ ১ হাজার ২১৫ টাকা ও প্রাক-নিবন্ধন ফি ২ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে।
তসলিম বলেন, ‘বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক নিবন্ধনধারী হজ গমনেচ্ছুদের নিবন্ধন কাল (রোববার) থেকে শুরু হচ্ছে। নিবন্ধনের সময় প্রত্যেক হজ গমনেচ্ছুকে বিমানভাড়া বাবদ ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা এবং সৌদি আরবে প্রদেয় বিভিন্ন সার্ভিস চার্জ ও পরিবহন ফি ১৪ হাজার ৬৪৫ টাকাসহ সর্বনিম্ন মোট ১ লাখ ৪২ হাজার ৬৪৬ টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। তবে হজযাত্রীদের আগামী ২০ মার্চের মধ্যে প্যাকেজ মূল্যের সম্পূর্ণ টাকা অবশ্যই সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সিকে পরিশোধ করতে হবে।’
মধ্যস্বত্বভোগী দালালের কাছে নয়, সরাসরি এজেন্সির কাছে হজের টাকা জমা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে হাব মহাসচিব তসলিম বলেন, কোনো মধ্যস্বত্বভোগী যেন কম মূল্যে হজে পাঠানোর কথা বলে টাকা না নিতে পারে সে জন্য সংগঠনের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। এজেন্সির কারণে হজযাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন না। মধ্যস্বত্বভোগী দালাল ও ফড়িয়াদের কাছে টাকা জমা দিয়েই তারা বিপদ পড়েন। বাড়ির পাশের লোকটির কাছে টাকা জমা দিয়ে তারা মনে করেন নিরাপদে হজযাত্রা করতে পারবেন। কিন্তু বাস্তবে পড়েন বিপাকে। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হাবের সম্মিলিত উদ্যোগ সর্বোপরি হজ গমনেচ্ছুদের সচেতন হতে হবে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা যেভাবে হজযাত্রী পাঠাতে চাই, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এয়ারক্রাফটের সংখ্যা কম থাকায় সেভাবে পাঠাতে পারছি না। আমরা আশা করি বিমান ফ্লাইট শিডিউল নির্ধারণের ক্ষেত্রে হাবের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে।’
এ বছর নিবন্ধনের পর হজযাত্রীরা যে ভাউচার পাবেন তার নিচে নিয়মাবলিতে বাকি টাকা সরাসরি হজ এজেন্সির কাছে জমা দেয়ার কথা উল্লেখ থাকবে বলে জানান হাব মহাসচিব।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন