যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড.আলী রিয়াজ বলেন, কাশ্মীর পরিস্থিতিতে মুসলিম জনগোষ্ঠির ওপর নিপীড়ন ও নির্যাতন হচ্ছে। এ অবস্থায় বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর পাশে দাঁড়ানোর কথা কিন্তু বিভিন্ন বিবেচনায় তারা পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। বিবিসি বাংলা ৭:৩০।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কথা উল্লেখ করে ড.আলী রিয়াজ বলেন, তার আহ্বানেও আন্তর্জাতিক মহলে একটা সাড়া পড়ার মতো ঘটনা ঘটেছে বলে আমি মনে করি না।অতন্ত দুঃখজনক যে, তা এখনো হয়নি। বাস্তবতা হলো, ইমরান খান এখন পর্যন্ত বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ও প্রভাবশালী দেশগুলোর আকর্ষণ, মনোযোগ সক্রিয় করে তুলতে পারেননি।
কাশ্মীর প্রসঙ্গে নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠকের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে ড.আলী রিয়াজ বলেন, বৈঠকের গুরুত্ব বিবেচনা করলে দেখা যাবে ৫০ বছর পরে কাশ্মীর প্রসঙ্গ আন্তর্জাতিক ফোরামে আলোচনা হচ্ছে। সবশেষ হয়েছিলো তা ১৯৭১ সালে। তারপর কাশ্মীর প্রসঙ্গটি কোনো অবস্থাতেই আন্তর্জাতিক ফোরামে যায়নি। তার অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধান হবে। পাকিস্তান যদিও কখনো কখনো বলেছে, কাশ্মীর প্রসঙ্গটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। সে হিসেবে তারা মীমাংসা চায় কিন্তু তা হয়নি।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে কোনো অর্জনের লক্ষ্যণই দেখছি না। তার কারণ হলো, ভারতের পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছে, কাশ্মীর প্রসঙ্গটি শিমলা চুক্তিতে দ্বিপাক্ষিক বলে চিহ্নিত হয়েছে কিংবা ১৯৯৯ সালে লাহোর ঘোষণা নওয়াজ শরীফ বা অটল বিহারী বাজপেয়ী সম্বলিত সেখানেও প্রত্যক্ষ বা প্ররোক্ষভাবে বলা হয়েছে সেটা দ্বিপাক্ষিক।
তিনি আরো বলেন, নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। কারণ রাশিয়া ইতিমধ্যেই তাদের অবস্থান সুস্পষ্ট করেছে। যদি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কোনো রকম প্রস্তাব নিতে যায়, তাহলে হয় তো প্রয়োজনে রাশিয়ার সাথে যেতেও দিবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কি তা স্পষ্ট নয়। তাই আমি মনে করছি না হঠাৎ করে কোনো নাটকীয় প্রস্তাব পাস হবে।
পাকিস্তানের অবস্থানের কথা উল্লেখ করে ড.আলী রিয়াজ বলেন, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে তাদের অবস্থান তৈরির জন্য কাশ্মীরের ভেতরে যে সমস্ত প্রতিবেদন প্রচার করা হয়েছে, তাতে পরিস্থিতি ভয়াবহ। অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বিবেচনা করলে দেখা যাবে, মোদী সরকার যে ব্যবস্থা নিয়েছে তা ভারতের অখণ্ডের জন্য বিপদজনক এবং গণন্ত্রের জন্যও বিপদজনক কিন্তু এর আন্তর্জাতিকীকরণ করতে গেলে যে সমস্ত অনুক‚ল পরিস্থিতি থাকা দরকার সেগুলো নেই।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র কাশ্মীরে যে পরিস্থিতি আছে তা যদি ধর্মে বিবেচনায় মুসলিম জনগোষ্ঠীর অবস্থা বিবেচনা করেন তা তো নয়। এমনটি ইয়েমেনেও হচ্ছে, তাহলে সে ক্ষেত্রে মুসলিম দেশগুলো কি ভ‚মিকা নেবে? গ্লোবাল পলিটিক্সের ক্ষেত্রে সমীকরণটি যদি করা হয়, সে ক্ষেত্রে রাশিয়া সুস্পষ্টভাবে ভারতের পক্ষে দাঁড়াবে। চীন পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়াবে,তবে কতটা শক্তি নিয়ে দাঁড়াবে এবং এমনকি তারা যদি সম্পূর্ণ শক্তি নিয়েও দাঁড়ায় তাতেই কি পরিস্থিতি আসবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন