ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন নির্বাচনী হাওয়া বইছে। বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটস প্রতিনিধি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ দু’টি বিশ্ববিদ্যালয় এখন উৎসবমুখর। না, এ নির্বাচন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই সীমাবদ্ধ নয়। এ নির্বাচনের ভোটাররা সারা দেশে ছড়িয়ে আছে। রাজধানীর সচিবালয় থেকে শুরু করে জেলা, উপজেলা, সরকারি-বেসরকারি সব অফিসেই রয়েছে এ নির্বাচনের ছোঁয়া।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটস ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে চার হাজার। এসব ভোটার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। কেউ কেউ আবার ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতিসহ বিভিন্ন পেশায় কর্মরত। সিনেট নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তারা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। জেলা-উপজেলা বা বিভাগীয় শহরে আয়োজিত হচ্ছে পরিচিতি সভা।
সিনেট সংলাপ, বিতর্ক, বিভিন্ন ব্যাচের জমায়েত ও পুনর্মিলনী এবং সংবাদ সম্মেলনও হচ্ছে। ফলে এ নির্বাচন বেশ আলোচনারও সৃষ্টি করেছে। সিনেট নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীদের প্রচার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় ব্যাপক হচ্ছে। প্রার্থীরা বুকলেট, লিফলেট ও পরিচিতি কার্ড তৈরি করে এগুলো ভোটারদের বাসাবাড়িতেও পাঠিয়ে দিচ্ছেন। ফলে একটি নির্বাচনী আবহ তৈরি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় দীর্ঘ দিন ধরেই নির্বাচন না হওয়ার একটি সংস্কৃতি চলে আসছে। সে ক্ষেত্রে দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সিনেট নির্বাচন সেই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এই নির্বাচনের কারণে এখন অন্যান্য নির্বাচন অনুষ্ঠানেরও দাবি উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ ডাকসু নির্বাচন হয় না ২৭ বছর ধরে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ জাকসু নির্বাচন হয় না ২৫ বছর ধরে। শুধু ডাকসু বা জাকসু নির্বাচনই নয়, ১৯৯১ সালের পর ২৬ বছর ধরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয় না। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন ওই প্রতিষ্ঠানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ছাত্র সংসদকে কেন্দ্র করে শিক্ষাঙ্গন ও ক্যাম্পাস থাকে প্রাণবন্ত। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়গুলো ছাত্র সংসদের মাধ্যমেই কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়। এতে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক সবাই উপকৃত হয়। ছাত্র সংসদগুলোই আয়োজন করে থাকে বিতর্ক অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। কিন্তু দীর্ঘকাল ধরে বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলোয় এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ রয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমে এসব কর্মকাণ্ড আবার শুরু হোক, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক চরিত্র আবার ফিরে আসবে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাই মনে করেন।
দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট নির্বাচন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যখন আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ এক গভীর সঙ্কটে নিমজ্জিত এবং কষ্টার্জিত গণতন্ত্র ধ্বংসের সম্মুখীন। বিগত এক-এগারোর জরুরি সরকারের নীলনকশার নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই সরকারের ধারাবাহিক জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে সারা দেশে তৈরি হয় এক চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা প্রহসনের নির্বাচনে গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠানোর মাধ্যমে সৃষ্ট সঙ্কটে দেশ এখন প্রচণ্ড দুঃসময় পার করছে। বিনা ভোটের এই নির্বাচনে ক্ষমতা কব্জা করার পর দেশে চলছে স্বৈরতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী শাসন। জনগণের ভোটের অধিকার নেই। মৌলিক মানবাধিকার, বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত। কোথাও বিচার নেই। খুন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, জেল-জুলুম-নির্যাতনে কায়েম হয়েছে ত্রাসের রাজত্ব। এই রাজত্বে দুর্নীতিই সুনীতি। ব্যাংকিং সেক্টরকে পুরোপুরি পঙ্গু করে দেয়া হচ্ছে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, বিচার বিভাগসহ বিভিন্নপর্যায়ে দলীয়করণ পৌঁছেছে চরম অবস্থায়।
দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে যে সঙ্কট সরকার সৃষ্টি করেছে, সেই সঙ্কট নিরসনে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি জাতীয় নির্বাচনের বিকল্প নেই।
একটি সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই দেশকে সঙ্কটমুক্ত করতে পারে। এ ধরনের একটি নির্বাচনের লক্ষ্যে আলাপ-আলোচনা কিংবা সংলাপ অনুষ্ঠান জরুরি। কিন্তু সরকার এ দিকে ভ্রুক্ষেপই করছে না। তারা কর্তৃত্ববাদী শাসনকে অব্যাহত রাখার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট কিংবা যেকোনোপর্যায়ের নির্বাচনই হোক তা সরকারের এসব অগণতান্ত্রিক, কর্তৃত্ববাদী ও জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করার একটি সুযোগ সৃষ্টি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এ সরকারের শুরু থেকেই সারা দেশের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও চলছে চরম অনিয়ম, দুর্নীতি ও দলীয়করণ। ক্ষমতায় আসার সাথে সাথেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ দিনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। বিরোধী মতাদর্শের শিক্ষার্থীদের হল ও ক্যাম্পাস থেকে নির্দয়ভাবে বিতাড়িত করা হয়েছে। আবাসিক হলগুলোয় শিক্ষার্থীদের সহাবস্থান নেই। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক সংগঠনের একাধিপত্য ও প্রতিহিংসার কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে সাধারণ ও ভিন্নমতাবলম্বী সংগঠনের শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের নির্বিকার ও সঙ্কীর্ণ দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এ সমস্যার সুরাহা হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয় পরিচয়কে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এর ফলে ক্রমান্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মেধাশূন্য হয়ে পড়ছে। নির্বাচনী প্রচারপত্রে বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসন এবং ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশ সমুন্নত রাখার কথা বলা হলেও কার্যত ক্ষমতাসীনদের কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় স্বায়ত্তশাসন আজ ভূলুণ্ঠিত।
জাবি সিনেট নির্বাচন শনিবার
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটে ২৫ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন হতে যাচ্ছে ৩০ ডিসেম্বর শনিবার। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে তিনটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল ছাড়াও স্বতন্ত্রভাবে অনেকেই প্রার্থী হয়েছেন। পদের বিপরীতে প্রার্থী সংখ্যা প্রায় পাঁচ গুণ। অর্থাৎ মোট প্রার্র্থী সংখ্যা ১১৯ জন। প্রার্থীদের মধ্যে সরকারের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিবপর্যায়ের কর্মকর্তাসহ উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা, ব্যাংক কর্মকর্তা, সাংবাদিক, আইনজীবী, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন রয়েছেন। এরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন ও মাস্টার্স করেছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের এই নির্বাচন হচ্ছে ১৯ বছর পর। ১৯৯৮ সালে সর্বশেষ সিনেট নির্বাচন হয়। নির্বাচন না হওয়ায় এত দিন মেয়াদোত্তীর্ণ সিনেট কর্তৃক মনোনীত হয়ে ভাইস চ্যান্সেলর দায়িত্ব পালন করছেন। একক কর্তৃত্ব ও প্রভাব বলয়ে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে উন্নয়ন, শিক্ষা ও গবেষণার অগ্রাধিকার খাত ব্যাহত হচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আশা করছেন, নির্বাচিত সিনেট এলে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক অবস্থা আবার ফিরে আসবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল। সুষ্ঠু পরিবেশে জ্ঞানার্জন, মুক্তবুদ্ধি চর্চা, সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি খেলাধুলার ক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয় ছিল একটি আদর্শ বিদ্যাপীঠ। সবুজের সমারোহ এবং দৃষ্টিনন্দন লেক ও জলাশয় ঘিরে নির্মিত আবাসিক হলে ছাত্রছাত্রীদের স্বাধীন, সাবলীল ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে হল জীবন কাটানোর একটি সুন্দর পরিবেশ ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ জাকসু ও হল সংসদগুলোর মাধ্যমে সুস্থ ধারার ছাত্ররাজনীতি চর্চা, ছাত্রছাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা আদায় এবং নানা প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের অভিযোগ, ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব ঐতিহ্য প্রায় হারিয়ে গেছে। এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সুনাম ছিল, সেই ভাবমর্যাদা নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস, নেশার দৌরাত্ম্যসহ নানা ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ম্লান হচ্ছে।
সিনেট নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটরা বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে নেতিবাচক খবর আমাদের পীড়া দেয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গল চাই। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে দেখতে চাই একটি আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে। তারা মনে করেন, এ বিশ্ববিদ্যালয় যেন জ্ঞানার্জনে, গবেষণায়, মুক্তিবুদ্ধির চর্চায় একটি আদর্শ বিদ্যাপীঠে পরিণত হয় সেটাই কাম্য। আর এ জন্য তারা সিনেট নির্বাচন করছেন। সিনেটের মাধ্যমে যাতে সেই পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায়।
ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা, মুক্তবুদ্ধি চর্চার পাদপীঠ এবং গণতন্ত্রের সূতিকাগার হিসেবে এক সময় পরিচিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান অগণতান্ত্রিক ও একনায়কতান্ত্রিক পরিবেশ থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রয়োজন দলমত নির্বিশেষে সবার সম্মিলিত প্রয়াস। সিনেটের প্রার্থী ও প্যানেলের পক্ষ থেকে যেসব অঙ্গীকার এসেছে তা হলো : বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক ভাবমর্যাদা পুনরুদ্ধার, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর গবেষণার ক্ষেত্রে বর্তমানে যে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে তা দূর করা, গবেষণা খাতে ব্যয় বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা, শিক্ষক নিয়োগে মেধাকে প্রাধান্য দেয়া, সিনেটে শিক্ষক, রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটস প্রতিনিধিসহ সব ক্যাটাগরিতে নিয়মিত নির্বাচন অনুষ্ঠান, ক্যাম্পাসে সব ছাত্রছাত্রীর সহাবস্থান নিশ্চিত করা, সুস্থ ছাত্ররাজনীতি চর্চায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ জাকসু ও হল সংসদগুলোর নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন মাস্টার প্ল্যান বা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে যথাযথ কর্তৃপক্ষের বরাবরে চাপ সৃষ্টি করা এবং ছাত্রছাত্রীদের আবাসিক সমস্যা, চিকিৎসা সমস্যা এবং হলের বন্ধ হওয়া ডাইনিংয়ে উন্নতমানের খাবার চালুসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে সিনেটে ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট হওয়া। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং সব অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখারও অঙ্গীকার করেছেন প্রার্থীরা।
ঢাবি সিনেট নির্বাচন তিন দিনব্যাপী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটে ২৫ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন হবে তিন দিনব্যাপী। ঢাকার বাইরে ৬ জানুয়ারি শনিবার হবে ২৯টি কেন্দ্রে এবং ১৩ জানুয়ারি শনিবার হবে ১৩টি কেন্দ্রে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তিনটি কেন্দ্র টিএসসি, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র এবং বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ভবনে ভোট হবে ২০ জানুয়ারি শনিবার। ১৯৯৫, ১৯৯৯, ২০০৯ ও ২০১৩ সালের পর এবার পঞ্চমবারের মতো এ নির্বাচন হচ্ছে। এ নির্বাচনে দু’টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। একটি আওয়ামী সমর্থক গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদ এবং অন্যটি বিএনপি সমর্থক জাতীয়তাবাদী পরিষদ।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গ সিনেট গঠনের জন্য মহামান্য হাইকোর্টের একটি নির্দেশনা রয়েছে।
গত ১০ অক্টোবর হাইকোর্টের এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ সিনেট গঠন করতে হবে। সে অনুযায়ী আগামী ১০ এপ্রিলের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ সিনেট গঠন করার কথা। পূর্ণাঙ্গ সিনেট গঠনের অর্থ হচ্ছে ডাকসু নির্বাচনও করতে হবে। সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটস প্রতিনিধি এবং বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের প্রতিনিধি হিসেবে ডাকসুর প্রতিনিধিকে ধরা হয়। ডাকসু নির্বাচন হয় না ২৭ বছর ধরে। ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচিত ভিপি ছিলেন আমানুল্লাহ আমান এবং জিএস খায়রুল কবীর খোকন। ডাকসু না থাকার কারণে ছাত্রছাত্রীরা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাদের স্বার্থের কথা কেউ বলছে না। ইতোমধ্যে ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে বাম এবং সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেস ক্লাব
উৎসঃ নয়াদিগন্ত
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন