ফেসবুক কৌতুক
22 July 2017, Saturday
বাংলাদেশের তরুণেরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক ব্যবহার করে। সম্প্রতি প্রথম আলো পরিচালিত এক জরিপে এটা জানা গেছে। তথ্য হিসেবে এটা নতুন নয়। শুধু প্রথম আলো ফেসবুক পেজেরই লাইক প্রায় সোয়া কোটি। বাংলাদেশে তাহলে কত কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে? শুধু ঢাকা শহরেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে সোয়া দুই কোটি মানুষ।
ফেসবুক ব্যবহার করা ভালো না খারাপ? এই প্রশ্নের উত্তর দুই কোটি বছর আগে থেকেই প্রাণীদের জানা। যেকোনো জিনিস তুমি ভালো কাজে ব্যবহার করতে পারো, খারাপ কাজেও ব্যবহার করতে পারো। নির্ভর করছে তোমার ওপর। যেমন...কী ভাবছেন, ছুরির কথা বলব? না, ওটা বেশি পুরোনো। ধরা যাক, অক্সিজেন খুব ভালো। কিন্তু বাতাসে যদি ২০ শতাংশের বদলে ১০০ শতাংশ অক্সিজেন থাকে, আমরা মারা যাব। বা ধরুন, পানির অপর নাম জীবন। কিন্তু কাউকে যদি ২০ জগ পানি খাওয়ানো যায়, সে মারা যাবে।
ফেসবুক ভালো। এটা দিয়ে পুরোনো বন্ধুদের খুঁজে পাওয়া যায়, নতুন বন্ধুত্ব হয়; সত্য, সুন্দর, চমৎকার কথা, ছবি, ভিডিও প্রচার করা যায়; রক্তদানের নেটওয়ার্ক গড়া যায়, বন্যার্ত মানুষের সাহায্য করা যায়, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা যায়। ফেসবুক নিঃসঙ্গের সঙ্গী, বন্ধুহীনের বন্ধু, কর্মহীনের কাজ।
আবার ফেসবুক এই দেশে রামুতে সাম্প্রদায়িক হামলার কারণ হয়েছে, সিলেট অঞ্চলে অশান্তি ডেকে এনেছে। ফেসবুকের কারণে ঘর ভেঙেছে, সেলফি তুলতে গিয়ে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে, ট্রেনের জানালা দিয়ে মাথা বের করে লোক মারা গেছে।
রবীন্দ্রনাথ যেমনটা বলেন, কাজের কথা দিয়ে জীবন সুন্দর হয় না, বাজে কথা দিয়েই শিল্প ও সৌন্দর্য তৈরি হয়, তেমনি অপ্রয়োজনেই যদি কেউ একটা সুন্দর ছবি বা ফটো বা কথা প্রকাশ করে, সেটাও তো মূল্যবান। তবে তাই হোক। বাজে কথা হোক। হাসি-তামাশা হোক। কৌতুক বলি। ফেসবুক নিয়ে এই কৌতুকগুলো ইন্টারনেটে পেয়েছি।
১. আমি একটা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলব। এর নাম হবে ‘নোবডি’। কেউ যখন বিরক্তিকর কিছু পোস্ট করবে, আমি তাতে সবার আগে লাইক দেব। তখন তার দেয়ালে উঠবে, নোবডি লাইকস ইট।
২. প্রতিটা সফল ছাত্রের পেছনে আছে একটা ডি-অ্যাক্টিভেটেড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট।
৩. ফেসবুক একটা কারাগারের মতো। কারণ, তোমার একটা ফটো আইডি আছে, তুমি সারাক্ষণ লিখে থাকো দেয়ালে আর তোমাকে যারা পোক করে, তাদের কাউকেই তুমি চেনো না।
৪. গুগল+ হলো জিমের মতো। আমরা সবাই এতে যোগ দিয়েছি, কিন্তু কেউ এটা ব্যবহার করি না। (হা হা হা। এইটা পড়ে আমি তিন মিনিট হেসেছি। আজকের গদ্যকার্টুন আমি লিখছি জিম ফাঁকি দিয়ে। আর আমারও গুগল+ আছে, যাতে আমি বহুদিন ঢুকি না।)
৫. দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকেরা খুবই চিন্তিত। অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিকেরা আশান্বিত। কারণ, কাগজ উঠে যাবে। এক টিসু্য পেপার মিলের মালিক হঠাৎ চিৎকার করে উঠলেন, খোকা, তুমি মোবাইল ফোন নিয়ে বাথরুমে যাচ্ছ কেন?
৬. আচ্ছা, আপনি না হয় এখন অফিসে বসে এই লেখাটা পড়ছেন ফেসবুক পোস্ট থেকে। আপনার কি দুশ্চিন্তা হয় না, ফেসবুকের কর্মচারীরা অফিস টাইমে ফাঁকি দেওয়ার জন্য কী করবেন?
এবার কতগুলো সমস্যার সমাধান দিই।
সমস্যা: আমার ঘাড়ে ব্যথা করে।
ফেসবুক ডি-অ্যাক্টিভেট করুন।
সমস্যা: আমার মা ফেসবুক খুলেছেন।
তাঁকে ব্লক করুন।
সমস্যা: আমার বস ফেসবুক খুলেছেন।
তাঁকে লাইক দিতে থাকুন। ইন ফ্যাক্ট, লাভ দিতে থাকুন।
আজকের স্লোগান: ত্যাগের আনন্দ তুলনাহীন। ট্যাগ করার অভ্যাস ত্যাগ করুন।
পুনশ্চ: জাকারবার্গকে ধন্যবাদ। তিনি ফেসবুক আবিষ্কার করেছেন। তা না হলে আজকে ৬৬৭ জনকে ফোন করে জানাতে হতো যে আজকে আমি কচুর লতি দিয়ে চিংড়ি মাছ রেঁধেছি।
আমি এই লেখাটা লিখতে পারলাম, কারণ আমি আমার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডি-অ্যাক্টিভেটেড করে রেখেছি। তবে পেজ চালু আছে।
এবার একটা ধাঁধা। ঢাকা শহরের জনসংখ্যা দেড় কোটি। ফেসবুক ব্যবহারকারী কেন সোয়া দুই কোটি?
যাঁরা উত্তরটা পেরেছেন, তাঁরা এই লেখাটার নিচে লাইক দিন:)
উৎসঃ প্রথমআলো
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন