রম্য রচনা যম’তা পর্ব ৩

লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ২৫ মার্চ, ২০১৯, ০৬:১৩:৪১ সন্ধ্যা

গুরু শিবাজী সত্য রামের সাথে দেখা করার তিন দিন পর। ৭৫ বৎসরের সত্য রাম ঘটনার পরিক্রমায় মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ল। কিন্ত সে আর্চয্য হয়ে লক্ষ্য করল মন থেকে সকল প্রশান্তি দূর হয়ে গেলেও শারীরিক ভাবে সে অনেক অনেক সুস্থ বোধ করছে। সে একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করতে গল। ডাক্তার আবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতার খুব ভক্ত কিন্ত নাস্তিক। সত্য রাম বুঝে তার কাহিনী কাউকে বলে বিশ্বাস করানো হবে খুব কঠিন কাজ, তারপরও সে মানসিক অশান্তির হাত থেকে প্ররিত্রানের আশায় ডাক্তারকে তার জীবনে ঘটে যাওয়া সকল ঘটনা খুলে বলল। ডাক্তার প্রথমে বিষয়টীকে পাত্তা না দিয়ে মনে করল কোন মানসিক সমস্যা হবে হয়ত। তার পর মানসিক ডাক্তারের কাছে রেফার করার পূর্বে সাধারন রুটীন মাফিক লোকটির ব্লাড পেশার, হাডবিট ইত্যাদি পরিমাপতে করতে যেয়ে বিস্ময়ে হতবাগ হয়ে গেল। তার কারন হল লোকটির ব্লাড পেশার, হাডবিট কোন ভাবেই একজন মানুষের ব্লাড পেশার, হাডবিট সাথে মিলছে না। নাস্তিক ডাক্তারের মাথায় প্রথমেই যে ভাবনাটা আসল তা হল “ এ কোন ভাবেই মানুষ হতে পারে না, নিশ্চয় এলিয়ান”। সে সত্য রামকে বলল, আপনাকে কতকগুল টেস্ট লিখে দিচ্ছি। এই টেস্ট গুল করে আপনি আমার সাথে দেখা করেন। তারপর সে আরও বলল, গুরু শিবাজীর সাথে আবার দেখা হলে জিজ্ঞাসা করবেন কী করলে আমার নেত্রী মমতা ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে, এটা জানা আপনার মনের প্রশান্তির জন্য জরুরী! মমতার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সাথে তার চিকিৎশার কী সম্পর্ক তা নিয়ে ভাবতে ভাবতে বাড়ীর উদ্দেশ্য একটি ট্যাক্সি নিল সত্য রাম।

গভীর রাত্র। সত্য রাম গভীর ঘুমে অচেতন। হঠাৎ শব্দের জন্য তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখে তার গুরু শিবাজী। কিন্তু তীব্র আলোর জন্য তার দিকে তাকিয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছ। শীবাজী কোন কথা না বলে সত্য রামের হাতে চন্দন কাঠের একটি ছোট টুকরা দিয়ে বলল, বায়ুসেনা প্রধানকে ফোন করতে। সত্য রাম দেখল কাঠের খন্ডটীতে শূন্য এবং ১ হইতে ৯ পর্যন্ত সংখ্যা লেখা আছে। সে কোন ধরনের চিন্তা ভাবনা না করেই গুরুজীর কথা অনুসরণ করে বায়ুসেনা প্রধানকে ফোন করল। ফোন ধরল বায়ুসেনা প্রধানের সহকারী। সত্য রাম শীবাজীর নির্দেশ অনুসরণ করে, তাকে বলল, সে যেন বায়ুসেনা প্রধানকে বলে আজকের রাত্রের মিশনে তার বায়ু সেনারা যেন ভয় পেয়ে পিছু না হাটে, পিছু হাটলে বিপদ। ভয়হীন ভাবে এগিয়ে গেলে বিরাট সাফল্য। সে আরও যোগ করল তারা আক্রমণের জন্য যে লগ্ন ঠিক করেছে তা একেবারে সঠিক হয়েছে। তারপর ফোন কেটে গেল।

বায়ুসেনা প্রধানের সহকারী ফোন রেখে দিয়ে অতি দ্রুত ফোন কলের উৎসের সন্ধান নিতে যেয়ে বিস্ময়ে অবাক হয়ে গেল। অনুসন্ধানকারী সকল সোর্স থেকে তাকে জানানো হ’ল ঐ সময়ে তার ফোনে কেউ কল করেনি। তাদের কথায় সে বিরক্ত হয়ে তার ফোনের ইনকামিং কল লিস্ট চেক করতে যেয়ে পুরাপুরী বোকা বনে গেল। আক্রমণের পূর্ব মুহুত্রে এই ধরনের একটি অদ্ভুত ঘটনায় সে হতবুদ্ধি হয়ে পড়ল এবং বুঝল ঐ ঘটনা কাউকে বলে নিজেকে পাগল প্রমান করা ছাড় আর কিছুই হবে না। তাই সে বিষয়টি চেপে গল।

ভারতীয় বায়ু সেনারা অতিব সাহসের সাথে দেশের সীমানা অতিক্রম করে তাদের শত্রু দেশে ঢুকে পড়ল। মনে হচ্ছে কেউ যেন অদৃশ্য ভাবে তাদের সাহস যোগাচ্ছে। কিন্ত হঠাৎ তাদের একজন ভয় পেয়ে পিছু হাটা দিল। আর তখনেই শুরু হল বিপত্তি। বায়ু সেনাদের মনে হল তারা প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ ‘টার্গেট’ পেয়ে গেছে তাই তারা দেরী না করে লক্ষ্য বস্তুতে আঘাত হনল এবং কেন্দ্রকে জনাল তাদের সাফল্যের কথা। সারা দেশে খুশীর বন্য বয়ে গেল ৩০০ -৩৫০ সন্ত্রাসীকে হত্য করা হয়েছে এবং তাদের ট্রেনিং ক্যাম্প ধ্বংস করা হয়েছ। কিন্ত প্রকৃত ঘটনা হ’ল তাদের ভয় পেয়ে পিছূহাটতে দেখে যে অদৃশ শক্তি তাদের সাহায্য করছিল সে রেগে যেয়ে নীচের গাছকে তাদের চোখে সন্ত্রাসী হিসাবে তুলে ধরে ফলে তারা তাদের শত্রু উপর নয় বরং গাছকে বোমা মেরে উল্লাস প্রকাশ করছিল। তাদের ঐ হামলার ফলে যে অদৃশ শক্তি তাদের শক্তি যোগাচ্ছিল সেটাও মারা যায় এবং মাটিতে কাকের আকৃত ধারন করে পড়ে থাকে।

বিষয়: বিবিধ

৬৮৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File