মাদরাসা পড়ুয়াদের সম্পর্কে শাহবাগিদের মানসিকতা

লিখেছেন লিখেছেন আবদুহু ১৪ মে, ২০১৩, ০৪:৩৪:৪৫ বিকাল

মাদরাসায় যারা পড়ে, জীবনের শুরু থেকেই ওরা বুঝে যায় এই পড়ালেখা দিয়ে তার বাড়ি গাড়ি হবে না।

সবাইকে যখন 'বাহ তুমি অমুক স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ো' বলে বাবা-মা'রা বাহবা দেন, তখন ওরা চুপ করে সমাজের এই পিয়ার প্রেশারকে উপেক্ষা করতে শেখে।

সবাই যখন ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার কর্পোরেট হয়ে ভদ্রপল্লীর বিশিষ্টজন হয়, তখন তাদেরকে মাদরাসায় শিক্ষকতা ইমামতি মুয়াজ্জিনের চাকরী বা টুকিটাকি ব্যাবসা ইত্যাদি করে টিকে থাকার জন্য লড়তে হয়।

কিন্তু সবকিছুর পরেও তাদের একটা পার্থিব প্রাপ্তি আছে, যদি রিয়া/প্রদর্শনপ্রিয়তা সৃষ্টি না করে তবে সে প্রাপ্তিতে সমস্যাও নেই, বরং এটা আল্লাহর রহমত।

মাদরাসা পড়ুয়া আলেমদের জন্য মুসলিম সমাজে কিছুটা হলেও সম্মান আছে।

কত কিছুতেই না আমরা তাদের কাছে ছুটে যাই!

বাচ্চা হওয়ার পর আযান দিতে মাওলানা সাহেবকে দরকার হয়।

দরকার হয় আকীকার সময়, ছোটবেলায় কোরআন শেখানের জন্য। দেখি মাওলানা সাহেবকে ছাড়া বিয়ে করেন তো!

উনারে দরকার হয় প্রতিদিন নামায পড়াতে, জুমার খোতবা দিতে, রমযানে তারাবি পড়াতে।

শাহবাগিরা আলেম সমাজের দুর্বল স্থান, ঐ সম্মানের জায়গাটাতে আঘাত করতে উঠে পড়ে লেগেছে।

এ কয়দিনে দেখলাম চিহ্নিত শাহবাগিরা মাদরাসা পড়ুয়াদের যাকাতখোর, ফিতরা ও কোরবাণীর চামড়ার উপর নির্ভরশীল বলে হেয় করে হুলুস্থুল পৈশাচিক আনন্দ পাচ্ছে।

দ্বীনের খেদমত করতে গিয়ে আলেমদেরকে প্রকৃতিগতভাবে বিনয়ী হয়ে উঠতে হয়, সম্পদের অহংকার না করে বরং পরকালমুখী জীবনাচরণ শিখতে হয়।

একজন চিকিৎসক বা আইনজীবির কাছে পরামর্শ নিতে গেলে মোটা টাকা গুনতে হয়।

কোনদিন দেখলাম না একজন আলেমের কাছে যাকাত কত/ উত্তরাধিকার সম্পত্তি কি করা যায়/ বউ এর এই হইসে কি করুম এইসব ফতোয়া নিতে গিয়ে একটা টাকাও দিতে হয়।

আসল বিষয়টা হলো, যেই আওয়ামী-বাম প্রগতিশীল চক্র এই কাজ করছে, তাদের জীবনে আলেমদের প্রয়োজনীয়তা কম।

এদের কাছে ইবাদত হলো রবীন্দ্র সংগীত শোনা।

নামায পড়ার অর্থ হলো ঈদের জামাতে গিয়ে তাকবীরে হাত উঠাবে কি উঠাবে না তা নিয়ে বছরে এক দুইবার ধন্দে পড়া। ব্যাস।

বিয়ে? হাহাহাহাহাহাহা।

সুতরাং এই জানোয়ারগিরি করা এদের জন্য সহজ।

এরা নির্দ্বিধায় আলেমদের সম্মানে আঘাত করতে পারে।

কারণ সম্মান দেখানোর মানবিক যোগ্যতাটুকুও এদের নাই।

আজ এক বন্ধুর সাথে কথা বলছিলাম, একটা খাবারের ব্রান্ড হিসেবে পুরো দেশে একনামে পরিচিত কোম্পানি/গ্রুপ অভ কোম্পানিজের মালিকের ছেলে।

তার বাবা চার সন্তানের মাঝে সবার ছোটজনকে মাদরাসায় পড়িয়েছেন, ফি সাবিলিল্লাহ। একটু ধর্মভীরু ধনীদের মানসিকতা সাধারণত যেমন হয়। কিন্তু ঐ 'গোকূলে' সে 'প্রহ্লাদ' হয়ে বেড়ে উঠে পুরো পরিবারকে প্রায় বদলে ফেলেছে এখন!!

তারে জিজ্ঞাসা করলাম, এই 'যাকাতখোর' খোঁটা শুনতে কেমন লাগতেসে?

তার উত্তর ছিলো, "বাসার সবাই চায় আমার বাচ্চাটাকে বিদেশে পড়াই, অথবা অন্ততপক্ষে সিজিএস বা উইলিয়াম কেরী।

কিন্তু এইসব দেখে মনস্থির করে ফেলেছি, মাদরাসায় ভর্তি করিয়ে দিবো। তারপর বড় হয়ে সে তার নিজের ইচ্ছায় যা ভালো মনে করে পড়বে!"

যতোবার তুমি পশু হয়ে যাবে/ আমি হবো মানবিক।

বিষয়: রাজনীতি

১৪৩৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File