অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা - ১২

লিখেছেন লিখেছেন বুড়া মিয়া ১৫ অক্টোবর, ২০১৪, ০৭:৫৯:১৭ সকাল

পূজিবাদী বা ক্যাপিটালিষ্টদের চরিত্র এবং অন্যান্য অনেক বিষয় নিয়ে কার্ল মার্ক্স এর Das Kapital যুগান্তকারী এক লেখা। কিভাবে পূজিবাদীরা লাভ করে, তা নিয়ে উনি অনেক সুন্দর ব্যাখ্যা এবং কিছু অঙ্কও করে দেখিয়েছেন। তার করা একটা অঙ্ক নিয়ে একটু অন্যভাবে দেখবো যে, কিভাবে সারপ্লাস বা লাভ আসে পূজিবাদীদের। উনার লেখায় কটন-স্পিনিং এর ব্যাপারগুলো অনেকবার এসেছে যা আমাদের দেশের বর্তমানের টেক্সটাইল-গার্মেন্টস এর সাথে সুন্দরভাবে মেলানো যায়ঃ

ছলিম একজন কটন ইম্পোর্টার এবং তার মতো অনেক ছলিম রয়েছে দেশে, তাদের সবাই সুতা বানায়। ছলিম এর হাতে ৬০০ টাকা রয়েছে এবং এটাকে সে বাড়ানোর জন্য এ কাজে নিযুক্ত। এই কটন প্রসেস এর জন্য তার লাগে লেবার, কিছু মেশিনারী, ফ্যাক্টোরী-গোডাউন, পাওয়ার এবং ক্রেতা।

প্রথমেই সে ১০০ টাকা দিয়ে কিছু মেশিন ইম্পোর্ট করে নিলো, যেগুলোর হায়াত ৫ বছর, একই রকমের প্রোডাকশন করা যাবে এই ৫ বছর সময় এগুলো দিয়ে। তাই এসব মেশিনের অবচয় বা ডিপ্রিসিয়েশন প্রতি বছর ২০ টাকা করে হবে; এই যে মেশিন সে আনলো ১০০ টাকা দিয়ে এটাকে সে যদি সরাসরি বেচে দিতে যায়, তার মতো অন্য যারা রয়েছে তাদের কাছে বেচা ছাড়া অন্য কেউ এগুলো কিনবে না, তারা সর্বোচ্চ মূল্য কতো দিবে? নিশ্চিত ১০০ টাকা বা তার চাইতে কম, কেননা অন্যান্যরাও জানে এসব মেশিন কেনায় সর্বোচ্চ খরচ ১০০ টাকাই। তাই এই মেশিন ট্রেড করে ছলিমের কোন লাভ নেই।

ছলিম এর পর কটন ইম্পোর্ট করলো ৩৫০ টাকার, এটাও তার মতো অন্যান্যরা আমদানী করে, এটাও যদি সে বাজারে বেচতে যায়, তবে তার সমকক্ষদের কাছেই বেচতে হবে আর তারাও সর্বোচ্চ ৩৫০ টাকা দিতে রাজী থাকবে, এর বেশি কোনমতেই ছলিম আশা করতে পারে না তাই ছলিমের কটন ট্রেডেও কোন লাভ নেই।

এই মেশিন এবং কটন নিয়ে ছলিমের গোডাউনে রাখতে হবে এবং ফ্যাক্টোরী চালাতে হবে ভাড়া নিয়ে বা নিজে বানিয়ে, হিসাবের সুবিধার্থে ধরে নিলাম গোডাউন এবং ফ্যাক্টোরীতে ছলিমের ভাড়া লাগে ৩০ টাকা। এই গোডাউন এবং ফ্যাক্টোরী যদি ছলিম নিজে অন্যদের কাছে আবার ভাড়া দিতে যায়, সেখানেও কেউ ৩০ টাকার বেশি ভাড়া দিবে না কেননা, এসবের ভাড়া ৩০ টাকার বেশি হয় না বলেই সবাই জানে; তাই এই কাজ করেও ছলিমের লাভের কোন আশা নেই।

সে যদি কিছু লেবার নিযুক্ত করে এবং গ্যাস-ইলেকট্রিসিটি সংযোগ নেয়, তবে সে গ্যাস এবং ইলেকট্রিসিটির খরচ যাবে ২০ টাকা। ছলিমের নিজের গ্যাস এবং ইলেকট্রিসিটি বেচার কোন অধিকার নাই, তাই এখানেও ছলিমের কোন লাভ হবে না। আর লেবার নিযুক্ত করে এসব মেশিনে এবং মালামাল টানাটানি করে ছলিম যদি সুতা বানায় তবে সেটার বাজারমূল্য হয় ৫৫০ টাকা।

ছলিমের মোট খরচ হলোঃ

কটন ইম্পোর্ট ৩৫০/-

ফ্যাক্টোরী-গোডাউন রেন্ট ৩০/-

পাওয়ার ২০/-

মেশিন-ডেপ্রিসিয়েশন ২০/-

এই যে উপরে ৪২০/- টাকা খরচ করলো ছলিম, এ খরচ থেকে তার ১ পয়সাও লাভ করার চান্স নাই, তা উপরের আলোচনায় বুঝেছিলাম! কিন্তু লেবার কাজ করার ফলে তার ফিনিশড-গুডস বা সুতার দাম হলো ৫৫০ টাকা; এখানে ছলিম এবং লেবারদের সময়ের দাম কতো? অবশ্যই ৫৫০-৪২০=১৩০ টাকা। এখানে ছলিম কি করলো এবং লেবাররা কি করলো? ছলিমের কাছে ছিলো টাকা; এমপ্লয়ী নিযুক্ত করে, তাদের দিয়ে আনুষাঙ্গিক সমস্ত কাজ করিয়েছে এবং অন্যান্য দিনমজুরদের দিয়ে তুলা-সুতা টানাটানি করিয়েছে চীফ-সুপারভাইজার হিসেবে। ছলিম যদি সুপারভাইজার হিসেবে বসে থাকতো আর লেবাররা কেউ যদি কাজ না করতো, এতে কি ছলিমের কোন লাভ হতো? নিশ্চিত নাহ! মানে ছলিমের এই সুপারভাইজরীর কোন মূল্য কেউ দিতে রাজী থাকার কথা না, এটাই সোজা হিসাব।

তাহলে শুধু লেবারের-ই দাম হওয়ার কথা ঐ ১৩০ টাকা। এ থেকে যদি লেবাররা তাকে কিছু দান করে, তবে সে পেতে পারে অন্যথায় তো তার সুপারভাইজোরীর কোন দামই নেই জানলাম! আর যদি লেবাররা তাকে দান না করে তবে তার লাভ করতে হলে চুরি করবে কেননা, যারা তার সুতার ক্রেতা, তারা তাদের নিজের সময়ের দাম হিসেব করে বের করেছে এভাবেঃ তুলা দিয়ে নিজে সুতা বানিয়ে অন্য কোন কাজে ব্যবহার করতে গেলে, সে তুলা থেকে সুতা বানানোয় তাদের যে সময় যায় তার মূল্য তাদের কাছে ১৩০ টাকা। তাই তারা ৪২০ টাকা খরচের সাথে ১৩০ টাকা নিজের লেবার কষ্ট যোগ করে সুতার মূল্য দিতে রাজী হয়েছে ৫৫০ টাকা।

তাহলে দেখা যাচ্ছে ক্রেতাও কোন সমস্যা করেনি, সে যুক্তিসঙ্গত লেবার প্রাইস প্রদান করেছে। তো এখন যদি ছলিম লেবারদেরকে ৫০ টাকা বেতন মজুরী দেয় তবে দেখা যায়ঃ

সুতা বিক্রি ৫৫০/-

লেবার ছাড়া মোট খরচ ৪২০/-

বেতন মজুরী ৫০/ -

ছলিমের লাভ ৮০/-

এখানে দেখলাম সবাই ন্যায্যমূল্য পেলো শুধু লেবার ছাড়া, এটা একটা প্রসেস ক্যাপিটালিষ্টদের লাভ করার। অন্য আরেকটা প্রসেস হচ্ছে, লেবারদেরকে ঠকাবে না, কিন্তু কাষ্টোমারদের বাধ্য করবে ঠকতে। আর এই দু’টোর কম্বিনেশন করে নতুন সিষ্টেমও করা যায়।

এখানে মার্ক্স বলেছে দুইটা সুন্দর কন্সেপ্টঃ

১/ ন্যাসেসারী-টাইম

২/ সারপ্লাস-টাইম

ধরে নিতে হবে এই টোটাল প্রসেসটা চলেছে ১ বছর সময়কালে এবং এই ১ বছর সময়কালে অন্যান্য সব প্রাইসের মতো কাষ্টোমাররা লেবারের প্রাইসও দিয়েছে ১৩০ টাকা; প্রতিমাসে লেবারদের গড় দাম হয়েছে ১৩০/১২ = ১১ টাকা প্রায়, আর লেবাররা পেয়েছে ৫০ টাকা, মানে ৫ মাসেরও কম সময়ের দাম তারা পেলো। লেবারদের ঐ ইনকামের জন্য ন্যাসেসারী-টাইম দরকার ছিলো ৫ মাসেরও কম, আর সারপ্লাস-টাইমের পুরোটা চুষে খেলো ছলিম।

এটাই ক্যাপিটালিষ্ট প্রসেস অফ এ্যাকুমুলেশন! অন্যকে লস ধরিয়ে না দিতে পারলে কখনোই লাভ হয় না, তাই মার্ক্স বলেছে – সারপ্লাস বলে কিছু নেই কোন প্রসেসেই; সমস্যা ডিষ্ট্রিবিউশনে তাই সারপ্লাস আছে বলে মনে হয়; এখানে ছলিমের সারপ্লাস ৮০ টাকা, যা লেবারদেরকে ডিষ্ট্রিবিউট না করে, নিজে নিয়েছে। এটা যে কোন প্রোডাকশন প্রসেসে একইভাবে হিসাব করা যায়ঃ হোক সেটা মেকানিক্যাল বা ম্যানুয়াল প্রসেস!

কার্ল মার্ক্স হিসেবে ভুল করেছে? না-কি ক্যাপিটালিষ্টরা?

বিষয়: বিবিধ

১৬৯০ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

274579
১৫ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১১:৫৯
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক অনেক ধন্যবাদ বেশ ভালো লাগলো লিখাটি।
১৫ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০১:০১
218570
বুড়া মিয়া লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
274585
১৫ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ১২:১০
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

প্রোডাকশন চেইনে অর্গানাইজেশন/ম্যানেজমেন্ট এর লেবার ভ্যালু কই?? নাকি ওটা মূল্যহীন??
১৫ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০১:০২
218572
বুড়া মিয়া লিখেছেন : উপরের বেতন মজুরীর ৫০ টাকার মধ্যে, ম্যানেজমেন্ট এর (কোট-টাই ওয়ালাদের) পাওনাকে বেতন বলা হয়, গরুখাটা লেবারদের পাওনা কে মজুরী বলা হয়, আর ক্যাপিটালিষ্ট ছলিমের অংশকে লাভ বলা হয়!

ছলিমদের নিজের পরিশ্রমে খাওয়ার ইচ্ছা কখনো হয় না, অন্যজনেরটা মেরে খাওয়ার চান্স পেলেই কেবল দলবল নিয়ে এতো বড় ম্যানেজমেন্ট চালায় ক্যাপিটালিষ্ট ছলিমরা, আর যদি দেখে না এরকম কোন চান্স নেই, কখোনোই তারা ওসব ঝামেলার চিন্তায়ও যায় না, সুদ খাবে বসে বসে এফ.ডি.আর করে! যখনই এরকমভাবে মেরে খাওয়ার চান্স পেয়ে যায়, লেবারদের মারার জন্য এরকম দলবল (ম্যানেজমেন্ট) চালিয়ে তখন বলেঃ দেখো আমি কতো পরিশ্রম করতেছি, দেশ-জাতিকে বৃহঃস্পতি গ্রহে নিয়ে যাচ্ছি আমি .... আমি উদ্যোক্তা দেশ ও জাতির! (এইটা নিয়ে পরের পোষ্টে লিখবো আরেকটু)

পরিশ্রম করে শুধুই লেবার (সুতা বানানোয় ওরা ছাড়া আর কেউ কখনো খাটে না) আর লেবারদের আরও বেশী শ্রম নেয়ার জন্য (আরোও বেশি প্রোডাকশন করানোর জন্য) কোট-টাই ওয়ালা ম্যানেজমেন্টরা একেকজন কর্ণেল, ব্রিগেডিয়ার, লেফটেন্যান্ট ষ্টাইলের অফিসার (সুবিধাও একটু বেশী দেয়া হয় তাদের, কারণ তারা আরও বেশী শ্রমিক-চোষার রাস্তা করে দেয়ার জন্য নিযুক্ত) – সবাই মিলে শুধু লেবারের শ্রম চুষে খাওয়ার জন্য ক্যাপিটালিষ্ট ম্যানেজমেন্ট।

এবার আবু-সাইফ ভাই যুক্তি দেন, কেনো এতো ঝামেলা করে ওরা লেবার খাটায়, নিজেরা না খেটে? লেবারদের মাইর-পিট, ধমক-ধামক দিয়ে খাটানোর জন্য ছুটাছুটির নাম পরিশ্রম? না-কি এটা লেবারদের প্রতি অবিচার করার পরিশ্রম?

ছলিমের এতো পরিশ্রম করে খাওয়ার শখ হলে একলা কাজ করে খায় না কেনো? পুরো চেইনকে বসিয়ে রেখে ছলিম একা যদি কাজ করতে থাকে, কতোটুকু প্রোডাকশন হবে সুতার? ছলিম সহ মোট লেবার ১০ জন হলে এবং সবাই একই সমান প্রোডাকশন দিলে, ছলিম একা প্রোডাকশন দিতে সক্ষম হবে ১৩০/১০=১৩ টাকার লেবার। আর ম্যানেজমেন্ট এর কোট-টাই ওয়ালারা খালি লেবারদেরকে খাটায় কেনো নিজেরা না খেটে? ভালো মতো চিন্তা করে দেখেন – ক্যাপিটালিষ্টরা আসলেই বদ!

আমি এই বইটা পড়েছি অনেক আগে, এ নিয়ে নিজে নিজে অনেক দিক দিয়ে চিন্তাও করেছি অনেকদিনঃ আমি যা বুঝেছি, মার্ক্স এই গাণিতিক এবং মনোস্তাত্ত্বিক হিসেবে একটুও ভুল করে নাই!
১৫ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১২
218675
আবু সাইফ লিখেছেন : ডিভিশন অব লেবার
(Visible/Invisible Ratio)
এবং
ফাংশন অব ম্যানেজমেন্ট এ্যাজ লিভার (lever)
এ দুটোকে একসাথে ভাবুন



যখন কোন ধারণা-চিন্তা অপর কোন ছকে আবদ্ধ হয়ে যায় তখন প্রকৃত বিষয় আড়াল হয়ে যায়!

একটি তাফসীরের ভূমিকায় কথাটি এভাবে বলা হয়েছে-

কোন ব্যক্তি কুরআনের ওপর ঈমান রাখুন আর নাই রাখুন তিনি যদি এই কিতাবকে বুঝতে চান তাহলে সর্বপ্রথম তাঁকে নিজের মন-মস্তিস্ককে পূর্ব-প্রতিষ্ঠিত চিন্তাধারা ও মতবাদ এবং অনুকুল–প্রতিকুল উদ্দেশ্য ও স্বার্থচিন্তা থেকে যথাসন্ভব মুক্ত করতে হবে। এ কিতাবটি বুঝার ও হৃদয়ংগম করার নির্ভেজাল ও আন্তরিক উদ্দেশ্য নিয়ে এর অধ্যয়ন শুরু করতে হবে।

যারা মনের মধ্যে বিশেষ ধরনের চিন্তাধারা পুষে রেখে এ কিতাবটি পড়েন তারা এর বিভিন্ন ছত্রের মাঝখানে নিজেদের চিন্তাধারাই পড়ে যেতে থাকেন। আসল কুরআনের সামান্য বাতাসটুকুও তাদের গায়ে লাগে না।

দুনিয়ার যে কোন বই পড়ার ব্যাপারেও এ ধরনের অধ্যয়ন রীতি ঠিক নয়।

আর কুরআন তো এই ধরনের পাঠকের জন্য তার অন্তর্নিহিত সত্য ও গভীর তাঊপর্যময় অর্থের দুয়ার কখনোই উন্মুক্ত করে না।



মার্ক্স এই গাণিতিক এবং মনোস্তাত্ত্বিক হিসেবে একটুও ভুল করে নাই!
কারণ ভিত্তিটাই ভুলের উপর!!
ফলে অনেক ভালোও ঐ ভুলের গর্তে হারিয়ে গেছে!
১৫ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৬
218690
বুড়া মিয়া লিখেছেন : নাহ খালি পড়লে হবে না আবু সাইফ ভাই, বাস্তবতার সাথে মিলিয়েও দেখতে হবে! আমি অনেকের চাইতে কম হলেও – তিনটা জিনিস দেখেছিঃ ক্যাপিটালিষ্টদের এসব পড়াতো আমি আগেই পড়েছি, পড়ার পর তাদের সাথে কাজও করেছি, এরপর ঐটা দেশ জাতির উন্নতি করে জেনে বুঝে পরে এদেরটা পড়তে বসেছিলাম; এরপর অনেকদিন ভেবে চিনতে দেখলা্তেপুরা ব্যাপার এবং তত্ত্ব; এখন বাস্তবতা এবং দুই দিকের যুক্তি একসাথে দিয়েই সবকিছু বলছি আমার লেখাগুলোয়, আমি কিন্তু কোথাও অযৌক্তিকভাবে একদিকে কারও পক্ষে নাই!

এই পোষ্টে আরও কিছু বাস্তবতা, বাস্তব তত্ত্ব এবং আমার জানার আলোকে ব্যাখ্যা করেছি।
274595
১৫ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ১২:৩৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : লোভ বা গ্রিড ই ক্যাপিটালিজম এর মুল কথা। কিন্তু কার্ল মার্কস এর একটু ভুল ছিল যে তিনি সুপাভাইজারি কে উৎপাদন এর সংশ্লিষ্ট মনে করেননি। কিন্তু সেটাও উৎপাদনের অংশ। শ্রমিকদের উৎপাদিত দ্রব্যের কাঁচামাল সরবরাহ ও বাজারজাতকরন ও উৎপাদনেরই অংশ। পুঁজিদাতারও একটি প্রাপ্য থাকে। পুঁজি+শ্রম মিলেই উৎপাদন। শুধু পুঁজি বা শুধু শ্রম এর উৎপদন সম্ভব নয়।
১৫ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০১:০৮
218576
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ৪২০ টাকার হিসেবে বোঝা গেছে যে, পুজি দিয়ে কোন লাভ আসে নাই! যখনই এতে ডাইরেক্ট-লেবার (ম্যানেজমেন্ট না) যোগ হয়েছে তখনই শুধু ১৩০ টাকার শ্রমমূল্য যোগ হয়ে ৫৫০ টাকা হয়েছে, শুধু পুজি দিয়ে ১৩০ কেনো ১ পয়সাও আসে নাই।

যারা এর ক্রেতা তারাও শুধু শ্রমের দাম-ই দিয়েছে, পুজি তাদেরও ছিলো নিজেদের করার (কেনার ক্ষেত্রে আউটসোর্সিং বা মেইক অর বাই দিয়ে তারা ডিসিশন নেয় নিজেরা বানাবে না-কি কিনবে), তারা করে নাই এ কাজ, তারা শুধু কিনেছে শ্রমের ফল সুতা!

উপরে আবু সাইফ ভাইয়ের মন্তব্যের জবাবে আরেকটু ব্যাখ্যা করেছি, পরের পোষ্টে ক্যাপিটালিষ্টদের চরিত্রের আরও কিছু দিক বলবো, আরও পরিস্কার হবে যে এখানে তাদের কোন অবদান নাই ভ্যালু-এ্যাডিশনে।
১৫ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২০
218677
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

শুধু শ্রম কোন পণ্যই নয়- ওটা কোন পণ্যে উপযোগ সৃষ্টি করে মূল্যমান অর্জন করে!

আবার পূঁজিরও একই দশা- পণ্যে রূপান্তরিত হয়ে উপযোগ ধারণ করে মূল্যযোগ হয়! পরে পূণঃরূপান্তরিত হয়ে তবেই পূঁজি বৃদ্ধি পায়!

সূদের ক্ষেত্রে এমন রূপান্তর ছাড়াই পূঁজির বৃদ্ধি ঘটে বলে ইসলামে তা নিষিদ্ধ বলা হয়েছে!

[এখানে ইসলামের কথা আনতে চাচ্ছিলামনা!]

পূর্ব-প্রতিষ্ঠিত চিন্তাধারা কিভাবে সঠিক চিন্তাকে বাধাগ্রস্থ করে তা উপরে বলা হয়েছে!
১৫ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৮
218691
বুড়া মিয়া লিখেছেন : বর্তমান ব্যবসায়ীদের লাভ হচ্ছে, পণ্যের মোড়কে সুদের চাইতেও বেশী কিছু, সেটা
এই পোষ্টে তারা যেভাবে লাভ হিসাব করে, সেটাও ব্যাখ্যা করেছি।
১৫ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৮:৩৭
218706
বুড়া মিয়া লিখেছেন : আরেকটা বিষয় আবু সাইফ ভাই, ম্যানেজমেন্টের সব ক্লাসের লেবাররা তাদের শ্রম পণ্য হিসেবে বিক্রি করে ছলিমদের কাছ থেকে বেতন পায়! এছাড়া আরও অনেক উদাহরণ আছে যেমনঃ আমি নাপিতের ওইখানে মাথা টিপাই চুল কাটানোর পরে, ও শুধু শ্রমই দেয় মাথা টেপার জন্য, এজন্য ৫০/১০০ টাকা ওকে দেই; এরকমভাবে সুতা বানানোর যে লেবার, ওরা ওদের শ্রমকে পণ্য হিসেবে বেচে ছলিমের কাছে, আর লেবার-নামক পণ্য কে ব্যবহার করে ফিনিশড-গুডস সুতা বানিয়ে বেচে ছলিম। এখানে এই লেবারদের শ্রমের (পণ্যের) মূল্য সুতার ক্রেতা যা দিচ্ছে (আউটসোর্সিং ডিসিশনের মাধ্যমে) ছলিম তা লেবারদের না দিয়ে লাভ হিসেবে নিজে রেখে দিচ্ছে!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File