প্রথম জুম্মাহ

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১১:২১:২০ রাত

ইসলামের প্রথম জুম্মা

----------------------

নব্যুয়তের প্রথম বছর তিনেক বা দুই বছরের বেশী সময় পর্যন্ত রসূল(সাঃ) গোপনে দাওয়াহ করছিলেন বা নিজের লোকদেরকে দাওয়াহ করছিলেন। পরবর্তীতে মুসলিমরা অত্যাচারিত হতে থাকলে আবিসিনিয়ায় হিজরতের নির্দে দেন। আরও পরে হযরত মুসয়াব বিন উমায়েরকে মদীনাতে পাঠান ইসলাম শেখানোর জন্যে। ততদিনে আল্লাহর রসূল(সাঃ) এবং সাহাবীদের উপর অত্যাচারের স্টিম রুলার ভালো করেই চলেছে। চাচা আবু তালীব এবং উম্মুল মোমেনীন খাদীজা(রাঃ) এর মৃত্যুর পর রসূল(সাঃ) তার আশ্রয় হারান। স্রেফ বংশের দাপটে ও কূল রাখতে চাচা আবু লাহাব তার নিরাপত্তা দিবেন বলে ঘোষণা করে কিন্তু তার(সাঃ) কর্মকান্ডে এবং আবু জেহেলের কারনে সে নিরাপত্তা তুলে নেন। এরপর তায়েফে গিয়ে রসূল(সাঃ) ও পালক পুত্র জায়েদ(রাঃ) চরম রক্তাক্ত হন।

এরপর আল্লাহ তার প্রিয় রসূলকে(সাঃ) একটি সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার দেন, সেটা হল মিরাজ। তিনি(সাঃ) অলৌকিকভাবে আসমান ভ্রমন করেন এবং আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ হয়। আল্লাহর নূর তিনি দেখেন নিকট থেকে। অনেক কথোপকখন হয় আল্লাহর সাথে এবং কিছু সংখ্যক নবী-রসূলদের সাথে। তিনি আমাদের জন্যে উপহার হিসেবে নিয়ে আসেন ৫ ওয়াক্ত সালাত।

তায়েফে নির্যাতিত ও অপমানিত হওয়ার পর হজ্জের মৌসুমে আল আকাবা নামক স্থানে মদীনার খাজরাজ গোত্রের ৬ জন প্রভাবশালী লোক ইসলাম গ্রহন করে। এরা সকলে মুসয়াব বিন উমায়েরের হাতে ইসলাম গ্রহন করেছিলেন। এখানে দলনেতা ছিলেন আসাদ ইবনে জুরারাহ। তিনি খাজরাতের একটি শাখা গোত্র বনী উসাইরিনের সবচেয়ে প্রভাবশালীদের অন্যতম। মুসয়াব বিন উমায়ের তার দাওয়াহর কাজে আল্লাহর ইচ্ছায় খুব সফল হন। খুব দ্রুত মদীনার মানুষ ইসলাম গ্রহন করতে থাকে। এরপর আল আকাবায় মদীনার ১২ জন লোক রাতের অন্ধকারে আল্লাহর রসূলের কাছে শপথ নেন। এই ১২ জনের ভেতর ১২ জন ছিলো খাজরাজ, দুজন ছিলো আউশ গোত্রের। আউশ ও খাজরাজই ছিলো মদীনার প্রধান দুই গোত্র। তবে সেখানে ইহুদীরাও বসবাস করত এবং তারা যথেষ্ট প্রভাবশালী,অর্থবিত্তের মালিক ছিলো।

সম্ভবত আল্লাহর রসূলের(সাঃ) নব্যুয়তের ১১ তম বছরে অথবা ১২ তম বছরের শুরুতে যখন মদীনার মুসলিমের সংখ্যা বেশ কিছু সংখ্যক হল, তখন মুসয়াব বিন উমায়েরকে(রাঃ) রসূল(সাঃ) জুম্মাহ নামাজের অনুমতি দিলেন এবং তাকে তা শিক্ষাও দিয়েছিলেন। সে সময়ে মদীনার মুসলিমের সংখ্যা ছিলো ৪০জন। এদেরকে নিয়ে প্রথম জুম্মাহ সালাত আদায় করেন মুসয়াব বিন উমায়ের(রাঃ)। এখান থেকে ফিকি মাসয়ালাহতে কিছু মত পার্থক্য হয়েছে। কিছু মুস্তাহিদ বলেছেন জুম্মাহ সালাত আদায় করতে হলে কমপক্ষে মুসল্লী লাগবে ৪০ জন। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল এটা মনে করতেন। তবে অন্যরা বলেছেন এই সংখ্যা কোনো শর্ত নয়, কারন রসূল(সাঃ) সে সময় এই সংখ্যা নির্ধারন করেননি। বরং ওই পরিমান সংখ্যা এমনেই তখন বর্তমান ছিলো। সংখ্যার কোনো শর্ত আরোপিত হয়নি। মক্কাতে অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকার কারনে রসূল(সাঃ) সেখানে জুম্মাহ আদায় করতে পারেননি। মদীনাতে ওই স্বাধীনতা থাকার কারনে তা সম্ভব হয়। আর হযরত মুসয়াব বিন উমায়েরের হাতে খাজরাতের প্রধান নেতা সাদ ইবনে মুয়াজ এবং আরেক নেতা ইসলা গ্রহনের ফলে এই পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সাদ ইবনে মুয়াজ ছিলেন বানু উসাইরিনের প্রধান। আল্লাহ তাদের উপর রাজি খুশী হোউন !

বিষয়: বিবিধ

৫৩৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File