জাতীয়তাবাদ নিপাত যাক !

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২৫ জুন, ২০১৯, ১২:২০:৩৯ দুপুর



------------------------------

দুনিয়ার পরাশক্তিগুলো বহু পূর্ব থেকেই নিজ ও অপর জনগণকে নানাভাবে নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করত,যাতে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যসমূহ নির্বিঘ্নে অর্জিত হতে পারে। মানুষের মস্তিষ্কের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হলে কেবল আদেশ করলেই কাঙ্খিত স্বপ্ন পূরণ হওয়া সম্ভব। এ লক্ষ্যে দুনিয়াতে যত উপায় উপকরণ তারা অবিষ্কার করেছিলো, তার ভেতর আন্তর্জাতিক খেলাধুলার আসর অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। এতে নফসকে বিশেষভাবে উস্কে দিয়ে দারুনভাবে ফায়দা লোটা যায়। ব্যক্তি নিজেই নিজের কাছে পরাস্ত হয়ে পড়ে, ফলে শত্রুকে তেমন শক্তি ক্ষয় করতে হয়না। খ্রিষ্টপূর্বাব্দের গ্লাডিয়েটর,ষাড়ের লড়াই,অলিম্পিক অথবা আধুনিক ক্রিকেট,ফুটবল সবই একইসূত্রে গাঁথা।

খেলার উম্মাদনাকে কাজে লাগিয়ে শাসকগণ বরাবরই বিশাল সুবিধা গ্রহন করতে পারে। একটি জাতিকে শক্তিশালী রাখে তার তরুন-যুবক শ্রেনী। কোনো জাতির শক্তিমত্তা,সম্ভাবনা,উন্নয়ন মানেই তার তরুন-যুবক সম্প্রদায়। এরা যেকোনো শয়তানের গতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে। রাষ্ট্রের প্রতি গভীরভাবে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে শাসক সঠিক পথে হাটতে বাধ্য হয়, কিন্তু এরা ক্রিড়া উম্মাদনায় হারিয়ে গেলে মন্দ শাসক নাচতে থাকে, আর সমাজের অন্য শ্রেনী ভালোবেসে হোক আর গালি দিয়ে হোক সিস্টেমের গোলাম হয়ে যায়। আপনি যদি এখনকার কোনো তরুনকে বলেন, ট্রেন দূর্ঘটনায় ১০০জন বা ৫০ জন লোক মারা গেছে, ওরা বলবে.. "ওহ !" কিন্তু যদি বলেন ক্রিকেটার সাকিব অল্পের জন্যে সেন্সুরী করতে পারল না,,,দেখবেন আহাজারী কাকে বলে ! এবং সাকিব(অথবা অন্য কোনো খেলোয়াড়) কেন সেন্সুরী করতে পারল না, সমস্যা কি ছিলো, মাঠের অবস্থা,আম্পায়ারের অবস্থা,ক্রিকেটের নিয়মকানুন,অন্যের সাথে তার তুলনা,ক্রিকেটের ইতিহাস ইত্যাদী নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা,তর্ক-বিতর্ক করে এক বসাতে ৩ দিন পার করে দিবে কিছু না খেয়েই। আবার এ বিষয়ে কারো সাথে মতের অমিল হলে তার মাথা ফাটিয়ে দিবে। এটাই হল দুনিযার পরাশক্তিগুলো এবং এমনকি লোকাল শাসকেরও সফলতা। তারা এরকম তারকাটা উম্মাদ শ্রেনীই প্রত্যাশা করে। তাতে শাসন হবে পাকাপোক্ত। কেউ রাষ্ট্রনীতি,সরকার,বিচার,প্রশাসন,সমাজ কোনো কিছু নিয়ে প্রশ্নই তুলবে না। ফলে শাসকও বেশী বেশী বরাদ্দ এবং আউলা বাতাস দিয়ে এই সম্প্রদায় লালন পালন করবে। মজাই মজা।

তবে নাখোশ হয়েছি আফগান ক্রিকেটের উন্নতি দেখে। এক পরাশক্তি প্রচুর পয়সা ঢেলে এদেরকে সামনের সারিতে তুলে এনেছে। বিষয়টা ভয়াবহ। এই যোদ্ধা জাতিটিকে দুনিয়ার কেউ পারাস্ত করতে পারেনি। শত্রুরা জানে,মুসলিমরা নিজেদেরকে মানসিকভাবে এক দেহ মনে করে, ফলে গোপনে সে কান্দে। ব্রিটিশ এসেছিলো । এরা ওদেরকে মেরে গাছে ঝুলিয়েছে। পরাশক্তি রাশিয়াএসেছিলো, এরা রাশিয়ার ইজ্জত লুন্টন করে মাটিতে পুতে ফেলেছে। আমেরিকা এসেছিলো, ওরা তাদের সমস্ত হিসাব-নিকাশ পাল্টে নাকানি চুবানী খাইয়েছে।

এরপর ওদেরকে বলিউড দিয়ে বশ করতে চেয়েছে কিন্তু ওরা তেমন বশীভূত হয়নি। হলিউড এসেছে, ওরা তেমন মুখ তুলে চায়নি। ফুটবল এসেছে, কিন্তু সতর বের করা হাফ প্যান্ট শরিয়তের মাপকাঠিতে টেকেনি। ফুটবল সুবিধা করতে পারেনি। অবশেষে সতর ঢাকা ফুলপ্যান্ট নিয়ে হালাল ক্রিকেট এসেছে। এবার তো আশা করা যায় আফগানদের নতুন প্রজন্ম ক্রিকেট উম্মাদনায় তাদের শক্তিমত্তা ব্যয় করবে। নফস'কে উসকে দিয়েই দারুন সফল হওয়া যায়,যদি মস্তিষ্কের উপর পোড়া মবিলের জব্বর একটা আস্তরণ মারা যায়। দুনিয়ার পরাশক্তিগুলো পোড়া মবিলের ব্যবহার খুব ভালো জানে।

ওহে উম্মাদ উম্মাহ ! তুমি নিজেকে না চিনলেও তারা তোমাকে ঠিকই চিনে। তোমাকে জাতিয়তাবাদের আইসক্রিম খাইয়েছে, এখন তুমি ক্রিকেটিয় উম্মাদনাকে দেশপ্রেম বলো ! তোমার এক দেহ বহু টুকরো করার পরও তোমাকে ওরা ভয় পায়। তোমাকে সংকীর্ণ থেকে সংকীর্ণতর করে টিপে,থেতলে মারবে, তবে তাদের হাত দিয়ে নয়। তুমি নানামুখী ভালোবাসার আতিসয্যে নিজেই নিজেকে গলা টিপে হত্যা করবে। নিজেকে আবিষ্কারের সময় ফুরিয়ে যায়নি।

"আমি আল-কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি, উপদেশ গ্রহন করার জন্যে। উপদেশ গ্রহন করার কেউ আছে কি ? "

(আল-কুরআন, সূরা আল ক্কামার,আয়াত ২২)

"আমি আল-কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহন করার জন্যে। উপদেশ গ্রহন করার কেউ আছে কি ? "

(আল-কুরআন, সূরা আল ক্কামার,আয়াত ৩২)

"আমি আল-কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহন করার জন্যে। উপদেশ গ্রহন করার কেউ আছে কি ? "

(আল-কুরআন, সূরা আল ক্কামার,আয়াত ৪০)

বিষয়: বিবিধ

৫৮৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File