বৈজ্ঞানিক সত্য তুলে ধরায় বিজ্ঞানী ব্রুনোকে পুড়িয়ে মারে গির্জা

লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১২:৩৭:৪৫ দুপুর



৪১৩ বছর আগে ইতালির দার্শনিক, গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিদ গিয়োরদানো ব্রুনোকে খ্রিস্টান চার্চের নির্দেশে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় খ্রিস্ট ধর্মের কথিত নীতিমালার বিরোধী বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সংক্রান্ত বক্তব্য রাখার দায়ে।

তার ওই বক্তব্যটি ছিল এই বৈজ্ঞানিক সত্য যে সূর্য হচ্ছে অবশ্যই গতিশীল একটি নক্ষত্র। এ ছাড়াও গোটা বিশ্বে রয়েছে অসংখ্য গ্রহ।

ব্রুনো জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ে মুসলিম মনীষী ও বিজ্ঞানীদের লেখা বই পড়ে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। এইসব বই আরবী থেকে ল্যাটিন ভাষায় অনূদিত হয়েছিল।

ব্রুনো তার বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সংক্রান্ত বক্তব্যগুলো প্রত্যাহার করে নিতে অস্বীকার করায় ততকালীন ক্যাথলিক চার্চ কর্তৃপক্ষ তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

এর আগে এখন থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে খ্রিস্টান গির্জা কর্তৃপক্ষের একই ধরনের বর্বরতার মুখে জীবন বাঁচানোর জন্য আপোষ করতে বাধ্য হয়েছিলেন বিখ্যাত ইতালিয় বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলি। (গত শনিবার ছিল তার ৪৫০ তম জন্ম-বার্ষিকী)।

আল বিরুনির মত প্রখ্যাত মুসলিম বিজ্ঞানীদের গবেষণা-কর্ম অনুসরণ করে তিনি জানান যে সূর্য হচ্ছে সৌর জগতের ও পৃথিবীসহ সব গ্রহের মূল কেন্দ্র এবং এইসব গ্রহ সূর্যের চারদিকে ঘুরে। ফলে রোমান চার্চ বা গির্জা কর্তৃপক্ষ গ্যালিলিও'র বিরুদ্ধে ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগ আনে এবং তাকে হয় এই মত ত্যাগ করার অথবা মৃত্যুদণ্ড বরণ করার দুটি পথের মধ্যে যে কোনো একটিকে বেছে নিতে হবে বলে জানিয়ে দেয়। এ অবস্থায় গ্যালিলিও প্রাণভয়ে তার বৈজ্ঞানিক মতামত বাতিল বলে ঘোষণা করেন। গ্যালিলিও মারা যান ১৬৪২ সনে। তিনি বিখ্যাত মুসলিম বিজ্ঞানী ইবনে আল হাইসামের উদ্ভাবিত লেন্স ব্যবহার করে গ্রহ-নক্ষত্র পর্যবেক্ষণের জন্য টেলিস্কোপ বা দূরবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কার করেন।

মুসলিম বিজ্ঞানীদের লেখা গবেষণা-কর্ম হতেই তিনি এই সত্য তুলে ধরেন যে চাঁদে রয়েছে সমতল ও উচ্চ ভূমি এবং প্রতিটি ছায়াপথে রয়েছে ছোট ও বড় অনেক নক্ষত্র।

গ্যালিলিও'র কয়েক শত বছর আগে বিশ্বনবী (সা.)'র পবিত্র আহলে বাইত (রাঃ)'র অনুসারী ইরানর প্রখ্যাত মুসলিম বিজ্ঞানী ও মনীষী আল বিরুনি (আবু রাইহান আল বিরুনি) সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর বৃত্তাকার আবর্তনের বিষয়টি প্রমাণ করেছিলেন। পৃথিবী যে (মোটামুটি) গোলাকার তাও তিনি প্রমাণ করেছিলেন।

পবিত্র ইসলাম ধর্ম জ্ঞান-বিজ্ঞানের ওপর অশেষ গুরুত্ব আরোপ করায় এবং অতীতের মুসলিম রাজা-বাদশাহরা বিজ্ঞানীদের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন বলে মুসলিম মনীষী ও বিজ্ঞানীরা এক সময় জ্ঞান-বিজ্ঞান সবচেয়ে বেশি অগ্রসর ছিলেন।

বিষয়: বিবিধ

১২৭৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

178888
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:২১
শফিউর রহমান লিখেছেন : ধন্যবাদ।
আমরা এখন মরে গেছি। মরে গেছে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য। আমাদের ইতিহাস শুরু হয়েছে শুধুমাত্র ১৯৭১ অথবা খুব বেশী হলে ১৯৭০ থেকে। তার আগে আমরা ছিলাম না। আমাদের দেশে ছিল আদিবাসি (?) নামের কোন গোষ্ঠি।
178903
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৩৭
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : এ ইতিহাস এখন মুছে গেছে। এখন সবকিছু আমেরিকার আবিষ্কার। ইংরেজরাই সবকিছুর উদ্ভাবক! ধন্যবাদ পুরাতন একটি ইতিহাস সামনে ‍আনার জন্য
178944
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:১৫
অজানা পথিক লিখেছেন : পিউর থট
179028
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ধন্যবাদ সুন্দর পোষ্টটির জন্য।
ইসলামের ইতিহাসে জ্ঞান চর্চার জন্য কারো শাস্তির কোন প্রমান নাই। বরং চার্চ এর অাদালত ইনকুইজিশন এর উৎপত্তি খৃষ্টানদের হাতে স্পেন এর পতন এর পরে। অথচ আজকে তারা এবং তাদের অনুসারি তথাকথিত মুসলিমরা আমাদের বুঝাতে চায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নাকি পাশ্চাত্যের দান।
180617
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৩৬
বিন হারুন লিখেছেন : সত্যবাদী আর মিথ্যুক কেউ-ই বেঁচে খাকে না, কিন্তু সত্যবাদীরা মরণের পরেও সত্যবাদী হিসেবে ভূষিত হয়. অনেক ভাল লাগল আপনার লেখাগুলো. ভাল খাকুন এই প্রত্যাশায়. Rose Rose

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File